কবরস্থানে বসে কখনও চা খেয়েছেন? তাও আবার বন্ধুদের সঙ্গে বসে গল্প করতে করতে! নিশ্চয়ই ভাবছেন, এমন দুঃখের জায়গায় আমেজ করে চা খাওয়া কি আদৌ সম্ভব? বাস্তবে এমনটা সম্ভব আহমেদাবাদের এক দোকান। দোকানের ভিতর রাখা আছে অনেগুলো কফিন। যার মধ্যে সত্যিই মৃতদেহ রয়েছে। আর সেখানে বসেই চা খান সকলে। কিন্তু এমন অদ্ভুত অন্দরসজ্জার নেপথ্যে কারণ কী? আসুন শুনে নিই।
শ্মশান কিংবা কবরস্থান নিয়ে অনেকেরই ছুঁতমার্গ থাকে। এইসব জায়গায় কেউ নিশ্চয়ই আনন্দ করতে বা আড্ডা দিতে যান না। কিন্তু আহমেদাবাদের এক কবরস্থানে গেলে সেই ধারণা বদলে যেতে বাধ্য। কারণ এই কবরস্থানকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে আস্ত একটা চায়ের দোকান।
আরও শুনুন: ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ২৭ বার পরীক্ষায়, নাছোড় জেদ চিনের কোটিপতির
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। আহমেদাবাদের , লাল দরওয়াজা চত্বরের একটি দোকানের অন্দরসজ্জা একেবারেই অন্যরকম। দোকানের ভিতর রাশি রাশি কফিন। প্রত্যকেটার ভিতরই সত্যিকারের মৃতদেহ রয়েছে। আর সেই কফিনের পাশেই রয়েছে বসার জায়গা। যেখানে অনেকেই নিয়মিত চা, কফি, স্ন্যাক্স খেতে হাজির হন।
কিন্তু এমন অদ্ভুত অন্দরসজ্জার কারণ কী?
তা জানতে গেলে চোখ রাখতে হবে এই দোকানের ইতিহাসে। দোকানটি প্রায় ৭২ বছরের পুরনো। সেইসময় এই অঞ্চলে একটি কবরস্থান ছিল। দোকানের জন্য জমি কেনার সময়, সে কথা জানতেন না দোকানের মালিক। তবে জানার পরও তিনি নিজের সিদ্ধান্ত বদলাননি। ঠিক করেন, কবরস্থানে থাকা মৃতদেহ যথাযথ সম্মান দিয়েই খাবারের দোকান বানাবেন। সেই পরিকল্পনা মতোই বানিয়ে ফেলেন দোকান। কবরগুলো লোহার খাঁচা দিয়ে ঘিরে দেন। আর ঠিক তার পাশেই বসার জায়গা। দীর্ঘদিন ধরে এইভাবেই চলে আসছে দোকান। এখনও দোকানে থাকা কবরগুলোকে যথাযথ সম্মান দিয়েই ব্যবসা চালাচ্ছেন দোকানের বর্তমান মালিক। প্রতিদিন দোকান খুলে কবরের উপর ফুল রাখেন দোকানের কর্মীরা। তারপর শুরু হয় গ্রাহকদের আনাগোনা। তাঁরাও কফিনের পাশে বসে খাবার খেতে অস্বস্তি বোধ করেন না। আসলে এইভাবে ওই কবরে থাকা মৃত ব্যক্তিদের সম্মান প্রদান করা হয় বলে মনে করেন অনেকে। তবে এই দোকানে কেউ খুব একটা হৈ হুল্লোড় করেন না। শান্তির আবহ বজায় রাখার চেষ্টা করেন দোকানের কর্মীরাও।
আরও শুনুন: মায়ের স্মৃতিতে তাজমহল বানালেন ব্যক্তি, উপাসনা করতে পারবেন সব ধর্মের মানুষই
সম্প্রতি দোকানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে কবরের পাশে বসেই চা খাচ্ছে লোকজন। এমনকি প্রত্যকেটা কবরেই ফুল রাখা আছে, সেটাও ছবিতে স্পষ্ট। এছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটা কফিনও। ভিডিও দেখে রীতিমতো অবাক নেটদুনিয়া। এমন দোকানও যে থাকতে পারে তা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। তবে দোকানের ইতিহাসও ভিডিওর সঙ্গেই লেখা রয়েছে। তাই অবিশ্বাস করার উপায় নেই। সবমিলিয়ে মৃতদেহর পাশে বসে চা খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
View this post on Instagram