ভোট দিক সকলেই। স্রেফ কারও পায়ে যেন চটি না থাকে। চপ্পল পরে এলে, বুথে ঢুকতেই দেওয়া হবে না। সম্প্রতি এমনই দাবি তুলেছেন মহারাষ্ট্রের নির্দল প্রার্থী। কমিশনে চিঠিও পাঠিয়েছেন। কিন্তু এমন অদ্ভুত আবদার কেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভোটদান গণতান্ত্রিক অধিকার। জোর করে কারও ভোট দেওয়া আটকানো যায় না। তবে কমিশনের নির্ধারিত নিয়ম মানতেই হয় ভোটারদের। অন্যথায় ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। নিয়ম বলতে, কীভাবে ভোট দেওয়া হবে, কী নিয়ে বুথে ঢোকা যাবে- এইসব। ভোটারদের পোশাক নিয়ে সেইভাবে কোনও নিয়ম নেই। বিশেষ করে কে কেমন জুতো পরে ভোট দিতে আসছেন, সেটাও আলাদা করে লক্ষ্য করা হয় না। তবে মহারাষ্ট্রের এক নির্দল প্রার্থী চাইছেন, এবার ভোটারদের জুতোর দিকেও নজর দিক কমিশন।
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ভোটাররা বুথে যেন চটি পড়ে না আসেন, এমনটাই চাইছেন ওই নির্দল প্রার্থী গুরুদাস সাম্ভাজি কাম্বলে। কমিশনের কাছে নিজের দাবি জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। সাফ লিখেছেন, বুথে কারও পায়ে যেন চটি না থাকে। শুধু তাই নয়, বুথের ২০০ মিটার এলাকার মধ্যেও যেন চটি পরে কাউকে দেখা না যায়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন গুরুদাস। ভোটের আগে এমনিতেই বিভিন্ন অভিযোগ অনুযোগ থাকে প্রার্থীদের। বিরোধী পক্ষের কেউ কোনও বিরূপ মন্তব্য করলে, সেই নিয়ে কমিশনে নালিশ জানান অনেকে। তবে গুরুদাসের মতো দাবি সম্ভবত এর আগে কেউ করেননি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নেপথ্যে কারণ কী?
আসলে, গুরুদাসের দলের প্রতীক হল হাওয়াই চটি। এদিকে কমিশনের কড়া নিয়ম, ভোটপর্ব চলাকালীন কেউ কোনও দলের প্রতীকী ব্যবহার করতে পারবেন না। বুথে দলীয় পতাকা লাগানোতেও নিষেধাজ্ঞা থাকে। তাই আগেভাগে সতর্ক হতে চেয়েছেন গুরুদাস। কেউ হাওয়াই চটি পরে বুথে এলে যদি তাঁকেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়? যদি কমিশন পদক্ষেপ করে? এসব ঝুঁকি মোটেও নিতে চান না মহারাষ্ট্রের নির্দল প্রার্থী। তাই কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অদ্ভুত দাবি জানিয়েছেন। নিজে গিয়ে ভোটারদের অনুরোধও করেছেন। যদিও কমিশন তাঁর কথা একেবারেই আমল দেয়নি। সরকারি আধিকারিকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এমন নির্দেশ জারি করা সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষ চপ্পল বা চটিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য, কাজেই ভোট দিতে যাওয়ার সময় অনেকেই তাতে পা গলাবেন। তাই কমিশন চটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না। তবে গুরুদাসও ছাড়বার পাত্র নন। কমিশন পদক্ষেপ না করলে, হাই কোর্টে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।