ছোট্ট একটা শহর। বাসিন্দা প্রায় ৬ হাজার। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ির ঠিকানা একই। শুনে অবাক লাগলেও সত্যি। এত সংখ্যক মানুষ একটাই রাস্তার দুপাশে থাকেন। সকলেই ঠিকানা হিসেবে ওই একই রাস্তার নাম লেখেন। তা কোথায় রয়েছে এই শহর? আসুন শুনে নিই।
কথায় আছে, ‘যদি হও সুজন, তাহলে তেঁতুল পাতায় নজন।’ সেকথারই বাস্তব রূপ দেখা যায় এই শহরে। এখানে প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দা একটি রাস্তার ধারে বাস করেন। সকলেই ঠিকানায় উল্লেখ করেন ওই একই রাস্তার নাম। অথচ এই ব্যবস্থা নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই তাঁদের। নিশ্চিন্তে মিলেমিশে থাকেন সকলেই।
আরও শুনুন: রাতে-দিনে অফিস! পরস্পরকে সময় দেবেন কীভাবে? ইঞ্জিনিয়ার দম্পতিকে প্রশ্ন খোদ আদালতের
কথা বলছি পোল্যান্ডের সিউলেসজোয়া (Sułoszowa) শহর সম্পর্কে। শহরটা যে খুব বড় তা নয়। বাসিন্দা প্রায় ৬ হাজার। কিন্তু এক অদ্ভুত কারণে এই শহর গোটা বিশ্বের মধ্যে অনন্য। কারণ শহরে রয়েছে কেবল একটি মাত্র বড় রাস্তা। আর সেই রাস্তার ধারেই ছোট ছোট ঘরে বাস করেন এত সংখ্যক মানুষ। প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তার ধারে রয়েছে অসংখ্য বাড়ি। এমনকি প্রতিটি বাড়ির সঙ্গে রয়েছে বাগান। তবে তা বাড়ির সামনে নয়। পিছনের দিকে। এমনকি বাগানের আকৃতিও অদ্ভুত। সরু এবং লম্বাটে ওই বাগান গুলো দেখলে মনেই হবে না সেখানে চাষ করা সম্ভব। অথচ সেই বাগানেই বিভিন্ন সবজির চাষ করেন শহরের বাসিন্দারা। কেউ কেউ আবার সার দিয়ে গাছও লাগিয়ে রেখেছেন সেখানে। তাই উপর থেকে দেখতে বড়ই অদ্ভুত লাগে পোল্যাণ্ডের এই শহর। মনে হবে রাশি রাশি সবুজের মাঝে একটা ধূসর লাইন টানা হয়েছে। আর সেই লাইনের দুপাশে নানা রঙের মেলা। আসলে ওই ধূসর লাইনটাই হল শহরের একমাত্র রাস্তা। যার পাশে রংবেরঙের বাড়ি। আর বাকী অংশজুড়ে সবুজের সমাহার।
আরও শুনুন: RAW আর ISI অফিসারের কি সত্যিই প্রেম হয়? ‘পাঠান’ প্রসঙ্গে জবাব প্রাক্তন RAW প্রধানের
সম্প্রতি শহরটির এমন এক ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো অবাক নেটদুনিয়ার বাসিন্দারা। পৃথিবীর আর কোনও দেশে এমন দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে। তাই এই ছবি ঘিরে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। একইসঙ্গে শহরের বাসিন্দাদের এমন সহযোগী মনোভাব দেখেও বেশ অবাক হয়েছেন অনেকেই। যেখানে সামান্য কিছু সমস্যা হলেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝগড়ার খবর শোনা যায়, সেখানে এই শহর একেবারেই ব্যতিক্রম। অন্যদিকে এই শহরের পরিবেশ নাকি এতই মনোরম যে এখানকার কোনও বাসিন্দা বাড়ি বিক্রিই করতে চান না। এমনকি শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে এতটাই মিল যে, নিজেদের বাগানে চাষ করা সবজিও এঁরা সকলে ভাগ করে নেন। তাই বছরের পর বছর ধরে প্রতিবেশীদের ছেড়ে যেতে চান না কেউই।