ক্লান্তি মেটাতে চাই ঘুম। মন ভালো করতেও চাই ঘুম। কিন্তু চাইলেই তা মিলছে কোথায়! মাঝরাতে ফোনের হানা, কিংবা অন্য কোনও সমস্যা, একেবারে নিশ্চিন্তে ৬ ঘন্টাও ঘুমাতে পারেন না ৬১ শতাংশ ভারতীয়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অন্তত এমনটাই জানাচ্ছে। আর কী বলছে ওই সমীক্ষা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
তোর ঘুম পেয়েছে বাড়ি যা! গানের কথা শুনে বাড়ি গেলেও, ঘুম এত সহজে বাড়ি ফিরবে না। কোনওক্রমে এলেও আবার কখন উড়ে যাবে, তা বোঝা মুশকিল। তাই একটানা নিশ্চিন্তের ঘুম অনেকের কাছেই স্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হাজার চাইলেও তা সত্যি হবে না। আর এই সমস্যা প্রায় ৬১ শতাংশ ভারতীয়র।
আরও শুনুন: ভাতঘুম কিংবা ঘুম-ঘুম ক্লাসরুম! ঘুম সকলেরই ‘বার্থ রাইট’
কথায় আছে, ঘুম আমাদের বার্থরাইট। শরীরের জন্যও তা আবশ্যক। না ঘুমিয়ে যতই কাজ করা হোক, একটা সময়ের পর শরীর আর দেবে না। তখন ঘুমই একমাত্র ওষুধ। আর এমনটা দীর্ঘদিন করলে শরীরে অনায়াসে বাসা বাঁধবে নানা রোগ। তাই চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন দিনে অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা নিশ্চিন্তের ঘুম প্রয়োজন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের। কিন্তু চাইলেও তা হচ্ছে না। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় সেই ছবিই স্পষ্ট হয়েছে। দিনের শেষে ক্লান্তিতে বিছানায় শুলেও ঘুমাতে পারছেন না অনেকেই। ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার মতো রোগ না থাকলেও এই সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। তার কারণ অবশ্য একাধিক। প্রথমেই মোবাইল ফোন। রাত বিরেতে ফোন কল কিংবা মেসেজের উত্তর দিতে উঠলে ঘুমের বারোটা বাজবেই। এছড়া অনেক রাত অবধি সোশাল মিডিয়ায় অবাধ বিচরণ। যার দরুন চট করে ঘুম আসে না চোখে। মোবাইলের কথা বাদ দিলেও, রাতের বেলা অনেকবার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠতে হয়। সেখানেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। একবার-দুবার নয়, বেশ কয়েকবার এই কারণে উঠতে হয়। এছাড়া বাড়িতে বাচ্ছা থাকলে তাকে নিয়ে সমস্যা হতেই পারে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর আরও একটা বড় কারণ বিছানা। ঠিকমতো বিছানা না হলেও অনেকে ঘুমাতে পারেন না। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৬১ শতাংশ।
আরও শুনুন: ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বললেও শাস্তি নয়? সুপ্রিম কোর্ট কী বলছে?
সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রায় ৪১ হাজার পুরুষ ও মহিলা। তাঁদের মধ্যে ৬১ শতাংশ অন্তত ৬ ঘণ্টাও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন না বলে দাবি করেছেন। এখানেই শেষ নয়। বাকিদের মধ্যে ২৩ শতাংশ জানিয়েছে মাত্র ৪ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্যও রীতিমতো বেগ পেতে হয় তাঁদের। সমস্যার কারণটা কমবেশি সকলের ক্ষেত্রেই এক। ২৮ শতাংশ জানাচ্ছে তাঁরা ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে পারেন। মাত্র ৬ শতাংশের দাবি দিনে ৮ ঘণ্টার ঘুম তাঁদের হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, গোটা দেশের নিরিখে এই সংখ্যা কতটাই কম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ঘুমের অভাব ভবিষ্যতে ঠিক কী কী সমস্যা ডেকে আনতে পারে? যদিও আনতে পারে বলাটা ভুল। বলা ভালো, এর জেরে কী কী সমস্যা হচ্ছে? প্রথমেই ওবেসিটি বা স্থূলতা। অনেকেই মনে করছেন অদূর ভবিষ্যতে ভারতে মহামারির আকার ধারণ করবে এই ওবেসিটি। ইতিমধ্যেই ভারতীয়দের মধ্যে স্থূলতার হার যথেষ্ট বেশি। কিন্তু তার সঙ্গে যে ঘুমের অভাব এইভাবে জড়িয়ে, তা জানতে পেরে অবাক হয়েছেন অনেকেই। এছাড়া ডেয়েবেটিস, হার্টের সমস্যা, হাইপার টেনশনের মতো রোগও সবজেই দানা বাঁধবে ঘুমের অভাবে। সবমিলিয়ে এই সমস্যা যে মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়, তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা।