কথায় বলে ‘যার তরে মজে মন, কিবা হাঁড়ি কিবা ডোম।’ – তা প্রেম যে অন্ধ তা কে না জানে। তবে এতটাও যে অন্ধ, তা এই তরুণীকে না দেখলে বিশ্বাসই হত না। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তবে তেইশে পৌঁছেও সেই প্রেমে ঘাটতি পড়েনি এতটুকু। না কোনও পাশের পাড়ার যুবক নয়, কোনও তারকাও নয়। এই তরুণী প্রেমে পড়েছেন আশ্চর্য এক জড়বস্তুর। বিয়েও করতে চান তাকেই। কী সেটা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ছোটবেলায় সকলেরই কোনও না কোনও খেলনার শখ থেকে থাকে। এই তরুণীর ছিল খেলনা বিমানের শখ। বিশেষত বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ছোট থেকেই তাঁর বিশেষ পছন্দের। নয় নয় করে হলেও গোটা পঞ্চাশেক বোয়িং ৭৩৭ বিমানের খেলনা মডেল রয়েছে তাঁর বাড়িতে। এসবের মধ্যে একটি ছোট থেকেই খুব পছন্দ ছিল তাঁর। সেটিকে কখনও কাছছাড়া করতেন না ছোট্ট সারা। তবে কবে নিজের অজান্তেই যে সেই বিমানটির সঙ্গে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে গিয়েছিল জানতেই পারেননি। আদর করে বিমানটির নাম দিয়েছিলেন ডিকি। আর সেই ডিকির সঙ্গেই সারাদিনের বেশির ভাগ সময়টা কাটাতেন তিনি। জার্মানির বাসিন্দা সারা রোডোর ছোটবেলা কেটেছে ওই খেলনা বিমানটির সঙ্গেই। তবে বড় হয়ে গেলেও সেই বিমানটির থেকে মন টলেনি সারার। সেটিকে নিজের প্রেমিক বলেই দাবি করেছেন বছর তেইশের ওই তরুণী। এখানেই শেষ নয়। বিয়েও করতে চান সেই বিমানটিকেই।
আরও শুনুন: প্রেম নিবেদনে প্রেমিকের সঙ্গী নাকি মুরগী! প্রোপোজের কত অদ্ভুত রীতি আছে জানেন?
আশ্চর্য লাগছে নিশ্চয়ই শুনে। এর আগেও এক তরুণীর গোলাপী রঙের প্রতি ভালবাসার গল্প আমরা শুনেছিলাম। তিনি তো ভালবেসে সেই রঙের গলায় মালাও দিয়েছিলেন। এমনকি যৌনপুতুলকে বিয়ে করার কথা শুনেছি আমরা। তাকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমাতেও গিয়েছিলেন এক বডিবিল্ডার। তবে মনস্তত্বের কারবারিরা একে প্রেম বলতে নারাজ। তাঁদের কথায়, কোনও জড়বস্তুর প্রতি এই ধরনের আকর্ষণকে সাধারণ ভাবে বলা হয় ‘অবজেক্টোফিলিয়া’। আর সেই রোগেরই শিকার জার্মানির এই তরুণী। তিনি জাানিয়ছেন, শুধু ভাল লাগাই নয়, ওই বিমানের প্রতি যৌন আকর্ষণও অনুভব করেন তরুণী। বিমানটির ডানা, ইঞ্জিন সবটাই ভাললাগে তাঁর।
আরও শুনুন: প্রিয় রংয়ের সঙ্গেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন কনে, দেখে অবাক অতিথিরা
তবে চিকিৎসার ভাষায় যা-ই বলা হোক না কেন, আপাতত ওই বিমানের প্রেমেই বুঁদ সারা। ইতিমধ্যেই নেটদুনিয়ায় ছড়িয়েছে তাঁর এই আশ্চর্য প্রেমের গল্প। তবে তাঁর বন্ধুবান্ধবেরা জানান, এর আগে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সারা। সেই সম্পর্ক থেকে খুব একটা ভাল অভিজ্ঞতা হয়নি তাঁর। তার পর থেকেই জড়বস্তুর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতে শুরু করেন তিনি। এই প্রথম না, এর আগে একটি ট্রেনের প্রেমেও নাকি পড়েছিলেন সারা। এসব কথা শোনার পরে মনস্তাত্বিকদের দাবি, স্বাভাবিক সম্পর্কে ধাক্কা, সেই যন্ত্রণা এবং ভয় থেকেই এমন একটা অবস্থান বেছে নিয়েছেন ওই তরুণী।
কোনও জড়বস্তুকে বিয়ে করা জার্মানিতে আইনত অবৈধ। ওই একটা জায়গাতেই আটকে যাচ্ছে সারা আর তাঁর প্রেমিক-বিমানের সম্পর্ক। নাহলে কবেই তাঁর বিমান ডিকির সঙ্গে ধূমধাম করে বিয়েটা সেরে ফেলতেন সারা। জার্মানিতে থেকে তা সম্ভব না হলেও তার প্রিয় বিমানের সঙ্গেই বাকি জীবনটা কাটাতে চান বছর তেইশের এই তরুণী।