৩২ বছর স্নান করেননি। মহাকুম্ভেও নামবেন না জলে। প্রয়াগে রয়েছেন এমনও এক সাধু। বর্তমানে তিনিই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। তার কারণ স্রেফ স্নান না করা নয়, তাঁর উচ্চতাও। মাত্র ৩ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার কারণেও এই সাধু নজর কেড়েছেন সবার। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মহাকুম্ভকে তীর্থের রাজা বলেছিলেন সম্রাট আকবর! বছরের পর বছর ধরে এই মেলার ভিড় অবাক করে গোটা বিশ্বকে। সেই অর্থে কোনও মন্দির নেই, উপলক্ষ বলতে গঙ্গাস্নান। এবং সেই টানেই দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। তবে মেলায় উপস্থিত সাধুরাও আকর্ষণের অন্যতম কারণ। তাঁদের আশীর্বাদ নিতেও অনেকে কুম্ভমেলায় হাজির হন।
এবারের কুম্ভমেলায় অংশ নিতে পারেন ৪০ কোটি ভক্ত। এমনটাই অনুমান বিশেষজ্ঞ মহলের। তাই প্রস্তুতিও চলছে জোরদার। নিরাপত্তায় এতটুকু ফাঁক রাখা হচ্ছে না। ভক্তরা তো বটেই, সাধুরাও রয়েছে নজরে। একদিকে যেমন তাঁদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে, তেমনই খেয়াল রাখা হচ্ছে ভিড়ের সুযোগ কোনও সন্ত্রাসবাদী যেন মেলায় না হাজির হয়। তবে সে দায়িত্ব প্রশাসনের। মেলায় আগত ভক্ত বা সাধুরা এইসব ব্যাপারে মাথা ঘামাতে নারাজ। আর সেই ছবিই ধরা পড়ছে প্রয়াগের মেলা প্রাঙ্গণে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন সাধুরা। তাঁদের অনেকেই বিশেষ কারণে আলাদা। এদের মধ্যেই রয়েছে গঙ্গাপুরী মহারাজ। তবে ওই নামে তাঁকে কেউ চেনে না বললেই চলে, সকলের কাছে তিনি ‘ছোটু বাবা’। এমন নামের কারণ তাঁর উচ্চতা। মাত্র ৩ ফুট ৮ ইঞ্চির এই সাধু অসমের কামাক্ষ্যা থেকে প্রয়াগে এসেছেন। উদ্দেশ্য কুম্ভমেলায় অংশ নেওয়া। তবে তিনি শাহি স্নান করবেন না। স্রেফ মেলায় থাকবেন, ভক্তদের সঙ্গে মিশবেন, আবার ফিরে যাবেন স্বস্থানে। নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ এক কারণ।
আসলে, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে স্নান করেননি এই সাধু। বর্তমানে তাঁর বয়স ৫৭। এতদিন ধরে একইভাবে রয়েছেন গঙ্গাপুরী। মাথায় বিশাল জটা। তাতে জল লাগে না কয়েক দশক হয়ে গেল। অবশ্য এমনটা নিজের ইচ্ছাতেই করেন ছোটু বাবা। তাঁর কথায়, বিশেষ এক ইচ্ছাপূরণ না হওয়া অবধি স্নান না করার পণ করেছেন। তাই কুম্ভমেলায় উপস্থিত থাকলেও তিনি জলে নামবেন না। এই গল্প ভক্তদের শোনাচ্ছেন গঙ্গাপুরী নিজেই। সেইসঙ্গে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিচ্ছেন। ভক্তরাও সেই কাহিনি অবাক হয়ে শুনছেন। সবমিলিয়ে এই পরিবেশ ভারী পছন্দ হয়েছে ছোটু বাবার। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে কথা নিজেই জানিয়েছেন তিনি। এই বছরই প্রথমবার কুম্ভমেলায় অংশ নিয়েছেন গঙ্গাপুরী। সেখানে এমন অভিজ্ঞতা কল্পনা করতে পারেননি। তবে এখানে এসে যেভাবে তাঁর দিন কাটছে তাতে আগামী বছরগুলোও কুম্ভে উপস্থিত থাকতে চান গঙ্গাপুরী।