চুল পড়া নাকি চিরতরে বন্ধ করে দেবে ১৫০ বছরের এই প্রাচীন বিদ্যা! প্রাচীন ভারতে এমন অনেক আশ্চর্য বিদ্যাই প্রচলিত ছিল বলে শোনা যায়। কিন্তু ঘটনা হল, এই যুগে সেই বিদ্যাকে পুঁজি করেই ব্যবসায় পা রেখেছেন ৮৮ বছরের এক বৃদ্ধা। বয়স যে কেবল একটা সংখ্যা মাত্র, সে কথাই যেন ফের প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যে দেশের আদি যুগেই শারীরবিদ্যার দুই মহাগ্রন্থ লেখেন চরক আর সুশ্রুত নামে দুই চিকিৎসক, সে দেশে এই সম্পর্কিত আশ্চর্য বিদ্যার খোঁজ মিলবে, এ আর বেশি কথা কি! শোনা যায়, কয়েকশো বছর আগে শ্যাম্পুরও উৎপত্তি হয়েছিল এক ভারতীয় চিকিৎসকের হাতেই। তেমনই এক আশ্চর্য কেশ প্রসাধনীর হদিশ মিলল এবার। এমনই এক প্রসাধনী, যা নাকি চুল পড়া বন্ধ করে দিতে পারে চিরতরে। হ্যাঁ, এমনই দাবি করেছেন ৮৮ বছরের এক বৃদ্ধা, নাগামণি। আর শুধু তাই নয়, এই প্রসাধনী তৈরির প্রণালীটিকে মূলধন করেই একেবারে নিজের একটি ব্যবসাও খুলে ফেলেছেন তিনি।
আরও শুনুন: হুইলচেয়ারে বসেই খাবার ডেলিভারি, যুবকের ইচ্ছাশক্তির জোরে অবাক নেটিজেনরা
নাগামণি জানিয়েছেন, তাঁর বয়স যখন বছর ২৪, তখন হঠাৎ করেই প্রচুর চুল উঠে যাচ্ছিল তাঁর। সেই সময় এক বন্ধুর থেকে এই তেল বানানোর পদ্ধতি শিখেছিলেন নাগামণি। তিনি এ কথাও জানতে পেরেছিলেন, ওই প্রণালী অন্তত ১৫০ বছরের পুরনো। আশ্চর্যের কথা হল, সেই তেল ব্যবহার করার এক মাসের মধ্যেই চুল পড়ার সমস্যা একেবারেই কমে যায় বলে জানিয়েছেন নাগামণি। এতগুলো বছরে আত্মীয়, বন্ধু, চেনাপরিচিত আরও অনেককেই এই তেল বানিয়ে দিয়েছেন তিনি। নারকেল তেলের সঙ্গে আরও চার রকম বিশেষ তৈলবীজ মিশিয়ে এই বিশেষ তেলটি তৈরি করা বেশ পরিশ্রমের কাজ, এমনটাই জানান নাগামণি। এর মধ্যে দুটি বীজ দুষ্প্রাপ্য, ফলে অত্যন্ত দামিও। পরিচিতরা কেউ কেউ তাঁকে পেশাদার ভাবে এই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সংসারে গৃহবধূর ভূমিকাই পালন করে গিয়েছেন কর্ণাটকের বাসিন্দা নাগামণি। স্বামী এবং দুই কন্যার দেখভাল করেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। যখন তাঁর স্বামী মারা যান, সেই সময়ে নাগামণির বয়স ষাটের শেষ কোঠায়। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর তিন বছর পর নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা ভাবেন তিনি। পেশাদারভাবেই ওই তেলটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই ইচ্ছা থেকেই জন্ম নেয়, ‘রুটস অ্যান্ড শুটস’। নাগামণির নিজের সংস্থা। ৮৮ বছর বয়সে পৌঁছেও যে ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তিনি। বয়স তো দূর, এমনকি কেমোথেরাপির যন্ত্রণাও তাঁকে রুখে দিতে পারেনি। স্বামীর মৃত্যুর পর যে ব্যবসা গড়ে তুলেছিলেন তিনি, বড় মেয়ের মৃত্যুর পর সেই ব্যবসাটিকেই আঁকড়ে ধরেছেন তিনি। শূন্যতাকে কিছুতেই জিততে দেবেন না, এমনটাই যে পণ করেছেন ৮৮ বছরের ওই বৃদ্ধা।