সম্পত্তি মামলায় পার্টি স্বয়ং হনুমান। তাঁর আবেদন নিয়ে আদালতে হাজির এক ব্যক্তি। দেখে বেজায় চমকালেন বিচারক! তারপর? কী হল আসুন শুনেই নেওয়া যাক।
স্বয়ং হনুমানজি যে মামলাকারী হয়ে একদিন তাঁর সামনে আসবেন, বিচারক ঘুণাক্ষরেও তা কল্পনা করেননি। অথচ কাগজপত্র সে-কথাই বলছে। মামলাটি সম্পত্তি বিষয়ক। আর সেই মামলায় পার্টি হয়ে আছেন বজরংবলী। বিস্মিত যতই হোন না কেন মামলা তো খতিয়ে দেখতেই হবে। অতএব পুরো ঘটনা শুনলেন সবিস্তারে।
আরও শুনুন: দেশ বাঁচাতে প্রাণ বিসর্জন, প্রয়াত সেনার মেয়ের বিয়ে দিলেন সতীর্থ জওয়ানরা
জানা গেল, মামলাটি করেছেন অঙ্কিত মিশ্র নামে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, তিনি স্বয়ং বজরংবলির বেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই তাঁর আবেদনের সঙ্গে পার্টি করে নিয়েছেন হনুমানজিকেও। মামলার মূল বিষয় হল একটি মন্দির নিয়ে ঝামেলা। মন্দিরটির বজরংবলীর-ই। মামলাকারীর দাবি, মন্দির যেহেতু হনুমানজির, তাই মন্দিরের জমির অধিকারও বজরংবলীরও। তাঁর আরও দাবি যে, মন্দিরটি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, পাবলিক প্রপার্টি। এই নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত, তখন মামলা দাখিল হয়েছিল সিটি কোর্টে। আদালত তখনই পত্রপাঠ সে মামলা খারিজ করেছিল। জানিয়েছিল, সাধারণ মানুষ কোনও মন্দিরে পুজো করেন মানেই তা সাধারণের মন্দির হয়ে উঠতে পারে না। মামলাকারী যে বজরংবলীর বন্ধু হিসাবে মামলা লড়তে পারেন না, তাও জানিয়েছিল সিটি কোর্ট।
আরও শুনুন: বিয়েতে আপত্তি নেই, কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতে কেন নারাজ এ যুগের তরুণীরা?
তবে ঘটনা সেখানেই থেকে থাকেনি। জল গড়ায় হাই কোর্টে। ওই ব্যক্তিই সিটি কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গিয়েছিলেন হাই কোর্টে। সেই মামলা দেখতে গিয়েই অবাক হয়ে যান বিচারক। এক তো, হনুমানজিকে মামলায় পার্টি করায় তিনি বেজায় বিরক্ত। এরপর মামলাকারীকে সাফ জানিয়ে দেন, সিটি কোর্টের রায়ে ভুল কিছু বলা হয়নি। কোনও ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিগত জমিতে ভগবানের মন্দির তৈরি করতেই পারেন। তিনি যদি অনুমতি দেন তো সেই মন্দিরে যে কোনও ভক্ত গিয়ে পুজোও দিতে পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই। উৎসবের মরশুম হোক বা অন্য কোনও সময়ে মন্দিরে সাধারণ মানুষ যেতে পারেন। তবে তাতে এটা প্রমাণিত হয় না যে, মন্দিরটি সাধারণের। এমনকী সেই মন্দিরে জমির মালিকানা যে ভগবান বা আরাধ্য দেবতার হয়ে যাবে, তারও কোনও মানে নেই। অতএব আদালতের আগের রায়ই বহাল রেখেছে উচ্চ আদালত।
তবে যেভাবে হনুমানজিকে মামলার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে তাতে বেজায় বিরক্ত হয়েছেন দিল্লি হাই কোর্টের বিচারক। আর তাই তাঁর নির্দেশ, মন্দিরের মালিককে যেন ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দেন মামলাকারী। ভগবানের হয়ে যে কেউ প্রক্সি দিতে পারেন আদালতে, তা তিনি ভাবেননি। পুরো ঘটনায় যে বিচারব্যবস্থাকে অবমাননা করা হয়েছে তা জানিয়েই মামলাকারীকে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।