যতিচিহ্ন বসাতে ভুল হয়েছে। তাও সামান্য একখানা ‘কমা’। আর তাতেই চাকরি খোয়াতে হল ইঞ্জিনিয়ারকে। বিষয়টা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন ওই যুবক। আর তাতেই নানা তত্ত্ব উঠে আসছে। মোটের উপর অনেকেই দুষছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে। কিন্তু কেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চাকরি কাড়বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা! এমনটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বারেবারে এই প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। তাতে ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবীদের মধ্যে। এই আবহে সামনে এসেছে এমন খবর, যা চাকরি হারানোর ভয় আরও বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় চাকরি হারানো এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দুইই রয়েছে, তবে সমীকরণটা একেবারে আলাদা।
:আরও শুনুন:
অবিবাহিতের চাকরি যাবে! কড়া নির্দেশ সংস্থার, বেঁধে দেওয়া হল বিয়ের ডেডলাইন
চাকরি হারানোর ক্ষেত্রে মূলত যে অভিযোগ বারেবারে সামনে আসে, তা হল সব ধরনের কাজে AI-এর পারদর্শিতা। অভিযোগ, এর জেরে মানুষের প্রয়োজন ফুরোচ্ছে। এক্ষেত্রে অবশ্য এমন অভিযোগ নেই। তবে যুবকের চাকরি খোয়ানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই দায়ী, এমনটা বলা যায়। ঠিক কেন? তাহলে খুলেই বলা যাক।
এই যুবক পেশায় ইঞ্জিনিয়র। আইটি সেক্টরে কর্মরত। ঘনঘন চাকরিও বদল করেন। রীতিমতো ইন্টারভিউ দিয়ে নতুন চাকরিতে যোগ দেন। সাধারণত দুটি ধাপে ইন্টারভিউ হয়। দুটি ধাপ পেরোতে পারলেই মিলবে চাকরি। সম্প্রতি কোনও এক ইন্টারভিউয়ের প্রথম ধাপটি তিনি পেরিয়ে যান অনায়াসে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে সামান্য ভুলে সবটা মাটি হয়। সামান্য ভুল বলার কারণ, ওই যুবক একটি কমা বসাতে ভুলে গিয়েছিলেন। সেই দোষেই তাঁকে বাতিল করা হয়। আসলে, আইটি ক্ষেত্রে চাকরির পরীক্ষায় বিভিন্ন কোডিং করতে হয়। সেখানে একটি কমা এমনকি স্পেস বেশি হলেও সমস্যা। তাই কমা না বসানো আপাততভাবে সামান্য ভুল মনে হলেও, সংস্থার কাছে তার ক্ষমা নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এসবের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দোষ কোথায়? ব্যাপারটা পরিস্কার হবে সংস্থার তরফে নিয়োজিত পরীক্ষকদের বয়ান শুনলেই। তাঁদের দাবি, এই যুবক AI-র সাহায্য নিয়েও পরীক্ষা দিয়েছেন। অন্ধের মতো ভরসা করেছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেধাকে। তাই সামান্য ভুল চোখে পড়েনি। বিষয়টা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। সুতরাং চাকরি বাতিলের দায়ও ঘুরে ফিরে সেই AI-র ঘাড়েই পড়েছে।
:আরও শুনুন:
বছরের মোটে দুটো সপ্তাহ গেছে, এর মধ্যেই চাকরি হারিয়েছেন ৭৫০০ জন
এই ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় খোলাখুলি জানিয়েছেন ওই যুবক। তাতে অনেকেই কটাক্ষ করেছেন। কেউ কেউ সহমর্মিতাও দেখিয়েছেন। তবে আলাদা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসঙ্গ তোলেননি কেউ। কারণ, এমনটাই যে স্বাভাবিক তা ধরেই নিচ্ছেন অনেকে। সুবিধা যখন রয়েছে তাতে কাজে লাগাতে ক্ষতি কী? AI-র প্রসঙ্গে এমনটাই মত নেটদুনিয়ার অধিকাংশের। তবে কোথাও গিয়ে কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অতিরিক্ত প্রাধান্য দেওয়ায় সাধারণ বিচারবুদ্ধি প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে? সাম্প্রতিক ঘটনা সেদিকে ইঙ্গিত করতেই পারে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কৃত্রিম মেধাকে অস্বীকারের উপায় নেই। আগামীতে এই নিয়ে আরও চর্চা হবে এটাও একেবারে স্বাভাবিক। তবে সম্পূর্ণভাবে তার উপর নির্ভর করতে শুরু করলে এমন সমস্যা হবেই। কোনও সংস্থা যদি এমনটা করে, সেক্ষেত্রেও একথা সত্যি, আবার কোনও ব্যক্তি যদি এই কাজ করে তাহলেও একইভাবে সত্যি।