পেশায় অটোচালক। নিজের পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। কিন্তু মেয়ের উচ্চশিক্ষায় যাতে পাশে থাকতে পারেন, তাই অটো চালানোর ফাঁকে ফাঁকেই মেয়ের পাঠ্যক্রম ঝালিয়ে নিচ্ছেন এই ব্যক্তি। সম্প্রতি এক ভিডিওর সূত্রেই প্রকাশ্যে এল এই ছবি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কথায় বলে, বাবার সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের মতো সুন্দর সম্পর্ক নাকি কমই আছে। মেয়ের ইচ্ছে পূরণ করে তার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একজন বাবা কী না করতে পারেন! সম্প্রতি সে কথাই যেন ফের প্রমাণ করে দিলেন এক ব্যক্তি। নিজের পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। কিন্তু মেয়ের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নে তিনি পাশে থাকবেন না, তাও কি হয়? তাই মেয়ের পাঠ্যক্রম ধরেই নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছেন বাবা। আর এক ভিডিওর সূত্রে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর সেই প্রচেষ্টার ছবি।
আরও শুনুন: ধর্ম সংসদে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলার জের, ঘৃণাভাষণে দাঁড়ি টানতে পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের
কী ঘটেছে ঠিক?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাগ করে নিয়েছেন অভিজিৎ মুথা নামের এক ব্যক্তি। সেখানেই দেখা গিয়েছে মেয়ের জন্য নতুন করে পড়াশোনা শুরু করা ওই ব্যক্তিকে। পেশায় যিনি অটোচালক। আসলে গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে একটি অটো বুক করেছিলেন পোস্টদাতা। সেইমতো রাকেশ নামে এক অটোচালক আসেন তাঁকে তাঁর গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অনলাইন অ্যাপে বুক করা যে কোনও গাড়ির মতোই চালকের সামনে ফোন খোলাই ছিল। কিন্তু যেতে যেতে পোস্টদাতা খেয়াল করেন, ফোনে রুট ম্যাপ দেখছেন না অটোচালক। বদলে কোনও একটি ভিডিও দেখছেন তিনি, আবার তার ফাঁকে ফাঁকেই চট করে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন ম্যাপেও। কৌতূহলী হয়ে ওই সওয়ারি চালককে প্রশ্ন করেছিলেন, এত মন দিয়ে কী এমন দেখছেন তিনি। আর তার উত্তরেই রীতিমতো চমকে যান ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: সমুদ্রের অতলে হারিয়ে গিয়েছিল জমজমাট শহর, দুহাজার বছর পর হদিশ মিলল বিস্মৃত জনপদের
অটোচালক জানিয়েছিলেন, তিনি একটি বিশেষ ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচার করা ভিডিও দেখছিলেন। ওই চ্যানেলটিতে ইউপিএসসির পাঠ্যক্রম অনুযায়ী অর্থনীতি এবং সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে পাঠ দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি মনে করেছিলেন চালক হয়তো কোনও পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু তাঁকে অবাক করে দিয়ে রাকেশ জানান, তিনি নন, তাঁর মেয়ে আসলে ওই সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মেয়েকে পড়াশোনায় সাহায্য করার জন্যই তাঁর পাঠ্যক্রম ধরে নিজেও পড়াশোনা শুরু করেছেন রাকেশ। যাতে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে মেয়ে পড়া বিষয়গুলি ঝালিয়ে নিতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। তবে গাড়ি চালাতে চালাতেই ভিডিও দেখার বিষয়টি যে নিরাপদ নয়, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁদের একাংশ।