শুধুমাত্র ‘আপ রুচি খানা’-ই নয়, আজকের বিশ্ব ‘আপ রুচি প্যাহেননা’-তেও বিশ্বাস করে। আর সেই পছন্দের হাত ধরেই বাজারে খাতা খুলেছে ‘ইউনিসেক্স’ বা ‘জেন্ডারলেস ফ্যাশন’-এর মতো ভাবনা। অর্থাৎ যা আসলে নারী-পুরুষ লিঙ্গভেদের উপরে। পোশাক-আশাক থেকে সাজসরঞ্জাম সবেতেই এই ‘ইউনিসেক্স’ রাস্তায় হাঁটতে চাইছে বিশ্ব। ফ্যাশনের দুনিয়াতেও আমূল বদল এনে ফেলেছে এই শব্দখানা। শুধু পোশাকআশাকই নয়, অন্তর্বাসের রুচিও লিঙ্গনামের উর্ধ্বে, তেমনটাই বিশ্বাস করেন এই তরুণ অভিনেতা, মডেল। ঠিক কী বলেছেন তিনি এই বিষয়ে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘মাই বডি মাই চয়েস’। সমস্ত আকারের, সব ধরনের শরীরই যে সুন্দর, সেই বার্তাই পৌঁছে দিতে চায় আজকের বিশ্ব। শুধু তাই নয়, পোশাকআশাক বা সাজগোজের দুনিয়াতেও এসেছে বদল। শুধুমাত্র লিঙ্গনাম দিয়ে আর পোশাক বা রুচিকে বাঁধতে রাজি নয় আজকের প্রজন্ম। ব্যক্তিমানুষের আলাদা আলাদা পছন্দের অধিকারকেই স্বীকৃতি দিতে চায় আজকের ফ্যাশন জগৎ। আর সেই চাহিদা থেকেই শুরু ‘ইউনিসেক্স’ শব্দখানার। বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটেও আজকাল তেমনই জিনিসপত্রের রমরমা। যা স্বচ্ছন্দে বেছে নিতে পারেন নারী-পুরুষ উভয়েই। শুধুমাত্র ফ্যাশন বা সাজগোজের ক্ষেত্রে নয়, বিশ্ব জুড়ে এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
শুধুমাত্র বহিরঙ্গের পোশাক বা সাজের সরঞ্জামেই নয়, অন্তর্বাস নিয়েও উঠেছে একই রকম দাবি। স্তন আবরণীর মতো অন্তর্বাসের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই সরব হয়েছেন বিভিন্ন দেশের মহিলারা। এ নিয়ে চলছে আন্দোলনও। এবার আরও একধাপ এগিয়ে অন্তর্বাসের সেই স্বাধীনতার কথাই বলতে চাইলেন ব্রাজিলের এক পুরুষ তারকা ও মডেল।
আরও শুনুন: হেনস্তা সত্ত্বেও দেশ ছাড়তে নারাজ, ‘মেয়েলি’ পোশাকের মাধ্যমেই লিঙ্গসাম্যের বার্তা সৌদি আরবের মডেলের
বছর চল্লিশের ইজরায়েল ক্যাসল সে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা-মডেল। সম্প্রতি একটি ফ্যাশন শো-তে তিনি জানান, অন্তর্বাসের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে একেবারেই বিশ্বাস করেন না ইজরায়েল। আর সে কথা যে তিনি কেবল মুখে বলেন, তা নয়। নিজের জীবনেও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন তা।
তাঁর দাবি শুনে অনেকেই চোখ কপালে তুলেছেন বটে। তবে তাতে বিশেষ টলানো যায়নি ইজরায়েলকে। তাঁর কাছে ব্যাক্তিস্বাচ্ছন্দ্যটাই সবচেয়ে বড় কথা। তাই তিনি এ কথা জানাতে একেবারেই কুন্ঠাবোধ করেন না, যে তিনি প্রায়শই অন্তর্বাসের ক্ষেত্রে মহিলাদের জিনিসপত্রকেই বেশি প্রাধান্য দেন। সম্প্রতি লন্ডনের ওই ফ্যাশন শো-তে ইজরায়েল জানান, তিনি বক্সারের তুলনায় ‘মেয়েদের অন্তর্বাস’ হিসেবে খ্যাত প্যান্টি পরেই অনেক বেশি আরাম পান। তাঁর মতে এটা একেবারেই তাঁর ব্যক্তিগত রুচি এবং পছন্দের ব্যাপার। আর অন্তর্বাসের সঙ্গে লিঙ্গভেদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই বিশ্বাস করেন জনপ্রিয় এই মডেল।
আরও শুনুন: মেয়ে হিসেবে দত্তক রূপান্তরকামীকে, পেলেন জামাই… ছক ভাঙা সিদ্ধান্ত দম্পতির
প্রায় সাড়ে ছ ‘লক্ষের কাছাকাছি ফলোয়ার রয়েছে তাঁর ইনস্টাগ্রামে। নিজের ভক্তদের কাছেও সেই বার্তাই পৌঁছে দিতে চান ইজরায়েল। লন্ডনের ওই ফ্যাশন শো-টির মূল বিষয়ই ছিল বৈচিত্র্য ও জেন্ডারলেস ফ্যাশন। সেখানেই একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ইজরায়েল। সেখানে তাঁকে দেখা গিয়েছে স্কার্টে, এমনকী একটি স্বচ্ছ একটি লেসের পোশাকেও ধরা দেন ওই মডেল। যার ভিতর থেকে তাঁর অন্তর্বাসটি ছিল কার্যতই স্পষ্ট। তবে সেই পোশাকে যথেষ্টই স্বপ্রতিভ দেখাচ্ছিল ইজরায়েলকে। সেখানেই তাঁকে অন্তর্বাস নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। আর লিঙ্গেভেদের উর্ধ্বে পোশাকআশাক নিয়ে সেখানে দিব্য খোলামেলা ভঙ্গিতেই নিজের বক্তব্য রেখেছেন ওই মডেল। জানিয়েছেন, সামাজিক ট্যাবু-র বাইরে গিয়ে নিজেকে চিনতে সাহায্য করে এই ধরনের পোশাকআশাক। আর তা নিয়ে কোনওদিনই কোনও সঙ্কোচ বা কুন্ঠাবোধ নেই ইজরায়েলের।