কার্টুন মানেই বাচ্চাদের জিনিস। বড়দের তাতে তেমন আগ্রহ নেই। কিন্তু কার্টুন দেখেই যদি ভবিষ্যতের আন্দাজ মেলে? শুনতে অবাক লাগলেও জনপ্রিয় এক কার্টুনে এমনটাই ঘটেছে। ভবিষ্যতের বেশ কিছু ঘটনা আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছিল এই কার্টুন। ব্যাপারটা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভবিষ্যতে কী হবে তা আগেভাগে জেনে ফেলা অসম্ভব। কেউ কেউ দাবি করেন এমন ক্ষমতা তাঁদের রয়েছে। এঁরাই জ্যোতিষী বা ভবিষ্যতদ্রষ্টা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। টাকার বিনিময়ে ভবিষ্যতের কথা বলেন। সব কথা যে মিলবে তার কোনও মানে নেই। তবু ভবিষ্যৎ জানার লোভে অনেকেই এঁদের কাছে ভিড় জমান। অথচ জনপ্রিয় এক কার্টুন বিনামূল্যেই ভবিষ্যতের হদিশ দিয়েছে দীর্ঘদিন।
:আরও শুনুন:
সামান্য কার্টুন হয়েও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল Mickey Mouse
বিশ্বাস না হলেও এমনটাই সত্যি। কথা বলছি সিম্পসন সম্পর্কে। অনেকেই এই জনপ্রিয় কার্টুনের ভক্ত। নেটদুনিয়ার মিম সৌজন্যে এই কার্টুনের কিছু চরিত্রও বেশ বিখ্যাত। তবে এই কার্টুনেই এমন কিছু ঘটনা দেখানো হয়েছে, যা হুবহু মিলে গিয়েছে ভবিষ্যতের সঙ্গে। তালিকায় প্রায় ২০-২২ টি ঘটনা রয়েছে।
প্রথমেই বলতে হয় ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি। ২০১৭ সালে আমেরিকার মসনদে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ এই খবর আগেভাগেই জানানো হয়েছিল সিম্পসনের বছর খানেক আগের এক পর্বে। সরাসরি না বললেও সেখানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের নামই উল্লেখ করে হয়েছিল। তখন বিষয়টি নিয়ে কেউ মাথা না ঘামালেও, পরে দেখা যায় এটা সত্যি।
একইভাবে ২০০৮ সালের এক এপিসোডে দেখানো হয়েছিল আমেরিকায় নির্বাচনের কিছু সমস্যার কথা। ৪ বছর পর সেই সমস্যাই বাস্তবে ঘটে। ২০১২ সালে স্বীকৃতি পাওয়া ‘গড’স পার্টিকেল’-এর কথাও ১৪ বছর আগে জানিয়েছিল এ সিম্পসন। মজার ছলেই কার্টুনের এক এপিসোডে দেখানো হয়, বোর্ডে ফর্মুলা লিখছেন অধ্যাপক। আর সেই ফর্মুলার সঙ্গেই মিলে যায় হিগস বোসন তত্ত্ব।
:আরও শুনুন:
মা, বাবাকে সবথেকে বেশি কোন প্রশ্ন করে ছোটরা? সমীক্ষায় মিলল চমক
এখানেই শেষ নয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বেংট হোলমস্ট্রমের নামও আগেভাগেই ঘোষণা করেছিল সিম্পসন। কার্টুনে দেখানো ছবি হুবহু মিলে যায় ছ-বছর পর।
এছাড়া স্মার্ট ওয়াচ, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, ল্যাপটপ, ড্রোন ক্যামেরার মতো একাধিক আধুনিক যন্ত্রও অনেক আগেই দেখানো হয়েছিলে এই কার্টুনে। কীভাবে এমনটা সম্ভব করতেন কার্টুন নির্মাতারা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে যেভাবে এই কার্টুনে দেখানো ঘটনা ভবিষ্যতে মিলেছে, তাতে অবাক না হয়ে উপায় নেই।
তবে সবথেকে অবাক করা কাণ্ড ইবোলা ভাইরাস সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী। প্রায় ১৭ বছর আগের এপিসোডে এই ভাইরাসের কথা জানায় সিম্পসন। এর ফলে কী হতে পারে সেইসবও দেখানো হয়েছিল কার্টুনে। বাস্তবেও তেমনটাই ঘটে। শোনা যায়, এমনই একাধিক ঘটনার ভবিষ্যৎবাণী করেছেন সিম্পসন। তালিকায় লাদেনের মৃত্যু অবধি রয়েছে। কার্টুনের এক এপিসোডে তিন চোখের মাছ দেখানো হয়। পরে দেখা যায় সত্যিই এমন ম্যাচের অস্তিত্ব রয়েছে।
তবে চর্চার অভাবে এই কার্টুনে অদ্ভুত দিকটি অনেকেরই অজানা রয়ে গিয়েছে। নেটদুনিয়ায় এই নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন ঠিকই, কিন্তু নির্মাতাদের তরফে সঠিক উত্তর মেলে না। যন্ত্র নিয়ে ভবিষ্যতবাণী তাও সম্ভব! কল্পবিজ্ঞানের গল্পে এমন উদাহরণ রয়েছে বহু। কিন্তু ভবিষ্যতে কে নোবেল পাবেন, কিংবা কোন ভাইরাসের আক্রমণ হবে বিশ্বজুড়ে, সে কথা আগেভাগে জানানো অসম্ভবই বটে। অথচ সেই কাজই বছরের পর বছর ধরে করে আসছে সিম্পসন। ১৯৮৯ সালে চালু হওয়া এই আমেরিকান কার্টুন, এখনও দিব্য চলছে। ভবিষ্যতে এমনই আরও অনেক ঘটনার আগাম আভাস দিতেই যেন বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে এই কার্টুন।