‘দাদা, পায়ে পড়ি রে/ মেলা থেকে বউ এনে দে’! প্রায় এমনটাই বক্তব্য এই অঞ্চলের পুরুষদের। কারণ বিয়ে করতে চান, কিন্তু বউ মেলে না। এই গ্রামের যুবকদের বিয়ে করতে নাকি রাজি নন কোনও মহিলাই। কিন্তু কেন? আসুন শুনে নিই।
এই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষই বিবাহযোগ্য। কিন্তু বউ জুটছে না কারও কপালে। কেন এমন দশা তাঁদের? এই পুরুষদের মধ্যে সকলেই যে আর্থিকভাবে খুব অসচ্ছল, বা কোনও কাজকর্ম করেন না, এমনটাও একেবারেই নয়। তাই দারিদ্র্যের কারণে বিয়ে হচ্ছে না, এ কথা বলার উপায় নেই। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
আরও শুনুন: জীবনবিমার ২ কোটি টাকা হাতানোর লোভেই নিজেকে ‘মৃত’ ঘোষণা, শ্রীঘরে ঠাঁই যুবকের
আসলে দেশ স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরেও এতটুকু উন্নতির মুখ দেখেনি বিহারের এই গ্রামগুলি। একটা দুটো নয়, সে রাজ্যের প্রায় চারটি গ্রামে একই সমস্যার শিকার বহু মানুষ। না আছে পাকা রাস্তা, না আছে বিদ্যুৎ সংযোগ। নেই কোনও মোবাইল টাওয়ারও। বাকি দুনিয়া থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়েই দিন কাটে বিহারের পাথুয়া, কানহাইপুর, পিপারিয়া কিংবা বাসাউনা গ্রামের বাসিন্দাদের। একইসঙ্গে কোনও বড় শিল্পও গড়ে ওঠেনি এখানে। তাই উপার্জনের রাস্তাও কম। তবে কোনও বা কোনও ভাবে রুজি রোজগারটুকু তাও হয়েই যায়। তবে সমস্যা দেখা দেয় ব্যক্তিগত জীবনে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এক অদ্ভুত তথ্য। যেখানে দেখা যাচ্ছে বিহারের এই চারটি গ্রামে অধিকাংশ পুরুষই অবিবাহিত। অথচ সকলেরই বিয়ের বয়স পেরিয়েছে বহু আগে। স্রেফ ভালো রাস্তা নেই বলে বিয়ে করে তাঁদের গ্রামে আসতে চায় না কেউ। তাঁদের মতে, রাস্তা না থাকার দরুন হঠাৎ কারও শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে ভয়ানক সমস্যা তৈরি হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উপায়টুকুও থাকে না অনেক ক্ষেত্রে। সেসব ভেবেই এই গ্রামে মেয়ের বিয়ে দিতে চান না কোনও বাবা-মা। নিজেদের সমস্যার কথা বহুবার স্থানীয় নেতাদের কাছে জানিয়েছেন তাঁরা। দ্বারস্থ হয়েছেন বিভিন্ন মন্ত্রীর। এমনকি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও দরবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও অব্দি কোনও সুরাহাই হয়নি তাঁদের সমস্যার। আর তাই, অবিবাহিত হয়ে জীবন কাটানোই নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই গ্রামগুলির অধিকাংশ পুরুষের।