বড়সড় কাণ্ডকারখানা করে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সেই মহাগ্রন্থে জায়গা করে নেন অনেকেই। কিন্তু চুলের জন্য গিনেস রেকর্ডসে নাম? হ্যাঁ, এমন কাণ্ডই ঘটিয়ে বসেছেন এই মহিলা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নেশা’… এ কথা তো কবি সেই কবেই বলে গিয়েছেন। আবার কৃষ্ণা দ্রৌপদীর চুল ধরে দুঃশাসন তাঁকে সভায় টেনে আনার ফলে একটা গোটা যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছিল। সেই টানে দ্রৌপদীর বেণী খুলে গিয়েছিল বলে তিনি নাকি রীতিমতো পণ করে বসেছিলেন, যুদ্ধে কৌরবদের হারিয়ে এই অপমানের প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত তিনি আর বেণীই বাঁধবেন না। এই মহিলা কিন্তু ঠিক তাঁর উলটো। মাথাভর্তি চুল বেণী বেঁধেই রাখেন তিনি। আর সেই বেণীর বিরাট দৈর্ঘ্যের জন্যই একেবারে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে পর্যন্ত নাম উঠে গিয়েছে তাঁর। ৬০ বছরের এই মহিলার বেণীর দৈর্ঘ্য নাকি বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১১০ ফুট।
আরও শুনুন: গোলাপি হ্রদের জলে বসে বাদ্যযন্ত্রে তুললেন সুর, শিল্পীর কীর্তিতে মুগ্ধ নেটদুনিয়া
আশা ম্যান্ডেলা নামে ওই মহিলা আমেরিকার ফ্লোরিডার বাসিন্দা। ৪০ বছর আগে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো থেকে আমেরিকায় আসেন তিনি। আর তখন থেকেই চুল বাড়ানোর কথা ভাবেন ওই মহিলা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এলাকার অনেক মানুষই ড্রেডলক, অর্থাৎ এক বিশেষ ধরনের বেণী বেঁধে চুলের স্টাইল করে থাকেন। সেই কাজটিই করেছেন আশাও। তবে দৈর্ঘ্যে তাঁর বেণী রীতিমতো টেক্কা দিতে পারে সকলকেই। ২০০৯ সালে একবার ওই বেণীর দৈর্ঘ্য মেপে দেখেছিলেন মহিলা। সে সময়ে তার দৈর্ঘ্য ছিল ৫.৯৬ মিটার বা ১৯ ফুট সাড়ে ছয় ইঞ্চি। তারপর কেটে গিয়েছে আরও তেরোটি বছর। আর এতদিনে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মহিলার বেণীর দৈর্ঘ্যও। আশার দাবি, বর্তমানে তাঁর চুল ১১০ ফুট লম্বা। তাঁর স্বামী ইমানুয়েল চেগ পেশায় একজন হেয়ার স্টাইলিস্ট। মাথার চুল নিয়ে বিভিন্নরকম পরীক্ষানিরীক্ষা করে থাকেন তিনি। স্ত্রীর চুলের পরিচর্যা করেন তিনিই। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, আশার চুল পরিষ্কার করতে অন্তত ছয় বোতল শ্যাম্পু প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ভেজা চুল শুকোতে দুদিন সময়ও লাগে। বর্তমানে তাঁর চুলের ওজন প্রায় ১৯ কেজি বলে জানিয়েছেন মহিলা। তবে হ্যাঁ, একে ভার বলে ভাবতে মোটেই রাজি নন তিনি। বরং নিজের এই রেকর্ড পরিমাণ চুলের বোঝা নিয়ে রীতিমতো গর্বিত আশা ম্যান্ডেলা।