ভোট বলে কথা! গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব। আর সেই উৎসবেই একবার দেখা গিয়েছিল, মহাকাশ থেকেও ভোট এসে হাজির। কীভাবে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মানুষের জন্য ভোট। আর মানুষেরই রয়েছে ভোট দেওয়ার অধিকার। কিন্তু সেখানেই নাকি ভোট এসেছিল একেবারে মহাকাশ থেকে। কী ভাবছেন, ভিনগ্রহীরাই কি তবে ভোট দিল শেষমেশ? তাহলে শুনেই নিন।
এ কথা তো জানাই যে, ভোট দেওয়ার কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। সেখানে সবচেয়ে বড় শর্ত নাগরিকত্ব। যিনি যে দেশের মানুষ, তিনি সে দেশেই কেবল ভোটদানের অধিকার পান। যাতে সমস্ত ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় থাকে, সে কারণে কিছু পোলিং বুথ তৈরি করা হয়। সেখানে মোতায়েন থাকেন রক্ষীরাও। আর ভোটদাতাদের সকলকেই সেই নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ভোট দিতে হয়। যদিও বর্তমানে নানারকম অসুবিধা বিবেচনা করে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অন্যভাবে ভোট নেওয়ার চলও শুরু হয়েছে। যেমন বর্ষীয়ান ভোটারদের ক্ষেত্রে বাড়িতে এসে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা। কিন্তু সেক্ষেত্রেও তাঁকে তো থাকতে হবে তাঁর বাসস্থান বলে চিহ্নিত এলাকাতেই। তবে এই নির্বাচনে তেমন হয়নি। ভিনগ্রহী নয়, ভোট দিয়েছিলেন এক মানুষই। তবে নিজের বাড়ি থেকে নয়, এমনকি নিজের দেশ বা গ্রহ থেকেই নয়। মহাকাশ থেকেই নিজের গণতান্ত্রিক মতামত রেখেছিলেন তিনি।
২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর নিজেদের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করেছিল নাসা। সেখানেই ঘোষণা করা হয়, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এক মহাকাশচারী। হ্যাঁ, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বুথেই ভোট দিয়েছিলেন মহাকাশচারী কেট রুবিনস। তাঁর জন্য স্পেস স্টেশনের ভিতর একটি ভোটিং বুথ তৈরি করা হয়েছিল। আর সেই ছবিই সামনে এনেছিল নাসা। জানা গিয়েছিল, ভোট দেওয়ার জন্য ইমেল মারফত একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। সেটি পূরণ করে ফেরত পাঠান কেট। সেখানে আবার ঠিকানার কলামে লেখা হয় ‘লো আর্থ অরবিট’।
আসলে, গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষের মতামত মূল্যবান। তাই মূল্যবান প্রতিটি ভোটও। এদিকে যতই বিরল হোক না কেন, এমন পরিস্থিতি তো আসতেই পারে যে কোনও ভোটের সময় মহাকাশ অভিযানে ব্যস্ত কোনও বিজ্ঞানী। কিন্তু সে সময়েও যাতে তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া যায়, সে কথা মাথায় রেখে ১৯৯৭ সালেই মহাকাশ থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আইন পাশ করেছিল আমেরিকা। আর সেই আইন মেনে ২০১৬ ও ২০২০ সাল, দুবার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকেই নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ওই মহিলা।