কোনও কঠিন পরীক্ষা নয়। স্রেফ একটি কফির কাপেই লুকিয়ে আছে সাফল্যের হদিশ। প্রার্থী চাকরির জন্য যোগ্য কি না, তা নির্ধারণ করে দেয় ওই একটি কফির কাপই। হ্যাঁ, এমনই অভিনব পরীক্ষায় কর্মীদের বাছাই করে নেন একটি সংস্থার কর্ণধার। কীভাবে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ইন্টারভিউ শব্দটি শুনলেই চাকরিপ্রার্থীদের মনে আশঙ্কা খেলা করে যায়। ইন্টারভিউতে কী প্রশ্ন করা হবে, তার উত্তর জানা থাকবে কি না, প্রশ্নকর্তা ঠিক কেমন ব্যবহার করবেন, সব মিলিয়ে ভয়েই কাঁটা হয়ে থাকেন প্রার্থীরা। কিন্তু এই ইন্টারভিউটির ধরন একেবারেই আলাদা। কোনও কঠিন প্রশ্ন নয়, বরং একেবারেই সহজ একটি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এখানে প্রার্থীদের নির্বাচন করেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক। মজার কথা হল, সেই পরীক্ষাটিও নেওয়া হয় প্রার্থীর অজান্তেই।
আরও শুনুন: বেজায় যানজটে আটকে, লগ্ন না বয়ে যায়! মেট্রো চেপেই ছাদনাতলায় কনে
কীভাবে? তাহলে খুলেই বলা যাক।
একটি সফটওয়্যার সংস্থা এমনভাবেই তার কর্মীদের নির্বাচন করে থাকে বলে জানিয়েছেন ওই সংস্থার এক কর্ণধার। ঠিক কীভাবে প্রার্থীদের পরীক্ষা নেন তাঁরা? তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ওই সংস্থায় যোগ দেওয়ার জন্য ইন্টারভিউ দিতে আসেন, সেই প্রার্থীদের কথা বলতে বলতে অফিসটা ঘুরিয়ে দেখানো হয়। আর এইভাবেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় অফিসের কিচেনেও। সেখানে কোনও না কোনও ভাবে এক কাপ কফি বা অন্য কোনও পানীয় ঠিকই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর নির্দিষ্ট ঘরে ফিরে এসে পুরো ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন আধিকারিকেরা। কিন্তু ইন্টারভিউয়ের প্রশ্নোত্তরে নয়, প্রার্থীর আসল পরীক্ষা লুকিয়ে থাকে এরপরেই। দেখা হয়, বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রার্থী কাপটিকে ফের জায়গামতো রেখে দিচ্ছেন কি না। তিনি কি কাপটিকে ধুয়ে পরিষ্কার করার জন্য কিচেনে ফিরিয়ে দিচ্ছেন, নাকি ওই ঘরেই রেখে উঠে যাচ্ছেন, এই বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় বলেই জানিয়েছেন ওই সংস্থার আধিকারিকেরা। তাঁদের মতে, কফির কাপ টেবিলেই রেখে দেওয়াকে মোটেই ভাল চোখে দেখা হয় না। উলটোদিকে, কাপটি তুলে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে আসা থেকে ওই ব্যক্তির দায়িত্ববোধ এবং দলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার প্রবণতাকে চিনে নেওয়া যায়।
আরও শুনুন: চায়ের দোকান খোলাই স্বপ্ন, মোটা মাইনের চাকরি হেলায় ছাড়লেন বাঙালি যুবতী
সংস্থাটির মতে, মানুষের জ্ঞান কিংবা বুদ্ধিমত্তা কমবেশি হতেই পারে। পরিস্থিতির সাপেক্ষে সবসময় তার প্রকাশ নাও ঘটতে পারে। কিন্তু একটি সংস্থায় কাজ করতে গেলে দায়িত্ববোধ এবং অন্য কর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার অভ্যাস থাকা একান্ত জরুরি। এই কফি কাপ টেস্টের মধ্যে দিয়ে সেই বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে যায় বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা।