পার্ক মানে তো আদতে প্রমোদেরই জায়গা। সাধারণ ভাবে অবসর কাটাতেই পার্কে আসেন লোকে। কেউ আসেন প্রাতঃভ্রমণে, কেউ বা আবার বিকেলটুকু কাটাতে ভালবাসেন পার্কে। তা পার্কে অনেক কিছুতেই বারণ। ঝোপের ধারে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসতে মানা, খাবারে প্যাকেট-প্লাস্টিক ফেলতে মানা, গাছের ফুল ছিঁড়তে মানা। তবে এমন অদ্ভুত নিষেধাজ্ঞার কথা বোধহয় কস্মিনকালেও কেউ শোনেনি কখনও। আর তেমনই অদ্ভুত একটি নিষেধাজ্ঞার কথা লেখা সাইনবোর্ডের দেখা মিলল বেঙ্গালুরুর একটি পার্কে। কী লেখা ছিল সেই সাইনবোর্ডে? আসুন শুনে নিই।
‘একুশে আইনে’র রাজ্যে পিছলে পড়ে গেলে গুনতে হত মোটা টাকার জরিমানা। তবে যাঁরা ভাববেন, এসব কেবল কবিতায় বা গল্পে হয়, তাঁরা কিন্তু এক্কেবারে ভুল। কারণ এর চেয়েও অদ্ভুত আইন রয়েছে বেঙ্গালুরুর এই পার্কে।
পার্ক মানেই তো বিশুদ্ধ বিনোদনের জায়গা। ক্লান্তি মুছতে কেউ কেউ এসে, সেখানে বেঞ্চে দু-দণ্ড বসেন। গল্প করেন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, কেউ বা আবার হাঁটাহাঁটি করেন, এধার থেকে ওধার। সেরে নেন জগিংও। আর সেখানেই তো যত বিপদ। কারণ এ পার্কে হাঁটারও রয়েছে কড়া আইন।
আরও শুনুন: ‘অভিশাপ’ দূর করতে কবর খুঁড়ে শবদেহের মুখে জল গ্রামবাসীদের, নেপথ্যে কোন বিশ্বাস?
পোশাক-বিধি, খাদ্য-বিধি এমন অনেক কথাই শুনেছেন, তাই বলে হাঁটার আবার আইন হয় নাকি! আলবাত হয়। আর সেই আইন বলবৎ করেছেন এই পার্কের কর্তৃপক্ষ। এই পার্কের সর্বত্রই আপনি যেতে পারেন, তবে সেই রাস্তা পেরোতে হবে ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে। অর্থাৎ কিনা এ পার্কে আপনার অ্যান্টি ক্লক ওয়াইজ হাঁটা বারণ। বামদিক থেকেই ডানদিকেই যেতে হবে এখানে আপনাকে। তাছাড়া এই পার্কে জগিং বা দৌড়দৌড়ি করার মনবাসনা থেকে থাকলে, তা-ও আপনাকে দিতে হবে জলাঞ্জলি। কেন না এ পার্কে সেসবও নিষিদ্ধ।
বেঙ্গালুরুর ইনফাস্ট্রাকটার অ্যান্ড পাবলিক সার্ভিস দপ্তরের অধীনে ব্রুহাত বেঙ্গালুরু মহানগর পালাইক (বিবিএমপি) এই পার্কটির দেখাশোনা করে। তাদের তরফেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে পার্ক চত্বর জুড়ে। অন্তত সাইনবোর্ড তো তেমনটাই জানিয়েছে। সেখানে জগিং এবং রানিংয়ের সঙ্গে নিষিদ্ধর খাতা থুড়ি সাইনবোর্ডে নাম তুলেছে ঘড়ির বিপরীতে হাঁটাও। আর সেই সাইনবোর্ডের ছবিই দারুণ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তা দেখে বেজায় মজা পেয়েছেন নেটিজেনরা।
আরও শুনুন: এক প্লেটের দাম প্রায় ১৬ হাজার টাকা, গিনেস বুকে সবথেকে দামি ভাজাভুজি এই ‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’
তা হাঁটার সময় ঘড়ির কাঁটার চলন আর ক-জনই বা খেয়াল রাখে বলুন তো! তাই শুনতে সোজা হলেও পার্কে ঘুরতে আসা বাসিন্দাদের জন্য এ নিয়ম মানাটা কিন্তু বেশ ঝঞ্ঝাটেরও। তাছাড়া অনেক সময়ই এই অ্যান্টিক্লকের চক্করে দু মিনিটের রাস্তা পেরোতে সময় লেগে যাচ্ছে দশমিনিট। কী বা করার? গোটা পার্কটা প্রদক্ষিণ করার পরই যে মিলছে গন্তব্য। আর তা মোটেও সুখকর হচ্ছে না পার্কে ঘুরতে আসা বহু স্থানীয়দের জন্যই। ব্যপারটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয়েছে বিতর্ক।