পরিচয়পত্র হিসাবে সারা দেশজুড়েই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আধার কার্ড। বহু বিতর্ক সত্ত্বেও আধারই হয়ে উঠেছে দেশের নাগরিকদের নির্ভরযোগ্য পরিচয়পত্র। সেই আধার কার্ডের দৌলতেই এক পরিবার ফিরে পেল তাঁদের হারিয়ে যাওয়া ১৪ জন সদস্যকে। কীভাবে সম্ভব হল এমন ঘটনা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কিছুতেই তৈরি হচ্ছিল না আধার কার্ড। আঙুলের ছাপ মেলানোর সময়ই শুরু হচ্ছিল সমস্যা। বছর ১৮-র এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের আধার কার্ড তৈরি করতে গিয়ে মহা সমস্যায় পড়েন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অবশেষে দেখা যায়, অনেক আগে থেকেই তাঁর নাম রয়েছে আধার কার্ডের খাতায়। এমনটা আবার হয় নাকি? মহারাষ্ট্রের এক আধার তৈরির কেন্দ্রে ঘটেছে এমনই অবাক করা কাণ্ড।
আরও শুনুন: তিন মাস অন্তর কিনতে হবে নতুন পোশাক, চাকরির শর্ত মানতে নাজেহাল কর্মীরা
জানা যায়, ওই যুবককে বছর দশেক আগে স্থানীয় রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়ছিল। গত বছর আধারকার্ড বানানোর জন্য তাকে ওই কেন্দ্রে আনা হয়। কিন্তু আঙুলের ছাপ নেওয়ার সময়ই শুরু হয় সমস্যা। পরে দেখা যায় ২০১১ সালেই তার আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই জানা যায় তাঁর আসল নাম মহম্মদ আমির। মধ্যপ্রদেশের জালালপুরে তাঁর বাড়ি। খুঁজে পাওয়া যায় তার হারানো পরিবারটিকেও। নিজের পরিবারের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় সেই গৃহহীন যুবককে। আধার কার্ডের মাধ্যমেও যে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব, তা দেখে অবাক হয়েছেন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বাধীন অফিসাররাও।
আরও শুনুন: ‘চড় মারার বদলে আইনের প্যাঁচে মারুন’, পরোক্ষে দেশের বাকস্বাধীনতা নিয়ে কটাক্ষ বীর দাসের
সারা দেশের মানুষকে একটি পরিচয়পত্র বানানোর কথা বলেছিল কেন্দ্র। তাই ২০০৯ সালে ‘মেরা আধার, মেরা পহেচান’ এই মন্ত্রেই শুরু হয়েছিল প্রচার। বর্তমানে দেশের যে কোনও সরকারি কাজে আধার কার্ড থাকা আবশ্যিক। সেই আধার কার্ডই এবার পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে সাহায্য করল এতজন মানুষকে। প্রথমে মহারাষ্ট্রের সেই যুবককে বাড়ি ফেরানো দিয়ে শুরু। তারপর থেকেই আরও অনেককে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট আধার নির্মাণ কেন্দ্রটি। বিহার থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া প্রেম রমেশ নামের ব্যক্তিকে নাগপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ওই কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনাথ আশ্রম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কাছে থাকা বিভিন্ন তথ্য মিলিয়ে দেখা যায় অনেকেরই আধার তৈরি করতে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তদন্ত করে দেখা যায় তাদের বেশিরভাগেরই আগে থেকে আধার কার্ড রয়েছে। সবমিলিয়ে তালিকা তৈরি করা হয় ২৫ জনের। যাদের অধিকাংশকেই আধার কার্ডের মাধ্যমে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আধার শুধু তাই পরিচয়পত্রই নয়, হারানো মানুষকে খুঁজে পাওয়ারও যে একটি পথ, তা যেন বলাই যায়।