গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা বা অন্য কোনও দিকে মন দেওয়া একেবারেই অনুচিত। তবে বিপদে পড়লে মানুষকে কত কিছুই তো করতে হয়। এই যেমন, চালকের আসনে বসেই সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে বাধ্য হলেন এক মা। ভাবছেন, কী করে সম্ভব হল এমন ঘটনা? মায়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রেডিট গাড়িরও কিছু কম নয়। স্মার্ট কার বলে কথা! শুনে নিন সেই আশ্চর্য ঘটনার কথা?
এমন ঘটনা সম্ভবত বিশ্বে প্রথম। গাড়ি চালাতে চালাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন মা! চালকের আসনে বসেই! মায়ের সাহস আর মনের জোর তো বটেই, তবে তার সঙ্গে প্রশংসার দাবি রাখে সেই গাড়িটিও। উহু, যে সে গাড়ি মোটেই নয় সেটি।
সেটি টেসলার একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক স্মার্ট কার। দারুণ স্মার্ট অটোপাইলট মোড এই গাড়িটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আর তাই বাঁচিয়ে দিল আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার বাসিন্দা এক দম্পতি ও তাঁদের আসন্ন সন্তানকে।
আরও শুনুন: চোরেদের আজব কীর্তি! চুরি হয়ে গেল ৫৮ ফুট লম্বা আস্ত একখানা সেতু
বছর তেত্রিশের ইয়েইরান শেরি ও তাঁর স্বামী ৩৪ বছরের কিটিং বেরিয়েছিলেন ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে। গর্ভবতী ইয়েইরান নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রাস্তার মধ্যেই ইয়েইরান বুঝতে পারেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা জানান দিচ্ছে প্রসব আসন্ন। এ দিকে, রাস্তায় তখন বেজায় জ্যাম। গাড়িতে গাড়িতে জট পাকিয়ে আছে যেন রাস্তাটা। এই অবস্থায় যে খুব শিগগিরই যে হাসপাতালে পৌঁছনো যাবে না, সেটা একপ্রকার বুঝেই গিয়েছিলেন।
বাধ্য হয়ে হাসপাতালের গন্তব্য সেট করে গাড়িটি অটোপাইলট মোডে রেখে স্ত্রীকে সাহায্য করতে শুরু করেন কিটিং। এক হাতে কোনও রকমে স্টিয়ারিং ধরে ছিলেন তিনি। চেষ্টা করছিলেন সাহস জোগানোর। মুখে না বললেও ওই অবস্থায় স্ত্রীকে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন কিটিং নিজেও। তবে ইয়েইরান মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, আর অপেক্ষা সম্ভব নয়। এখানেই হবে তাঁর সন্তানের জন্ম। তারপর কপালে যা থাকে তাই হবে।
হাসপাতালে যতক্ষণে পৌঁছল গাড়ি, ততক্ষণে ফুটফুটে একটি কন্যার জন্ম দিয়েছেন ইয়েইরান। তখনও অ্যাম্বিলিক্যাল কর্ড অটুট। নার্স এসে যখন নাড়ি কাটছেন, তখনও ইয়েইরান চালকের আসনেই। চিকিৎসক পরীক্ষার পরে জানালেন, মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ।
হাসপাতালের নার্সেরা শিশুটির নাম রেখেছেন টেসলা বেবি। বাবা-মা অবশ্য ভাল নাম রেখেছেন মেইভ লিলি। তবে ডাক নাম রাখা হয়েছে টেস। এমন আশ্চর্য জন্মের স্মৃতি মেয়ের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকুক, তেমনটাই চান ইয়েইরান-কিটিং দুজনেই। এমন দুর্দান্ত প্রযুক্তির জন্য গাড়ির নির্মাতা টেসলা সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন দম্পতি।
আরও খবর: হাততালি দিলেই নেচে ওঠে জল… কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে দেশের এই জলাশয়ে?
বেশ কয়েক বছর ধরেই গাড়ি নিয়ে নানাবিধ অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছে ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলা। সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনার পরে প্যারিসের একটি ট্যাক্সিসংস্থা টেসলার মডেল থ্রি কারটিকে বাতিল ঘোষণা করেন। ২০০৯ সালে ফ্লরিডায় একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল এক কিশোরীর। সেই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছিল টেসলা সংস্থার গাড়িকেই। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি যৌন হেনস্তারও অভিযোগও উঠেছিল টেসলা সংস্থার বিরুদ্ধে। তারই মধ্যে এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে টেসলার জন্য বড় সুখবর।