আম্বানিপুত্র। সেও নাকি ভিখারি! এমনই খোঁটা স্কুলে শুনতে হয়েছিল মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্ত আম্বানিকে। কিন্তু কেন বন্ধুরা এমন কথা বলত? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
এক মঞ্চে শাহ্রুখ-সলমনের নাচ। কিংবা একসঙ্গে মঞ্চ মাতাচ্ছেন অরিজিত-শ্রেয়া। অনন্ত আম্বানির প্রাক বিবাহেই এমন জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। সেই আম্বানি পুত্রকেও শুনতে হয়েছিল ‘ভিখারি’ কটাক্ষ।
আরও শুনুন: রিলস নয়, বই পড়েও মিলবে জনপ্রিয়তা! তরুণ প্রজন্মের নতুন পছন্দ ‘বুকস্টাগ্রাম’
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। যে পরিবার চাইলেই বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে বিলাসবহুল বাড়ি কিনতে পারে, যাঁদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে বিশ্বের সমস্থ নামীদামী গাড়ি রয়েছে, নিজস্ব বিমান থেকে শুরু করে যাবতীয় বিলাসিতার সরঞ্জাম যাঁদের হাতের মুঠোয়, সেই আম্বানি পরিবারকে সন্তানকে ‘ভিখারি’ বলেই সম্বোধন করেছিলেন তাঁর স্কুলের বন্ধুরা। এক কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বন্ধুত্বের সংজ্ঞায় ধনী-গরীব জাতীয় শব্দের কোনও স্থান নেই। বন্ধু মানে সবাই সমান। তাই কাউকে কিছু বলতেও বাধা নেই। ঝগড়া হলেই গায়ে হাত তোলা, আবার পরক্ষণেই বুকে টেনে নেওয়া, এইসব মিলিয়েই তো বন্ধুত্ব। কাজেই সেখানে কাউকে ভিখারি বলায় অপমান নেই, বন্ধুই তো বলছে! কিন্তু তাই বলে আম্বানি পুত্রকেও শুনতে হবে এমন কটাক্ষ!
নেপথ্যে কারণ কী?
আসলে সবটাই আম্বানি পরিবারের এক বিশেষ নিয়মের ফল। নিজে যতই ধনী হন, সন্তানদের অর্থের অহংকার থাকুক এমনটা চাননি মুকেশ আম্বানি। বলা ভালো, গোটা আম্বানি পরিবারই এই ধারনায় বিশ্বাসী। মুকেশ মনে করেন, মানুষের ব্যবহারটাই আসল। তাই অর্থের মোহে কেউ যদি অন্যদের ছোট করে দেখতে শুরু করে তবে তা মোটেও ভালো নয়। সন্তানদেরও ছোট থেকেই সেই শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। তিন সন্তানকে প্রতি সপ্তাহে মাত্র ৫ টাকা করে হাতখরচ দিতেন মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতা। এই নিয়েই স্কুলে যেতে হত অনন্ত, আকাশ এবং ঈশাকে। হিসাব করে সেই টাকা খরচ করতেন তিন ভাইবোন। এদিকে তাঁরা যে স্কুলে পড়তেন সেখানে বড়লোক সন্তানের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। আম্বানির মতো না হলেও প্রত্যেকেই কোটিপতির সন্তান। কারও বাবা বলিউডের নামকরা অভিনেতা, তো কারও পরিবারে তারকা ক্রিকেটার। সবমিলিয়ে অনন্ত-আকাশের বন্ধুবৃত্ত বেশ উচ্চবিত্তে ভরা ছিল। এবার সেইসব বন্ধুরা মোটা টাকা হাত খরচও পেতেন। সেই টাকা স্কুলে নিয়ে গিয়ে দেখনদারিও চলত। এদিকে আম্বানি পুত্র হয়েও মাত্র ৫ টাকি সম্বল ছিল অনন্ত কিংবা আকাশের। এই পরিস্থিতিতেই বন্ধুরা ভিখারি বলে কটাক্ষ করত অনন্তকে। বাড়ি ফিরে সেই নিয়ে অভিযোগও জানাতেন অনন্ত। তবে মুকেশ বা নীতা তেমন আমল দিতেন না। যদিও এখন আর এই নিয়ে আক্ষেপ নেই অনন্তের। বর্তমানে তিনিও রিলায়েন্সের অংশ। কাজেই কোটি টাকার সম্পত্তি তাঁর নামেও মজুত রয়েছে। এবং এইসবকিছু সম্ভব হয়েছে ছোটবেলায় ওই অনুশাসনের ভিতর বড় হয়েছেন বলেই এমনটা মনে করেন খোদ অনন্ত। তবে একটা কথা বলতেই হয়, যে যতই ধনী হোক না কেন, বন্ধুদের খুনশুটির পৃথিবী নির্মল, অমলিন। এই গল্প যেন সেই কথাই আবার মনে করিয়ে দিল।