মানসিক পুজোয় ‘তুলাভরম’ খুবই প্রচলিত এক রেওয়াজ। যার জন্য মানসিক, ইচ্ছাপূরণের পর তার সমান ওজনের জিনিস ভগবানকে দান করা। সেক্ষেত্রে মিষ্টি, ফলমূল, সবজি, এমনকি টাকা দিয়েও ওজন সারেন কেউ কেউ। তবে সম্প্রতি এক দক্ষিণী দম্পতি তাঁদের মেয়ের তুলাভরম সেরেছেন টম্যাটো দিয়ে। নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য তাঁদের? আসুন শুনে নিই।
দামের জেরে বিগত কয়েকদিন বেজায় চর্চায় রয়েছে টম্যাটো। কোথাও কোথাও প্রতি কিলো ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এই সবজি। তাই টম্যাটো বোঝাই গাড়ি ছিনতাই থেকে আরম্ভ করে টম্যাটো বিক্রি করে লাখ টাকার মুনাফা, এ প্রসঙ্গে একাধিক খবর সামনে আসছে। তবে সম্প্রতি এই টম্যাটো দিয়েই অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক দক্ষিণী দম্পতি।
আরও শুনুন: ‘এবারও মুখ থুবড়ে পড়বে চন্দ্রযান-৩’, অধ্যাপকের মন্তব্যে নিন্দার ঝড়, কড়া পদক্ষেপ বিজেপি নেতার
মনের ইচ্ছাপূরণের জন্য অনেকেই মানসিক করেন। টাকাপয়সা, গয়নাগাটি দান থেকে আরম্ভ করে আরও অনেক ধরনের নিয়ম পালনের রেওয়াজ রয়েছে। ‘তুলাভরম’ যার মধ্যে অন্যতম। যার জন্য মানসিক করা হচ্ছে, তার সমান ওজনের কোনও বস্তু ভগবানকে দান করা। সেক্ষেত্রে অনেকেই শাকসবজি, ফলমূল, মিষ্টি কিংবা গয়নাগাটি দান করেন। তবে এক দক্ষিণী দম্পতি সেই তুলাভরমে দান করার বস্তু হিসেবে টম্যাটো বেছে নিয়েছেন।
এককালে নাকি অনুষ্ঠানে গোলমাল বাঁধলেই ছোড়া হত পচা টম্যাটো। এই সময়ে অবশ্য সেসব ভাবাই যাচ্ছে না। টম্যাটোর দাম বর্তমানে এমন জায়গায় ঠেকেছে যে কিনতে গেলে কার্যত ছ্যাঁকা লাগছে মধ্যবিত্তের। সুতরাং কোনোভাবে টম্যাটো নষ্ট করার তো প্রশ্নই নেই। সেই একই ভাবনা অবশ্য কৃষকদেরও। বাজারে আগুন লাগায় মধ্যবিত্তের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তেমনই উলটো দিকে একটু বাড়তি লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন বিক্রেতারা। দু-তিন মাস আগে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি রাজ্যে কৃষকরা দাম না পেয়ে রাস্তায় টম্যাটো ফেলে দিচ্ছিলেন। কিন্তু এখন টম্যাটো চাষিরাই কার্যত হাতে স্বর্গ পেয়েছেন। তা এই অবস্থায় যদি সেই বহুমূল্য ধন নিয়েই টানাটানি পড়ে, তাহলে তো ভেঙে পড়ারই কথা। এই অবস্থার কথা মাথায় রেখেই তুলাভরমে টম্যাটো দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই দম্পতি। তাঁদের কথায়, এই দান করা সবজি ব্যবহার হবে মন্দিরের ভোগ প্রস্তুতিতে। তুলাভরমের আসল উদ্দেশ্য মানুষের সেবা করা। প্রতিবছর এই বিশেষ মানসিক পুজো সম্পন্ন করেন ওই দম্পতি। অন্ধ্রপ্রদেশের এক দেবীমন্দিরে এই দান করেন তাঁরা। অন্যান্য বছরে মিষ্টি বা শাকসবজি দান করা হত। তবে চলতি বছরে তাঁরা টম্যাটো দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেইমতো একমাত্র মেয়ের সমান ওজনের টম্যাটো তাঁরা মন্দিরে দান করেছেন। সেই অনুযায়ী মোট ৫১কেজি টম্যাটো মন্দিরে দান করেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: গেম-প্রেমের সেই পাক বধূ কি আসলে গুপ্তচর? সন্দেহ যোগীরাজ্যে, তৎপর ATS
প্রতিদিন এই মন্দিরে হাজারও ভক্ত অন্নভোগ গ্রহণ করেন। তাঁদের কথা ভেবেই টম্যাটো দান করেছেন ওই দম্পতি। তাতেই খুশি হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। আগামী কয়েকদিন মন্দিরের ভোগ প্রস্তুতিতে এই টম্যাটো ব্যবহার করবেন তাঁরা, এমনটাই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। নেটিজেনরাও এ পদক্ষেপের বিশেষ তারিফ করেছেন। সবমিলিয়ে দক্ষিণী দম্পতির এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বেয়াশ চর্চা চলছে নেটদুনিয়া।