হিন্দু মন্দির। সেখানে প্রবেশ করতে পারেন যে কোনও ধর্মের মানুষের। এমনকি মন্দিরে বসেই নামাজ পাঠের সুযোগ পান মুসলিমরা। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। আমাদের দেশেই রয়েছে এমন মন্দির। কোথায় জানেন? আসুন শুনে নিই।
ধর্মবিশ্বাস ভেদে বদলায় প্রার্থনার ধরণ। বদলায় উপাসনা স্থলও। হিন্দুরা যেমন মন্দিরে যান, মুসলিমরা তেমনই যান মসজিদে। কিন্তু মুসলিমদের মন্দিরে যাওয়ার কথা কখনও শুনেছেন? তাও আবার সেখানে বসেই নামাজ পাঠ করছেন তাঁরা! দেশে রয়েছে এমনও এক মন্দির।
আরও শুনুন: এই মন্দিরে প্রণামী দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কেন জানেন?
ধর্ম বিশ্বাসের বড় বালাই। তাতে আঘাত লাগলে যে কোনও সময় তৈরি হতে পারে অশান্তি। আমাদের দেশে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে জটিলতার খবরও হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু এখানে সেসবের বালাই নেই। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন- সব ধর্মের মানুষ এখানে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন। কেউ কারও ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত করার কথা ভাবেন না। কথা বলছি মধ্যপ্রদেশের বারহানপুর সম্পর্কে। অনেকেই এখানকার সংস্কৃতিকে ‘গঙ্গা-যমুনা’ বলে থাকেন। কারণটা অবশ্যই এখানকার পরিবেশ। অনায়াসে একে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে চীহ্নিত করা যায়। সব ধর্মের অনুষ্ঠানই এখানে মহা সমারোহে পালিত হয়। সেখানে অংশও নেন সকলেই। তবে এখানকার ইচ্ছাপুরে থাকা একটি মন্দিরে গোটা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম বলা যেতে পারে। মূলত সেই হিন্দু মন্দিরেই যাবতীয় সর্বধর্ম সমন্বয়ের অনুষ্ঠানগুলি হয়। যেখানে মুসলিমদেরও নামাজ পাঠের অনুমতি রয়েছে।
আরও শুনুন: নারায়ণ মূর্তির ৭০ ঘণ্টার কাজের প্রস্তাব উঠল সংসদেও, কী মত সরকারের?
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। মধ্যপ্রদেশের ইচ্ছা দেবী মাতা মন্দিরে চালু রয়েছে এমনই রেওয়াজ। এই মন্দির দীপাবলিতে যেমন আলোয় সেজে ওঠে, তেমনই এখানে পালিত হয় ইদ। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরে কোনও ধর্মীয় ভেদভাব নেই। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে ঘুরে যান এই মন্দিরে। কেউ আসেন আরতি করতে আবার কেউ নামাজ পাঠ। সকলকেই সাদরে আহবান জানায় মন্দির কর্তৃপক্ষ। শোনা যায়, এখানে মন থেকে কিছু প্রার্থনা করলে তা অবশ্যই পূরণ হয়। মন্দিরের যাবতীয় সংষ্কারও ভক্তরাই করেন মনের ইচ্ছা পূরণ হলে। বছরের একবার মন্দির চত্বরে বিরাট মেলা বসে। যেহেতু এখানে সব ধর্মের উতসবই পালিত হয়, তাই মন্দিরের আলাদা করে কোনও বার্ষিক অনুষ্ঠান নেই। স্রেফ চৈত্র মাসে বিরাট এক মেলা বসে। সে সময় ভক্তদের ভিড়ও থাকে চোখে পড়ার মতো। সবমিলিয়ে স্রেফ ওই বারহানপুর নয়, এই মন্দির গোটা দেশের মধ্যেই বিরল। যা একইসঙ্গে ভক্তদের ইচ্ছাপূরণের মাহাত্ম্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে।