কথায় বলে, কারও পৌষ মাস আর কারও সর্বনাশ। একদিকে মেয়েদের বিনামূল্যে বাসযাত্রার সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য। অন্যদিকে সেই সুবিধার দোহাই দিয়েই বাড়ির পরিচারিকাদের বেতন কাটছাঁট করতে উঠেপড়ে লেগেছেন অনেকে। ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ নেটিজেনদেরও। শুনে নেওয়া যাক।
কাজে আসার জন্য এখন থেকে আর বাসভাড়া লাগবে না। সুতরাং সেই অনুপাতে কমে যাওয়া উচিত বেতনও। এমনটাই দাবি একাধিক জনের। না না, নিজেদের কর্মক্ষেত্রে বেতন কমানোর দাবি তোলেননি তাঁরা। কিন্তু নিজেদের বাড়ির পরিচারিকাদের ক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য ভিন্ন। সরকারি প্রকল্পে মহিলাদের বাসভাড়া মকুব হয়ে যাওয়ার পরেই পরিচারিকাদের বেতন কাটছাঁট করতে তৎপর হয়েছে একাধিক পরিবার। তাঁদের যুক্তি একটাই। বেতনের যে অংশটি যাওয়া আসার সময় বাসের ভাড়া হিসেবে খরচ হত, তার তো আর প্রয়োজন থাকছে না। সুতরাং ওই টাকাও আর দিতে নারাজ এই ব্যক্তিরা। শুনতে অবাক লাগছে? আশ্চর্য হলেও সত্যি সত্যিই ঘটেছে এমনটাই। বেঙ্গালুরু শহরে একাধিক পরিবারে তাঁরা এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন বলে দাবি সেই শহরের গৃহ পরিচারিকাদের। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলার পোস্টের জেরেই সামনে এসেছে এই ঘটনা।
কী ঘটেছে ঠিক?
আরও শুনুন: এক রাতের ভাড়া সাড়ে ১২ লাখ! মার্কিন সফরে মোদির ঠিকানা এই হোটেলই
আসলে এবার থেকে সরকারি বাসে বিনামূল্যেই যাতায়াত করতে পারবেন মহিলা ও রূপান্তরকামীরা। সম্প্রতি এমনই নির্দেশ জারি করেছে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সে রাজ্যে মহিলাদের বাসভাড়া সম্পূর্ণভাবে মকুব করে দিয়েছে নবগঠিত সিদ্দারামাইয়া সরকার। ‘শক্তি’ নামে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে কর্ণাটকের বিভিন্ন জেলায়। সরকার ঘোষণা করেছিল, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন সে রাজ্যের ৪১.৮ লক্ষ মহিলা উপকৃত হবেন। কিন্তু উপকারের পাশাপাশি এই প্রকল্পের দরুনই যে মেয়েদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে, এমনটা ভাবেনি কেউই। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তেমনটাই।
আরও শুনুন: দু’বছর ধরে আস্তানা পাঁচতারা হোটেলে, ৫৮ লাখের বিল না মিটিয়েই চম্পট যুবকের
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মানসী নামের এক মহিলা পোস্ট করে জানান যে, তিনি বেঙ্গালুরুর একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা। সত্যি বলতে, গোটা দেশের মানচিত্রে কর্ণাটকের এই জেলাটি এমনিতেই বেশ দামি এবং অভিজাত শহর বলে পরিচিত। কিন্তু সেখানেই বাসভাড়া মকুবের পর বাড়ির পরিচারিকাদের বেতন কমানোর সুযোগ খুঁজছে একাধিক পরিবার, এমনটাই জানিয়েছেন মানসী। যে দেশে গৃহশ্রমের মজুরি এমনিতেই যথেষ্ট কম, সেখানে এই ঘটনাকে নিষ্ঠুরতা বলেই মনে করেছেন তিনি। আর এই ইস্যুতে তাঁর সুরে সুর মিলিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরাও।