ছোটবেলায় খবরকাগজে বা অন্য কোথাও ছাপা ছবিতে পেন দিয়ে কারুকাজ করেনি, এমন বাচ্চা বোধহয় খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই ব্যক্তিও করে ফেলেছেন তেমন কিছুই। বড় হলে কি হবে! ছোটবেলার সেই অভ্যেসটা থেকেই গিয়েছিল ভিতরে ভিতরে। তাই কাজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে আর্ট গ্যালারির একটি ছবিতে চোখ এঁকে ফেললেন ব্যক্তি। আর তার পরেই বুঝলেন, কী সর্বনাশটাই না তিনি করেছেন! কিছু না হলেও কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন তিনি। তার পর কী হল সেই ব্যক্তির সঙ্গে? শুনে নিন।
ছবিতে মানুষের অবয়ব আঁকা। কিন্তু তাতে চোখ-নাক-মুখ, কোনওটাই আঁকার কথা মনে ছিল না শিল্পীর। এ তো ভারী অবিচার। তাই বল পেন দিয়ে সেই অবয়বে গোল গোল কয়েকটা চোখ বসিয়ে দিয়ে এসেছিলেন এক নিরাপত্তা রক্ষী। আর তাতেই ঘটে গিয়েছে বিপত্তি। তিনি নাকি ক্ষতি করে ফেলেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি। কীভাবে। আসুন, গোটা ব্যাপারটা শোনা যাক গোড়া থেকেই।
আরও শুনুন: চিপসের প্যাকেট দিয়ে তৈরি আস্ত শাড়ি! অদ্ভুত সাজে ভাইরাল তরুণী
সেদিনই ছিল তাঁর কাজের প্রথম দিন। একটি আর্ট গ্যালারিতে পাহারা দেওয়ার কাজ। কিন্তু সেই সকাল থেকে ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকতে কার ভাল লাগে বলুন তো! চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে নানা জানা-অজানা শিল্পীর আঁকা মহামূল্য সব ছবি। আর এসব দেখতে দেখতে একটু শিল্পসত্তা জেগে উঠেছিল ওই নিরাপত্তারক্ষীর ভিতরেও।
তার উপর সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থেকে থেকে বেশ বিরক্ত তিনি। এমন কী করা যায়, যাতে সময়টা একটু কাটে। এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই ভদ্রলোকের চোখ পড়ে যায় একটি ছবির দিকে।
সেটি ছিল রুশ চিত্রশিল্পী অ্যানা লেপোর্স্কায়ার আঁকা একটি বিখ্যাত ছবি। যার নাম ‘থ্রি ফিগারস’। তিনটি অবয়ব রয়েছে সেই ছবিটিতে। তবে তাতে চোখ-নাক-মুখ নেই। আর শিল্পীর সেই বিমূর্ত ছবিটিতেই কলম চালিয়ে বসেছেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। তিনটি অবয়বেই গোল গোল চোখ এঁকে দিয়ে এসেছেন তিনি। আর তা-ও আবার বল পেন দিয়ে।
আরও শুনুন: জানলা ভেঙে অনুতপ্ত! ক্ষতিপূরণ দিয়ে গেল চোর
কম করে হলেও সাড়ে সাত কোটি টাকা দাম ওই ছবিটির। নিরাপত্তাকর্মীর শিল্পকীর্তি দেখে স্বাভাবিক ভাবেই মাথায় হাত পড়েছে রাশিয়ার ওই আর্ট গ্যালারি কর্তৃপক্ষের। আর্থিক ক্ষতি তো হয়েইছে,তার উপরে মহামূল্যবান ছবিটিরও যে ক্ষতি হয়েছে। ওই নিরাপত্তারক্ষীর পরিচয় জানা না গেলেও গ্যালারি সূত্রের খবর, তাঁর বয়স ষাটের কাছাকাছি। অপকর্ম ফাঁস হতেই তাঁকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ছবি ও সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে মামলাও দায়ের করেছেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ধরা পড়লে বেশ বড়সড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে ওই নিরাপত্তারক্ষীটিকে। এক বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে।