কোথাও ক্লাব, কোথাও রেস্তোরাঁ, কোথাও আবার সমুদ্র সৈকত। সবই ভারতের মধ্যে। অথচ সেখানে ঢোকার অধিকার নেই কোনও ভারতীয়র। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ঠিক কেন এমন নিয়ম জানেন? আসুন শুনে নিই।
কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ। ব্রিটিশ আমলে ঠিক এমনটাই লেখা থাকত এ দেশের কিছু ক্লাবের বাইরে। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও দেশের কিছু জায়গায় সেই নিয়ম বদলায়নি। ভারতে হলেও, সেখানে প্রবেশের অধিকার নেই কোনও ভারতীয় নাগরিকের।
আরও শুনুন: ৩৪ বছর ধরে ছিলেন অধরা, খোঁজ মিলতেই মেয়ের ‘বাবা’-র বিরুদ্ধে মামলা ঠুকলেন মহিলা
বিদেশে যেতে গেলে দরকার হয় পাসপোর্ট, ভিসা। সঠিক অনুমতি ছাড়া অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ থাকে না কারও। কিন্তু দেশের মধ্যে কি আর এমন নিয়ম খাটে! অনেকেরই ধারণা স্বাধীন নাগরিক হিসেবে, চাইলেই নিজের দেশের যে কোনও প্রান্তে যাওয়া যায়। কিন্তু না! আমাদের দেশে রয়েছে এমন কিছু জায়গা যেখানে চাইলেও যাওয়া সম্ভব না কোনও ভারতীয় নাগরিকের। সেখানে যেতে পারবেন স্রেফ বিদেশিরাই। ঢোকার আগেই দেখাতে হবে বিদেশি পরিচয়পত্র। এমনকি কোনও ভারতীয়, যিনি এই মুহূর্তে ভিন দেশের নাগরিক, তাঁকেও ওইসব জায়গায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে আহমেদাবাদের সাকুরা রেস্তোরাঁ। মূলত জাপানি খাবারের জন্য এই রেস্তোরাঁর বেশ নামডাক রয়েছে। তবে সেই প্রশংসা করার অনুমতিও স্রেফ জাপানিদেরই। মানে এই রেস্তোরাঁয় জাপানি ছাড়া আর কারও প্রবেশের অধিকার নেই। ভারতীয়দের তো নয়ই! অথচ রেস্তোরাঁর মালিক একজন ভারতীয়। শোনা যায়, তিনিই নাকি নিজের দেশের লোকজনের এখানে ঢোকা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ কোনও এককালে এক কিছু ভারতীয় রেস্তোরাঁর কর্মীদের বেজায় অপমান করেছিল। সেই বদলা নিতেই নিজের রেস্তোরাঁয় ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তালিকায় এরইরেই রয়েছে কসৌলের ‘ফ্রি ক্যাফে’। এখানেও ভারতীয়দের ঢোকার অনুমতি নেই। এক্ষেত্রেও কারণ হিসেবে শোনা যায়, রেস্তোরাঁর মালকিনকে অপমান করেছিল একদল ভারতীয় যুবক। যদিও অনেকেই বলে থাকেন, বিদেশিদের নেশা করার অন্যতম আখড়া এই ক্যাফে। তাই সেখানে ভারতীয়দের যাওয়ার অনুমতি নেই। এরপর বলতে হয় গোয়ার ফরেনারস বিচের কথা। এক্ষেত্রে অবশ্য ভারতীয় সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যতই পশ্চিমি সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটুক, এ দেশে এখনও অনেকেরই পোশাক নিয়ে ছুতমার্গ রয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারেন, তাই এই একটা বিচ সংরক্ষিত করা রয়েছে স্রেফ তাঁদের জন্য, এমনটাও মনে করেন কেউ কেউ। তালিকায় রয়েছে চেন্নাইয়ের এক হস্টেলও। এখানেও ভারতীয়রা নট অ্যালাউড। ঢুকতে গেলেই দেখাতে হয় বিদেশি পাসপোর্ট। যদিও এর নেপথ্যের কারণ সঠিকভাবে জানা যায় না। তালিকায় কিছু আগে অবধি ছিল বেঙ্গালুরুর এক হোটেলও। সেখানেও স্রেফ জাপানি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হত না। তবে বর্তমানে সরকারি হস্তক্ষেপে সে নিয়ম শিথিল হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ভারতীয়দের ঢুকতে না দেওয়ার নিয়ম জারি ছিল এই হোটেলে।
আরও শুনুন: উপহার হিসেবে চাই ৯০ হাজার টাকা! কেউ রাজি না হওয়ায় বিয়ে বাতিল কনের
একথা বলাই বাহুল্য, বেশিরভাগ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রেই কারণ হিসেবে উঠে এসেছে গুটিকয়েক ভারতীয়র ব্যবহার। যার জন্য নিয়ম জারি হয়েছে গোটা দেশের নাগরিকদের জন্যই। যদিও এই নিয়ে বিশেষ মাথা ব্যথা নেই বহু পর্যটকের। হাজার হোক, দেশের তো আর রেস্তোরাঁ, বিচ কিংবা হোটেলের অভাব নেই!