এ যেন অন্যরকম পিতৃতর্পণ। না এখানে কোনও মন্ত্র-তন্ত্র নেই, নেই আচার-অনুষ্ঠান। বাবার স্মৃতি আর মানুষের উপকার যেন মিলেমিশে গেছে এই তর্পণের মধ্যে। অভিনব এই তর্পণের আয়োজন করেছেন বছর তেইশের তরুণী স্বাতী অরুণ। কী সেই আয়োজন? আসুন বিশদে শুনে নেওয়া যাক।
ছোটবেলায় কেক বানাতে কী ভালই না বাসত তারা! তারা মানে স্বাতী আর তার বোন। তাদের সেই কাঁচা হাতের কাজে প্রতিবারই সঙ্গী হতেন তাদের বাবা। সত্যি কি আর ওই বয়সে তেমন করে কেক তৈরি করতে পারা যায়! আসলে বাবা না থাকলে কিছুই যে হত না। বলা যায়, দুই বোনই বাবার সঙ্গে হাত লাগাত আর কেকের গন্ধে ম ম করে উঠত তাদের রান্নাঘর। বাবা আজ আর নেই। বাবার কথা বললেই স্মৃতির ঘরদুয়ারে আজও ভেসে আসে সেই সুগন্ধ। সেই স্মৃতি সম্বল করেই পিতৃতর্পণের অভিনব আয়োজন দিল্লির বাসিন্দা স্বাতী অরুণের।
আরও শুনুন: বইয়ের মতোই আনা যায় পছন্দসই শাড়ি, দেশে আছে ‘শাড়ি লাইব্রেরি’ কোথায় জানেন?
স্বাতী এখন তেইশের তরুণী। বাবার আকস্মিক মৃত্যু একেবারেই মেনে নিতে পারেননি। ২০২০ সাল নাগাদ বুকে স্টেন বসানোর জন্য তাঁর বাবাকে প্যারিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই হয় অস্ত্রোপচার। তবে স্টেন বসানোর দিন চারেকের মধ্যেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ১৭ দিন হাসপাতালে থাকার পর মৃত্যু হয় স্বাতীর বাবার। সেবার বাবার জন্মদিন উপলক্ষে কেক বানিয়েছিলেন স্বাতী। তখন তাঁরা প্যারিসেই। কে জানত সেটাই হবে তাঁর বাবার শেষ জন্মদিন! সেদিন স্বাতীর হাতে তৈরি কেক খেয়ে খুব প্রশংসা করেছিলেন তাঁর বাবা।
আরও শুনুন: স্টার্ট আপ থেকে পথচলা শুরু করে কোটিপতি, স্বনির্ভর মহিলাদের অনুপ্রেরণা ফাল্গুনী নায়ার
বাবার মৃত্যুর পরে পরেই প্যারিসে লকডাউন ঘোষণা হয়ে যায়। ওই সময়টা তীব্র হতাশার অন্ধকারের মধ্যে ডুবে যান স্বাতী। মাস তিনেক পরে দেশে ফিরে একটা পরিকল্পনা করেন। কেক বানানো ছিল তাঁর বাবার অন্যতম প্রিয় কাজ। কেক খেতেও তিনি ভালবাসতেন। সেই কেক দিয়েই বাবাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবেন বলে ঠিক করলেন। নিলেন কেক বানানোর প্রশিক্ষণ। তারপর দিল্লিতে বাবার নামে একটি বেকারি খুলে ফেলেন তিনি। এবার সঙ্গী হয়েছেন তাঁর মা। স্বাতীর বোন অবশ্য বড় হয়ে রান্নাবান্নাকে বিদায় জানিয়েছেন। আপাতত রান্না, বা বলা যায় কেক বানানোর মাধ্যমেই বাবার স্মৃতিকে জাগিয়ে রেখেছেন স্বাতী।
বাকি অংশ শুনে নিন।