বয়স বাড়ুক, এমনটা একেবারে না পসন্দ। চিরযৌবন ধরে রাখতে চাইছেন সকলে। তার জন্য লাখ টাকা খরচেও আপত্তি নেই! তবে ভারতীয়দের মধ্যেই এই প্রবণতা সবথেকে বেশি। কী জানাচ্ছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মনের বয়স ধরে রাখতে পারেন অনেকেই! কিন্তু শরীরের ক্ষেত্রে কিছু করার নেই, প্রকৃতির নিয়মে চেহারায় বয়সেরর ছাপ পড়বেই। তবু চেষ্টা করতে ক্ষতি কী! সহায় হরেক রকমের ওষুধ, সেসব খেলে বা মাখলে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বে না, এমনটা দাবি করেন নির্মাতারা। দোকানিও সেইসব বলেই বিক্রি করেন। না বুঝে কিনেও ফেলেন অনেকে। তাতে কাজ একেবারে হয় না বলা ভুল, তবে ক্ষতি হয়েছে এমন উদাহরণও কম নেই।
ঠিক ধরেছেন, বিশেষ কিছু বিউটি প্রোডাক্ট বা প্রসাধনীর কথাই বলছি। যা ব্যবহার করে, ধরে রাখা যায় বয়স। সমীক্ষা বলছে, এই ধরনের প্রোডাক্টের বাজার ভারতেই সবথেকে বেশি। সহজ করে বললে, ভারতীয়দের মধ্যেই বয়স ধরে রাখার প্রবণতা সবথেকে বেশি। বেশিদিন নয়, মাত্র কয়েক বছরে এমনটা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০০-রও বেশি ধরনের ওষুধ বা ক্রিম বাজারে এসেছে। অবশ্যই একটি সংস্থার তরফে নয়, একাধিক সংস্থা বিনিয়োগ করছে এই ব্যবসায়। বয়স কমাতে অবশ্য শুধুমাত্র ত্বকের যত্ন নিলে চলবে না, সেইসঙ্গে চুল, ওজন এমনকি চোখ-মুখের গঠন নিয়েও ভাবতে হবে। চিন্তা নেই, এই সবকিছু ঠিক করার ওষুধ বাজারে উপলব্ধ। আসলে, চেহারা কেমন হবে সেটা কারও হাতে থাকে না, সেক্ষেত্রে চোখ-মুখের গঠন কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক, তাও বলা যায় না। মোটের উপর একটা ধারণা করে নেওয়া হয়, এমনটাই সঠিক। কিছুক্ষেত্রে কোনও অভিনেতা বা অভিনেত্রীর চেহারার গঠনকে ধরে নেওয়া হয়, পারফেক্ট! সেটাই অনুকরণ করতে চান কেউ কেউ। নানাভাবে করেও ফেলেন। কিন্তু ধরে রাখতে হবে চেহারায় সেই জৌলুস, তার জন্যই খরচ করে নিজের যত্ন নেওয়া।
বৈজ্ঞানিক উপায়েই এই ধরনের ওষুধ তৈরি হয়। অন্তত যেগুলো সঠিক, সেগুলো। তাতে শরীরের অন্দরমহলও ঠিক রাখার ব্যবস্থা হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে, সেক্ষেত্রে রোগের প্রভাবে চেহারায় বার্ধক্য স্পষ্ট হয়। এমনটা আটকাতেই সুগার, প্রেসার কিংবা অন্য কোনও বার্ধক্যজনিত রোগ কমানোর ব্যবস্থা। শুনতে অবাক লাগলেও, এই সবই ডার্মাটোলজি বা ত্বকের যত্ন নেওয়ার অঙ্গ। শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে, সর্দিকাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে ভিটামিন সি, এ তো সকলেরই জানা। ত্বকের জেল্লা ফেরাতে যে ক্রিম, তাতেও এই ধরনের ভিটামিন থাকছে। তবে কেমিক্যালযুক্ত নানা বিউটি প্রোডাক্টকে দূরে ঠেলে ভেষজ প্রোডাক্টের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন আজকালকার ক্রেতারা। চুল থেকে নখ, ত্বক থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই গুরুত্ব পাচ্ছে হার্বাল জিনিসপত্রই। একই ভাবে কসমেটিকস প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোও চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে ফেলছে নিজেদের। নানা ধরণের প্রাকৃতিক গুণ সম্পন্ন উপকরণের উপরে জোর দিচ্ছেন তাঁরাও। সবমিলিয়ে ওষুধ ব্যবসায় ত্বকের বিষয়টি বিগত কয়েকবছরে বেশ জায়গা করে নিয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা বুঝেই বাজারে একাধিক নতুন প্রোডাক্ট আনতে শুরু করেছেন প্রস্তুতকারী সংস্থা। তবে তা আদৌ ভালো না খারাপের দিকে ইঙ্গিত করছে, সে ব্যাপারে ধন্দ্বে ওয়াকিবহাল মহল।