বয়স ১০০ পেরিয়েছে। কমেছে দৃষ্টিশক্তি। তবু এখনও নিজের কাজে কাউকে হাত দিতে দেন না। এমনকি চলতে গেলে লাগে না লাঠিও। গোটা গ্রামের মানুষের কাছে তিনি এক বিস্ময়। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
এই বয়সে পৌঁছে অনেকেই স্রেফ বিশ্রাম নিয়ে দিন কাটান। বলা বাহুল্য, আর কিছু করার সামর্থও থাকে না। তবে ব্যতিক্রম গুজরাটের কোদিবেন। বয়স ১০১। কিছুদিন আগেই ধুমধাম করে তাঁর জন্মদিন পালন করেছে গোটা গ্রামের মানুষ। কিন্তু বৃদ্ধাকে দেখে বোঝার উপায় নেই সেকথা।
আরও শুনুন:শিবভক্তদের উপর লাঠিচার্জের নির্দেশ দিয়ে পেলেন শাস্তি, কে এই ‘সাহসী’ আইপিএস?
এখনও হাঁটার জন্য লাগে লাঠি। নিজের কাজ নিজেই করেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া, রয়েছে নির্দিষ্ট একটা রুটিন। তার বাইরে এতটুকু পা ফেলেন না কোদিবেন। আর সেই জোরেই এই বয়সে পৌঁছেও দিব্য সুস্থ রয়েছেন। তাঁর দিন শুরু হয় ভোর ৪ টেয়। সারাদিন খবার খান মাত্র দু-বার। বাকি সময় বিভিন্ন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন গুজরাটের এই বৃদ্ধা। ছোট থেকেই বড় হয়েছেন গ্রামে। তাই বেশিরভাগ কাজই নিজে করার অভ্যাস রয়েছে তাঁর। বিশেষত কাপড় কাঁচা বা বাসন ধোয়ার মতো কাজ বরাবরই নিজে হাতে করতেন তিনি। গ্রামের অনেক মহিলাই এমনটা করে থাকেন। তবে কোদিবেন যে এই বয়সে পৌঁছেও সেই অভ্যাসে দাড়ি টানেননি, তা রীতিমতো আশ্চর্যের। নিজের কাজ তো বটেই, প্রয়োজনে বাড়ির অন্যদের কাজেও সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। স্রেফ পরিবারের লোকজন নয়, গোটা গ্রামের মানুষের কাছেই তিনি অভিভাবকের মতো। তাঁর জীবনদর্শন, এতদিনের অভিজ্ঞতা সবকিছুই শিক্ষনীয় বলে মনে করেন সকলে। পরিবার বলতে পাঁচ সন্তান, আর তাঁর নিজের চার ভাইবোন। সকলে একসঙ্গে থাকেন।
তবে শুধুই কী রুটিনমাফিক জীবনযাপন, নাকি তাঁর এই ভাল থাকার নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও ম্যাজিক?
সে উত্তরে অবশ্য অদ্ভুত এক যুক্তি দিয়েছেন কোদিবেন-এর বড় ছেলে। তাঁর কথায়, বৃদ্ধা কোনওদিন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। কারও সঙ্গে ঝগড়াও করেননি কখনও। সারাজীবন সকলের ভাল চেয়ে এসেছেন। যেখানে যেমনভাবে সম্ভব সাহায্য করেছেন। কারও ভাল হচ্ছে দেখে, এতটুকু হিংসা করতে না কোদিবেন। তাই তাঁর ছেলের দাবি, এই গুণেই বৃদ্ধা এখনও এতটা সুস্থ। গ্রামের অন্যরাও তাঁর এই ব্যবহারের কারণেই যেমন ভালবাসেন, তেমনই শ্রদ্ধা করেন। আর সকলের ভালবাসা কুড়িয়েই এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে ১০১ বছরের এই বৃদ্ধা। যদিও বয়সের ভারে চোখের দৃষ্টি অনেকটাই কমেছে। কিন্তু তাতে কি! মনের জোর আর এতদিনের অভ্যাসে ভর করেই আগামীদিনগুলো কাটিয়ে দিতে চান গুজরাটের কোদিবেন।