রামলালার মূর্তি গড়ার কাজ দেখতে আসতেন স্বয়ং হনুমান। মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠার আবহে এমনটাই জানালেন, রামলালার ভাস্কর অরুন যোগিরাজের। ঠিক কেন এমন মন্তব্য কর্নাটকের ভাস্করের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে সদ্যই। এখনও দেশজুড়ে রামমন্দির নিয়ে চর্চা লেগেই আছে। খোদ মূর্তির নির্মাতা অরুণ যোগীরাজও সেই চর্চার বাইরে নন। সম্প্রতি, মূর্তি নির্মাণের অভিজ্ঞতা নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন অরুণ। যেখানে তাঁর দাবি, রামলালার মূর্তির কাজ দেখতে আসতেন স্বয়ং হনুমান।
আরও শুনুন: রাম মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হবে তাঁর হাতে গড়া রামলালার, কে এই অরুণ যোগীরাজ?
অরুণ যোগীরাজ, এই মুহূর্তে এই নামের সঙ্গে প্রায় সকলেই পরিচিত। কর্নাটকের মাইসুরুর বাসিন্দা অরুণের হাতেই তৈরি হয়েছে রামমন্দিরের নতুন রামলালার মূর্তিটি। পাঁচ প্রজন্ম ধরেই মূর্তি বানানোর কাজ করে আসছেন অরুণের পরিবার। যদিও অরুণ নিজে এমবিএ ডিগ্রিধারী। কিছুদিন বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বংশের পেশাতেই ফিরে আসেন তিনি। ২০০৮ সালে ভাস্কর হিসেবে শুরু করেন কাজ। আর তারপর এই পরিচয়েই সকলের নজর কেড়ে নিয়েছেন কর্নাটকের এই শিল্পী। মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠার আগে বেশ কয়েকদিন প্রায় না ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন অরুণ। এইসময় গর্ভগৃহে ঠিক কোথায় মূর্তিটি বসবে তা সরেজমিনে দেখেছেন তিনি। এছাড়া আরও বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজ সামলেছেন একাই। মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানেও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেব তিনি। নিজের হাতে গড়া মূর্তি ঘিরে এত মানুষের উন্মাদনা দেখে আবেগে ভেসেছে অরুণ নিজেও। এরপরই মূর্তি তৈরি নানা খুঁটিনাটি সামনে আনেন তিনি।
আরও শুনুন: ‘জয় শ্রী রাম’ বলেই অধ্যাপকের পা ছুঁয়ে প্রণাম, ব্রিটেনে ভারতীয় পড়ুয়ার কাণ্ডে শোরগোল
৫১ ইঞ্চির মূর্তিটি গড়তে প্রায় ৬ মাস সময় লেগেছে বলেই জানান অরুণ। আর এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না। কারণ মূর্তিটি তৈরিই করা হয়েছে বিশেষ শালগ্রাম শিলা খোদাই করে। এছাড়া পাথরের গায়ে সুক্ষ্ম কাজ করাও রীতিমতো ধৈর্যের ব্যাপার। তবু মন দিয়ে নিষ্ঠা ভরে রামলালাকে একটু একটু করে গড়ে তোলেন অরুণ। এইসময় অদ্ভুত এক ঘটনার কথা জানান অরুণ। মূর্তি তৈরি শুরুর দিন থেকেই এক হনুমান এসে তাঁর কাজ দেখত। প্রতিদিন নিয়ম করে বিকেলবেলা হাজির হত সেই হনুমান। প্রথমে স্বাভাবিক মনে করলেও,একসময় এই ঘটনা চোখে পড়ে অরুণের। তবে ওই হনুমান কোনও উপদ্রব করত না। তাই তাকেও উত্যক্ত করতেন না অরুণ বা তাঁর পরিবারের কেউ। একসময় মূর্তিটি প্রায় তৈরি হয়ে এলে, চারিদিকে পর্দা লাগিয়ে দেন অরুণ। এইসময়ও দেখা যায় বিকেল হতে হনুমান হাজির। রামলালাকে দেখতে না পেয়ে সে পর্দা ধরে টানাটানি শুরু করে বলেও জানিয়েছেন অরুণ। এতেই তাঁর মনে হয়, স্বয়ং হনুমান এসেছেন তাঁর প্রভুর মূর্তি তৈরির কাজ দেখতে। এমনটা বলা হয়ে থাকে, পুরাণের অষ্ট চিরঞ্জীবীর মধ্যে অন্যতম হনুমান। সেই বিশ্বাস থেকেই অরুণ এমনটা ধরে নেন। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন অরুণ। তাঁর সঙ্গে সহমত নেটদুনিয়ার অনেকেই। তাঁরাও হনুমানের অমরত্বের প্রসঙ্গ টেনে ঘটনার ব্যাখ্যা করেছে। সবমিলিয়ে এই ঘটনার মাধ্যমে আরও একবার রাম মহিমার আবেগে ভেসেছে নেটদুনিয়া।