নিজের প্রিয়তমা বেগম মমতাজমহলের স্মৃতিতে তাজমহল বানিয়েছিলেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। আর তারই আদলে নতুন এক তাজমহল বানিয়েছেন এই ব্যক্তিও। তবে স্ত্রী নয়, মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই এই সৌধ বানিয়েছেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দুই নশ্বর মানুষের প্রেম কীভাবে কালের গণ্ডি পেরিয়ে শাশ্বত হয়ে যায়, সে কথাই বলে তাজমহল। কিন্তু কেবল প্রেমেই নয়, গভীর ভালবাসা প্রকাশ পেতে পারে আরও নানা সম্পর্কের আধারেই। সে মা ও সন্তানের সম্পর্ক হোক, কি ভাই বোনের, কিংবা বন্ধুত্বের- বিভিন্ন সম্পর্কে নানা রূপে ধরা দেয় ভালবাসা। তবে তার গভীরতা কমে না। তেমনই এক ভালবাসার নজির গড়েছেন এই ব্যক্তি। কিংবা বলা ভাল, ভালবাসার জোরেই এক অনন্য নজির গড়েছেন তিনি। এই সময়ে দাঁড়িয়ে এক নতুন তাজমহল নির্মাণ করেছেন তিনি। তবে স্ত্রী নয়, মায়ের স্মৃতিতেই এই সৌধ গড়েছেন তিনি- জানিয়েছেন আমরুদীন শেখ দাউদ সাহিব। এর ভিতরে রয়েছে একাধিক ধ্যানের ঘর, যেখানে সব ধর্মের মানুষ এসে উপাসনা করতে পারেন। পাশপাশি দশজন ছাত্রকে আশ্রয় দেওয়ার মতো একটি মাদ্রাসাও রয়েছে এই তাজমহলে।
আরও শুনুন: মহিলা কর্মীদের সঙ্গে প্রেমের ছাড়পত্র দিচ্ছে সংস্থা! কেন বিতর্ক জমল নেটপাড়ায়?
এমনিতে তাজমহল সপ্তম আশ্চর্যের এক আশ্চর্য হলেও, তা একমাত্র নয়। সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তার একাধিক প্রতিরূপ। মুঘল সম্রাটদের হাতে, ব্রিটিশদের হাতে, চিনে, বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে সেগুলি। তবে সেইসবই রাজাবাদশা বা ধনীদের তৈরি করা। তবে কখনও কখনও কোনও সাধারণ মানুষও এই অসাধ্য সাধন করেছেন। এর ভাগে উত্তরপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামের পোস্টমাস্টার ফৈজুল কাদরি তাঁর স্ত্রীর স্মৃতিতে তাজমহল বানাতে শুরু করেছিলেন। তবে আমরুদীন সেদিক থেকেও ব্যতিক্রম। নিজের মায়ের কথা ভেবেই এই কাজ করেছেন তিনি।
আরও শুনুন: দু’কামরার ঘরে সাধারণ জীবন কোটিপতি দাদার ভাইয়ের, নেই মোবাইল ফোনও
চেন্নাইয়ের বাসিন্দা এই ব্যবসায়ী তাঁর তাজমহল গড়েছেন তামিলনাড়ুর তিরুভারুর অঞ্চলে। যেখানে তাঁর আদি বাড়ি। মা-বাবার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনিই একমাত্র ছেলে। পেশায় ব্যবসায়ী বাবা তাঁদের ছোটবেলাতেই মারা যান। তারপর সমস্ত প্রতিকূলতা সয়ে একা হাতেই সন্তানদের মানুষ করেছেন মা জৈলানি বিবি। পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসারও হাল ধরেছেন শক্ত হাতে। আপাতত সন্তানেরা সকলেই নিজেদের জীবন গুছিয়ে নিয়েছেন। ২০২২ সালে প্রয়াত হয়েছেন মা-ও। এরপরেই মায়ের জন্য কী করা যায়, ভাবতে শুরু করেছিলেন আমরুদীন। প্রথাগত পদ্ধতি মেনে মাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েও তাঁর অতৃপ্তি রয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই তাজমহল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন তিনি। নিজের গ্রামে এক একর জমি কিনে ফেলেন। রাজস্থান থেকে মার্বেল নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। অবশেষে শেষ হয়েছে সমগ্র নির্মাণকাজ। একে দক্ষিণের তাজমহল বলে চিহ্নিত করতে চান ওই ব্যক্তি। সম্প্রতি জনসাধারণের জন্য এই তাজমহলের দরজাও খুলে দিয়েছেন আমরুদীন শেখ।