একটু আধটু নয়, প্লাস্টিকের পরিমাণ মোট ৭৬ টন! হ্যাঁ, সমুদ্রসৈকত থেকে এই বিপুল মাপের বর্জ্যই পরিষ্কার করেছেন বিশাখাপত্তনম শহরের বাসিন্দারা। আর এ কাজে হাত লাগিয়েছিলেন একসঙ্গে ২২ হাজার জন মানুষ। এই বিপুল কর্মকাণ্ডের সুবাদেই নয়া বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন তাঁরা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্লাস্টিক বর্জ্যের দরুন পরিবেশ যে কীভাবে দূষিত হয়ে চলেছে, সে কথা আজ আর অজানা নয়। তাই দূষণ প্রতিরোধের উদ্দেশ্য নিয়েই পথে নেমেছিলেন শহরের বাসিন্দারা। ঠিক করেছিলেন, শহরে থাকা সমুদ্র সৈকতগুলি প্লাস্টিক মুক্ত করবেন তাঁরা। আর সেইমতোই একসঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছিলেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। হ্যাঁ, শুধু ভাবনাই নয়, এই অসাধ্য সাধন করেও দেখিয়েছেন তাঁরা। সমুদ্রসৈকত ধরে প্রায় ২৮ কিমি এলাকাকে কার্যত প্লাস্টিক শূন্য করে ফেলেছেন তাঁরা। সরানো হয়েছে ৭৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। আর এই পাহাড়প্রমাণ কাজের জন্যেই নয়া বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: কোভিড চিকিৎসায় অতিরিক্ত বিল বেসরকারি হাসপাতালের, সরকারি পদক্ষেপে ‘না’ গুজরাটের
দক্ষিণ ভারতের অন্যতম পর্যটনক্ষেত্র বিশাখপত্তনম শহর। অন্ধ্রপ্রদেশের এই মনোরম সৈকতশহরে সারা বছর বহু মানুষ ছুটি কাটাতে আসেন। কিন্তু এত পর্যটকের ভিড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ক্রমশ বেড়ে উঠেছে এই সৈকতগুলিতে। যার ফলে উত্তরোত্তর ক্ষতি হচ্ছিল সমুদ্রেরও। সেই ক্ষতি সামলাতেই নেওয়া হয়েছিল এই অভিনব উদ্যোগ। মার্কিন মুলুকের এক সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই বিপুল কর্মযজ্ঞের আয়োজন করেছিল বিশাখাপত্তনম পুরসভা। যার ফলস্বরূপ ভাইজাগের দুটি জনপ্রিয় সৈকতের মধ্যবর্তী প্রায় ২৮ কিমি জায়গা একেবারেই প্লাস্টিক মুক্ত হয়েছে। এর পর ওই মার্কিন সংস্থার সঙ্গে বিশাখাপত্তনম পৌরসভা একটি মউ চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। তাদের লক্ষ্য ২০২৭ সালের মধ্যে গোটা সৈকতকেই প্লাস্টিক মুক্ত করে ফেলা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এও আশা করছে, যে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই প্রায় ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ভিত্তি হয়ে উঠবে এই সৈকত পরিষ্কার করার প্রকল্পটি। শুধুমাত্র প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করাই নয়, সেই বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের যোগ্যও করা তোলা হবে বলে জানিয়েছে শহরের পুরসভা। তার জন্য তৈরি হবে কারখানাও। যেখানে প্লাস্টিক পুনর্নবীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নবনিযুক্ত কর্মীদের প্রতি মাসে উপযুক্ত বেতন দিয়েই নিয়োগ করা হবে এই কাজে। সরকারের তরফেই বড়সড় তহবিল নিয়ে এবার এই প্রকল্প সফল করতে ঝাঁপিয়েছে শহরটি। গোটা বিশ্ব জুড়েই প্লাস্টিক দূষণ যেভাবে বেড়ে চলেছে, সেই পরিস্থিতিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এমন উদ্যোগকে অকুণ্ঠ সাধুবাদ জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল।