অনুষ্ঠান বাড়িতে ঢোল বাজিয়ে উপার্জন করেন এক ব্যক্তি। অনেকেই এইভাবে জীবনধারণ করে থাকেন, তাই এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কিন্তু যদি ৯৫ বছরের কাউকেও এ কাজ করতে হয়! অবাক হবেন নাকি? আসুন শুনে নিই সেই বাদ্যকরের কথা।
জীবন কঠিন-কঠোর। জীবন সংগ্রামমুখর। রুটিরুজি অর্জনের জন্য মানুষকে কী-না-কী করতে হয়! তবে সব কষ্টই হয়তো মিলিয়ে যায়, যদি জীবনের এই সংগ্রামকে হাসিমুখেই অভ্যর্থনা জানান কেউ। সম্প্রতি যেন সেই কথাই মনে করিয়ে দিলেন এক বৃদ্ধ। বিয়েবাড়িতে দাঁড়িয়ে ঢোল বাজাচ্ছেন। বয়স পেরিয়েছে ৯৫। রুটিরুজির জন্যই তাঁর এ কাজ করা। তবে এই সমস্ত পরিশ্রমটাই তিনি করছেন হাসিমুখে। আর তা দেখেই উদ্বেল হয়েছে নেটপাড়া।
আরও শুনুন: হঠাৎ জোরালো ঝাঁকুনি, বাইরে আগুন, অভিশপ্ত ট্রেন থেকে বেঁচে ফেরাও যেন ‘অলৌকিক’
পরনে ছাপোষা প্যান্ট-শার্ট। বয়সের কারণেই চোখে উঠেছে চশমা। পরম আদরে বুকের কাছে আগলে রেখেছেন নিজের ঢোলটিকে। কখনও বিয়েবাড়িতে অতিথি আসার সময় সেই ঢোল বাজিয়ে তিনি অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। কখনও আবার বিয়ের আসর মাতিয়ে রেখেছেন ঢোলের বাদ্যিতে। কখনও আবার বয়সের ভারে দাঁড়াতে না পেরে বসে পড়েছেন। ছোট্ট ভিডিও দেখে বোঝাই যাচ্ছে, এটাই তাঁর পেশা। বয়স নব্বই পেরোলেও রুটিরুজি তো উপার্জন করতেই হবে। আর তাই যে বয়সে হয়তো বিশ্রাম নেওয়ার কথা, সে বয়সে পরিশ্রম করতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু তাতে কী! তাঁর মুখের হাসি একটি বারের জন্যও মিলিয়ে যায়নি। এই একটি ভিডিও যেন ঝড় তুলেছে নেটদুনিয়ায়। তাঁর পরিচয়, ঠিকানা জানতে চেয়েছেন অনেকেই। যাতে তাঁরা কোনওভাবে ওই বৃদ্ধকে একটু সাহায্য করতে পারেন, যাতে তাঁকে অন্তত কটাদিন পরিশ্রম না করতে হয়। কিন্তু সেই ভিডিওটির ক্যাপশনে বৃদ্ধের নাম ঠিকানা কিছুই না থাকায় তাঁর পরিচয় জানা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
আরও শুনুন: দেশে এই প্রথম, এবার থেকে ‘অ্যাডভান্স’ বেতন তুলবেন সরকারি কর্মীরা, কোন রাজ্যে?
তবে এই ভিডিওর গুরুত্ব কিন্তু নেহাত বিনোদনে নয়, বরং প্রেরণায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে অনেক মোটিভেশনাল ভিডিও, রিল প্রায়ই দেখা যায়। এটাকেও তেমনই ভাবা যেতে পারে। তবে জীবন সম্পর্কে কোনও গভীর বোধ বা জ্ঞানের কোনও ভারী কথা এখানে লেখা নেই। শুধু দেখা যাবে নবতিপর ওই হাসিখুশি বৃদ্ধকে। জীবনের চাপ যাঁকে ক্লান্ত করেনি। বরং হাসি দিয়েই সেই ক্লান্তির কালি মুছে দিয়েছেন তিনি। আর তাই তিনিই আমাদের শেখাতে পারেন মোটিভেশনের পাঠ। ইঁদুরোদৌড়ের এই যুগে আমরা যেন স্বার্থপরের মতো শুধু আমাদের জীবনে নেমে আসা সমস্যা নিয়েই ডুবে থাকি। আর মনে হতে থাকে কোন এক আবর্তে যেন ক্রমশ বাঁধা পড়ে যাচ্ছি, আটকে যাচ্ছি। সেই সময় এই বৃদ্ধের হাসিমুখে ঢোল বাজানোর ভিডিও আমাদের মনে করায়, যে, জীবন কখনই থেমে থাকে না। ধীর বা দ্রুত লয়ে এগোনোর নামই তো জীবন। আর সে জীবনে যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, জীবনকে তবু বরণ করে নিতে হয় হাসিমুখেই। এই বৃদ্ধ নীরবে আমাদের সেই কথাটিই শিখিয়ে দেন।
View this post on Instagram