ঠিক যেন পি সি সরকারের ‘ওয়াটার অফ ইন্ডিয়া’। ফাঁকা একটা পাত্র হাওয়ায় উঁচু করে ধরলেন জাদুকর, আর কোত্থেকে সেই পাত্রে ভরে উঠল জল। এই সংস্থাও যেন ঠিক তেমন ভাবেই জল তৈরি করছে, হাওয়া থেকে। তবে এখানে কোনও ম্যাজিক নেই। রয়েছে স্রেফ বিজ্ঞান। কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এই কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
গরমকালে জলের জন্য হাহাকার নতুন ঘটনা নয়। ভারতের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে, প্রতি বছর এই সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকেই। তবে এবার সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হতে পারে। কারণ জল তৈরির নতুন এক উপায় আবিষ্কার করেছে বেঙ্গালুরুর এক সংস্থা। তাঁদের দাবি, জলের জন্য আর কোনও নদী-পুকুর বা সাধারন উৎসের প্রয়োজন নেই। স্রেফ হাওয়া থেকেই পানীয় জল তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: গোলাপ হাতে হাঁটু মুড়ে বসতে আপত্তি, আস্ত কিবোর্ড দিয়েই বান্ধবীকে প্রোপোজ যুবকের
বিশ্বজুড়ে উত্তরোত্তর বাড়ছে পানীয় জলের সমস্যা। অথচ জল সংরক্ষণের বিষয়ে সেভাবে সচেতন হননি অনেকেই। মনে করা হয়, ভবিষ্যতে এই পানীয় জল নিয়েই নাকি বিশ্বযুদ্ধও হতে পারে। তবে এইসব আশঙ্কা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে চলেছে বেঙ্গালুরুর এক সংস্থা। স্রেফ বাতাস থেকেই পানীয় জল তৈরি করছেন তাঁরা। যা দেখার পর অনেকেই মনে করছেন, এই ব্যবস্থা পানীয় জলের সংকট মেটাতে রীতিমতো প্রভাব ফেলবে। যদিও এই পদ্ধতি যে ঠিক তাঁদের আবিষ্কার তা নয়। ২০১৯ সালে বাতাস থেকে জল তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানী। কিন্তু সেই পদ্ধতি খুবই ব্যয়বহুল ছিল। তাই এই পদ্ধতিতে তৈরি জল কেনার সামর্থ্য অনেকেরই থাকত না। সেই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই পদ্ধতিতে কিছুটা বদল আনে বেঙ্গালুরুর এই সংস্থা। যার ফলে বাতাস থেকে জল তৈরি হয়ে যায় আরও সহজ। একইসঙ্গে এই নতুন পদ্ধতিটি খুবই কম খরচ জল তৈরি করতে সক্ষম। তাই বাণিজ্যিক ভাবে এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে জল তৈরি করতে শুরু করেছে ওই সংস্থা।
আরও শুনুন: খিদে পেয়েছিল! জাদুঘরে গিয়ে ১ কোটি টাকার শিল্পবস্তু খেয়ে ফেললেন পড়ুয়া
মূলত জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করেই এই কাজ করা হয়। কোনও ঠান্ডা জিনিসকে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখলে তার উপর জলীয় বাষ্প জমে। সেই বাষ্প সংগ্রহ করে পরিশ্রুত করে নিলেই পানীয় জল তৈরি। তবে এই পদ্ধতিটি খুবই সাধারণ। প্রথমে এভাবেই বাতাস থেকে জল তৈরির কথা বলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এইভাবে জল তৈরি করা খুবই সময়সাপেক্ষ হয়ে যাচ্ছিল। একইসঙ্গে অনেকটা পরিমাণে জল তৈরি করার সময় খরচও হচ্ছিল ভালোই। তাই এই পদ্ধতিতে সামান্য রদবদল করে জল তৈরি শুরু করেছে ওই সংস্থা। ঠিক কীভাবে তারা নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করছে তা অবশ্য বিস্তারিতভাবে জানায়নি তারা। তবে ওই সংস্থার দাবি, অদূর ভবিষ্যতে অনেকেই তাঁদের মতো করে জল তৈরি কথা ভাববে। বর্তমানে প্রতিদিন ১০০০ লিটার জল তৈরির করার ক্ষমতা রয়েছে এই সংস্থার। ভবিষ্যতে উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে তারা। তবে যতই ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকুক, এই পদক্ষেপ সামগ্রিকভাবে দেশের জন্যই প্রয়োজনীয়, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।