সাত হাজার বছরের পুরনো এক রাস্তা। এতদিন যা চাপা পড়েছিল সমুদ্রের নীচে। অথচ এতদিনেও এতটুকু নষ্ট হয়নি এই রাস্তা। সম্প্রতি এই প্রাচীন রাস্তা নিয়েই রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কোথায় পাওয়া গেল এই রাস্তার খোঁজ? আসুন শুনে নিই।
রাস্তায় বেরোলেই বড় বড় গর্ত। পাশ কাটিয়ে একটা গাড়ি যায়, তো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে আরেকটা গাড়ি। অনেকেরই এলাকাতেই এই দৃশ্য নতুন নয়। রোজকার যানজটের অন্যতম কারণ রাস্তার বেহাল অবস্থা। অথচ খোঁজ নিলে দেখা যাবে কয়েক মাস আগেই সেই রাস্তা তৈরি হয়েছে। অথচ প্রায় ৭০০০ বছর আগে তৈরি হওয়া এক রাস্তা এখনও দিব্য আছে।
আরও শুনুন: পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, শুধু মহিলাদের জন্যই দেশে তৈরি হচ্ছে ২৫০টি ‘পিঙ্ক পার্ক’
ভাবছেন তো এমনটাও কি সম্ভব! শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ক্রোয়েশিয়ার এক দ্বীপের কাছে রয়েছে এমন এক রাস্তা যার বয়স সাত হাজার বছরেরও বেশি। দীর্ঘদিন তা সমুদ্রের তলায় ডুবে ছিল। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এই রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। আপাতভাবে দেখলে এতটুকু বোঝার উপায় নেই, এই রাস্তা এতটা প্রাচীন। এমনকি কোনও পরিচর্যা ছাড়াই এই রাস্তা যেভাবে টিকে আছে, তা অবাক করবে সকলেই। প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও বিভিন্ন পরীক্ষার পর বিজ্ঞানীর জানতে পারেন, রাস্তায় লেগে থাকা পাথর কয়েক হাজার বছরের পুরনো। মনে করা হচ্ছে, এক সময় ওই অঞ্চলে রীতিমতো জনবসতি ছিল। এই রাস্তা সেই শহরের প্রধান যাতায়াতের পথ ছিল। ফলত তা এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছিল যে এতবছরেও প্রায় নষ্ট হয়নি বললেই চলে। যা দেখে রীতিমতো অবাক বিজ্ঞানীরা। এমনকি এখনও এতটুকু ক্ষয়ে যায়নি রাস্তার কোনও অংশবিশেষ।
আরও শুনুন: কেউ যুদ্ধ করেছেন, কেউ সামলেছেন সিংহাসন… ভারতীয় মুদ্রায় কুর্নিশ জানানো হয়েছে যে নারীদের
ওই অঞ্চলের বেশ কিছুটা অংশ বহুদিন আগে থেকেই সমুদ্রের নীচে রয়েছে। সেখানে প্রায়শই গবেষণা চালাতেন বিজ্ঞানীরা। এমনই একদিন রেডিও ট্রান্সমিটারে এই বিশেষ রাস্তার খোঁজ মেলে। জলের গভীরে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায় সত্যিই সেখানে রাস্তা রয়েছে। তারপর সেখান থেকে পাথর তুলে এনে পরীক্ষা করা হয়। তাতেই দেখা যায় পাথরগুলোর বয়স কম করে কয়েক হাজার বছর। ইতিহাস ঘাঁটতেই উঠে আসে সেই হারিয়ে যাওয়া শহরের খোঁজ। তখনই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই রাস্তা আসলে ওই শহরের প্রধান জনপথ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। মনে করা হচ্ছে সমুদ্রের এই অংশে এমনই আরও অনেক প্রাচীন নিদর্শন খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তাই রীতিমতো জোর দিয়ে তল্লাশি শুরু করেছে বিজ্ঞানীর দল।