চারদিকে পাহাড়। মাঝে একটা নদী। ঠিক তার পাশেই ছবির মতো সুন্দর একটা গ্রাম। অথচ সেখানে থাকতে গেলে খরচ করিতে হবে না একটা টাকাও। দেশে নয় সুদুর ইতালিতে রয়েছে এই গ্রাম। আর সেখানেই বিনে পয়সায় থাকার সুযোগ পাবেন যে কেউ। বদলে ঠিক কোন শর্ত মানতে হবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জীবনে অন্তত একবার বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। বেশিরভাগেরই পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকে থাকে গ্রান্ড ক্যানিয়ন কিংবা ল্যুভের মিউজিয়াম। তবে বিদেশের মাটিতে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যা তেমন প্রচলিত না হলেও, সেখানে যাওয়ার কথা ভাবা যেতেই পারে। কারণ অবশ্যই সেইসব জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। ছবির মতো সুন্দর জায়গাগুলোয় একবার গেলে ফিরে আসতে চান না অনেকেই।
আরও শুনুন: গজমুখ নয়, এই মন্দিরে মানুষের মতো রূপেই পূজিত হন গণেশ
ভাবছেন তো কীভাবে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার খরচ সামলাবেন?
চিন্তা নেই, এখানে থাকার খরচ নেই বলেই চলে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কথা বলছি ইতালির সার্ডিনিয়া প্রদেশের ওল্লোলাই (Ollolai) গ্রামটির সম্পর্কে। কিছুদিন আগে অদ্ভুত এক কারণে চর্চায় এসেছিল এই গ্রামের নাম। সেখানকার প্রধান ঘোষণা করেছিলেন, প্রায় বিনামূল্যে গ্রামের ফাঁকা বাড়িগুলি বিক্রি করা হবে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন অনেকেই। এবার তাঁদের দাবি, এই গ্রামে যে কেউ এসে মাসের পর মাস কাটিয়ে যেতে পারেন। বদলে দিতে হবে মাত্র ১ ইউরো বা ৮৮ টাকা। তাও আবার প্রতি মাসে।
কিন্তু বদলে কী দিতে হবে?
আরও শুনুন: কেন নৃসিংহ অবতার ধারণ করেছিলেন ভগবান বিষ্ণু?
সোজা ভাষায় বলতে গেলে নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করতে হবে। অর্থাৎ যারা এই গ্রামে থাকতে আসবেন, তাঁদের কাজকর্ম সম্পর্কে এই গ্রামের বাসিন্দাদের জানাতে হবে। তাছাড়া বিশ্বের কোন দেশ থেকে তাঁরা এসেছেন, সেখানকার পরিবেশ কেমন, এই সবকিছুই জানাতে হবে ওল্লোলাই-এর বাসিন্দাদের। যে কেউ আবেদন জানাতে পারেন এই সুযোগ পাওয়ার জন্য। গায়ক, সাংবাদিক, ইঞ্জিনয়র, ডাক্তার, শিল্পী, লেখক যে কেউ নিজের কর্মদক্ষতার খতিয়ান দিয়ে নির্দ্বিধায় থাকতে পারেন এই গ্রামে। যদিও সেই কাজ একেবারে গল্প করার মতো করলে হবে না। নিয়ম মেনে ক্লাস নিতে হবে গ্রামবাসীদের। বিষয় যাই হোক, পড়াতে হবে রীতিমতো মন দিয়ে। ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য আবেদন জানাতে শুরু করেছেন অনেকেই। তবে শুধুই যে সুবিধা তা নয়। হতে পারে এই গ্রাম ছবির মতো সুন্দর। কিন্তু এখানে যাতায়াত করা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। মূল শহর থেকেই বেশ কিছুটা দূরে পাহাড়ের কোলে এই গ্রামের অবস্থান। কাছাকাছি নেই কোনও এয়ারপোর্টও। তাই এখানে থাকা একপ্রকার নির্বাসন মনে হতে পারে অনেকেরই। তবে হ্যাঁ কেউ যদি রোজকার রুটিনে বিরক্ত হয়ে কিছুদিনের স্বস্তি খুঁজতে চান, তবে অনায়াসে এই গ্রামে কিছুদিন কাটিয়ে আসতে পারেন।