দুজনের বয়সের ব্যবধান প্রায় ৩৭ বছর। সম্পর্কের দিক থেকেও তাঁরা ঠাকুমা আর নাতি। কিন্তু তাতে কী! বয়সের অঙ্ক উড়িয়ে সেই ঠাকুমার বয়সি মহিলাকেই মন দিলেন উনিশের যুবক। বা বলা যায় উলটোটাও। সম্পর্কে নাতি হলেও উনিশের যুবককেই জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নিলেন ৫৬-র মহিলা। আসুন শুনে নিই এই অন্য প্রেমের গল্প।
প্রথম আলাপের সময় ছেলেটির বয়স ছিল মাত্র দশ। তারপর বেশ কয়েক বছরের প্রেম। অবশেষে বছর উনিশের যুবককেই জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৫৬ বছর বয়সি এক মহিলা। সবথেকে অবাক করা বিষয়, যুবকটি আবার সম্পর্কে সেই মহিলারই নাতি।
আর শুনুন: যৌথ সম্পত্তিতে টেক্কা রাজা চার্লসকেও! ঠিক কত সম্পত্তির মালিক ঋষি সুনাক?
ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডের এক গ্রামে। সেই গ্রামেই থাকতেন জানলা নামুয়াংরাক নামে এক বৃদ্ধা। বছর কুড়ি আগে তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ফলত নিজের তিন সন্তানকে নিয়েই থাকতেন এই বৃদ্ধা। এতদিনেও আর দ্বিতীয় জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার কথা ভাবেননি। তাঁর সন্তানদের বয়সও ৩০ পেরিয়েছে, তাঁরাও যে যার কাজে ব্যস্ত। তাই বৃদ্ধা দিন কাটানোর সঙ্গী হিসেবে পেতেন না কাউকেই। একদিন বাড়ির কাজে সাহায্য করার জন্য তিনি তাঁরই প্রতিবেশী এক বালককে ডেকে পাঠান। পারস্পরিক নির্ভরতার সেই শুরু। দশ বছর বয়সি সেই বালকই যে পরবর্তীকালে তাঁর এতটা আপন হয়ে উঠবে সে-কথা বোধহয় গোড়াতে ভাবতেও পারেননি ওই বৃদ্ধা। খুবই সাধারণ কিছু কাজের পর বালকটিকে সেদিন বাড়ি চলে যেতেই বলেছিলেন তিনি। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁদের দুজনের মধ্যেই গড়ে ওঠে অদ্ভুত সখ্য। ছেলেটিও বৃদ্ধার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। বেশ কয়েক বছর এভাবেই কাটানোর পর তাঁরা দুজনেই বুঝতে পারেন, যে তাঁরা প্রেমে পড়েছেন। তারপর সমাজ বা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা না করেই তাঁরা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে দুজনেরই মনে হয় তাঁরা একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছেন। তাই ৩৭ বছরের বয়সের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
আরও শুনুন: ধর্ম বাধা নয়, পাকিস্তানের মানুষ সযত্নে আগলে রেখেছেন শংকরাচার্যের স্মৃতি
সমাজিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইতিমধ্যে এনগেইজমেন্টও সেরে ফেলেছেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে দুজনের পরিবারের কাছে সেই কথা গোপন রাখলেও, বর্তমানে সবকিছুই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে তাঁদের এহেন কাজকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি কেউই। যদিও তা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ যুগলের। যুবকের মনে হয়েছে, তাঁকে সত্যি ভালবাসেন এমন একজন মানুষকে তিনি অবশেষে খুঁজে পেয়েছেন। যতই বয়সের ব্যবধান থাকুক, বিষয়টিকে ধর্তব্যের মধ্যে আনছেন না তিনি। আর বৃদ্ধা বলছেন, এই সম্পর্ক তাঁকে নতুন করে যৌবন উপহার দিয়েছে। অর্থাৎ এ যেন উনিশের যুবক আর ছাপ্পান্নর ‘যুবতী’র প্রেমের গল্প। বেশ অন্যরকম। তবে, অন্যরকম প্রেমের গল্প কি শুধু সিনেমাতেই থাকে! বাস্তবেও যে তা হয়, সব বাধা পেরিয়ে মন দেওয়া-নেওয়া সেরে সে-কথাই বুঝিয়ে দিয়েছে এই অসম-বয়সি যুগল।