গরম যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে প্রয়োজন বাড়ছে বিদ্যুৎ আর জলের। ফলে দুই খাতেই হু হু করে বাড়ছে খরচ। কিন্তু সেই দুই খাতেই খরচ একেবারে শূন্য করে ফেলা যায় কীভাবে, সে উপায় বাতলে দিচ্ছেন এই বৃদ্ধ। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিদ্যুতের বিল যেভাবে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে নাভিশ্বাস মধ্যবিত্তের। তার উপরে তীব্র দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। যে হারে তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে, তাতে শুধু পাখাতে কুলোচ্ছে না। এসি, কুলার চালাতে হচ্ছে দিনরাত। তার ফলে বিদ্যুতের বিলও বাড়ছে চড়চড়িয়ে। আবার লোডশেডিং হলে প্রাণান্তকর দশা। এদিকে এই গরমের মধ্যেই কখনও বেঙ্গালুরু, কখনও দিল্লিতে জলসংকটের খবরও সামনে এসেছে। কিনতে হচ্ছে জল, অনেকসময়ই তাও বাড়ন্ত। অর্থাৎ প্রবল গরমে যে দুটি জিনিসের সবচেয়ে প্রয়োজন, বিদ্যুৎ ও জল, তা-ই নিয়েই টানাটানি। সেখানেই রেহাই মিলতে পারে কী উপায়ে, সে পথ দেখাতে পারেন এই বৃদ্ধ। তাও বিনা খরচেই। হ্যাঁ, বিদ্যুৎ ও জল বাবদে একটিও টাকা খরচ হয় না তাঁর।
আরও শুনুন:
বিনামূল্যে সাদা টি-শার্ট উপহার দেবেন রাহুল গান্ধী! কোন শর্তে মিলবে জানেন?
না, মোটেও সাধুসন্ন্যাসী নন তিনি। নিজে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন না, এমনটা নয়। আসলে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা এন রামাকৃষ্ণান এমন অভিনব সব পন্থা বার করেছেন, যার ফলেই তাঁর বিদ্যুৎ ও জলের খাতে খরচ নেমে গিয়েছে শূন্যে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য খরচও বিশেষ নেই তাঁর। বাজারে অগ্নিমূল্য যতই হেঁশেলের আগুন নেভাতে চাক না কেন, বছর বাহাত্তরের এই বৃদ্ধ কিন্তু দিব্যি আছেন। অবসরের পরে দিব্যি নামমাত্র খরচেই সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
কিন্তু কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আসলে বাড়ির ছাদ জুড়ে ৮০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল বসিয়েছেন এই বৃদ্ধ। সৌরবিদ্যুতেই চলে তাঁর বাড়ির কাজকর্ম। ফলে মাসিক বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে আর মাথা ঘামানোর প্রয়োজন পড়ে না। এদিকে সাড়ে সাতশো লিটারের বিশাল ট্যাঙ্ক বসিয়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করাও শুরু করেছেন তিনি। সেই জলে গৃহকর্ম থেকে গাছপালার পরিচর্যা, সবই মিটে যায়। আসলে গাছপালা তো আর একটি-দুটি নয়। বাজারের দৈনন্দিন খরচ বাঁচায় বৃদ্ধের বাড়ির বাগানজোড়া গাছপালা। প্রায় ১৫০ রকম গাছপালা রয়েছে তাঁর বাড়ির বাগানে। সেখানে যা শাকসবজি, ফলমূল উৎপন্ন হয়, তা বাড়ির কাজে লাগে, আর উদ্বৃত্ত অংশ দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়। রান্নাঘর ও বাগানের বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে মাসে অন্তত ১৫ কিলোগ্রাম জৈব সারও তৈরি করেন বৃদ্ধ। তা চাষের কাজেও লাগে, আবার বিক্রিও করা যায়। সব মিলিয়েই, বাড়ির নিত্যদিনের খরচ প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছেন সত্তর পেরোনো এই বৃদ্ধ।