রামায়ণে রাজা দশরথের ছিল শব্দ শুনে লক্ষ্যভেদ করার ক্ষমতা। আর এই একুশ শতকে দাঁড়িয়ে যেন তেমনই প্রতিভার পরিচয় দিল এই কিশোরী। চোখে দেখতে না পেয়েও, স্রেফ শব্দ শুনেই লক্ষ্যভেদ করল সে। যা দেখে উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছেন নেটিজেনেরা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
চোখে দেখতে পায় না সে। ভরসা কেবল শ্রবণশক্তির উপরেই। কিন্তু মনের জোর কমেনি এতটুকুও। আর সেই অদম্য ইচ্ছের কাছেই শেষমেশ হার মানতে বাধ্য হল শারীরিক প্রতিকূলতা। অবশেষে লক্ষ্যে পৌঁছল ১৭ বছরের দৃষ্টিহীন কিশোরী জুল হুগল্যান্ড। ইংরেজি ভাষায় গোল বললেও ভুল হয় না। কারণ গোল-ই করেছে জুল, তবে বাস্কেটবলের কোর্টে। ব্যাপারটা তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: যুদ্ধে তছনছ দেশ, ইউক্রেনের খুদেদের মুখে হাসি ফোটাল স্পাইডারম্যান
সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও দেখে আবেগে ভেসে গিয়েছেন নেটিজেনেরা। মুগ্ধতার মাত্রা বোঝাতে কেউ কেউ বলেছেন, এই দৃশ্য বারবার দেখলেও পুরনো হবে না। কেন এমন বলছেন তাঁরা? সে উত্তরও দিয়েছেন অন্য কেউ। বুঝিয়ে দিয়েছেন ভালবাসা আর সহমর্মিতার আবেদন যে ফুরোবার নয়। আর যে ভিডিওটি দেখে এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তাঁরা, তাতেই দেখা গিয়েছে ওই কিশোরীকে।
দেখা গিয়েছে, বাস্কেটবলের কোর্টে দাঁড়িয়ে রয়েছে জুল। হাতে একটি বলও রয়েছে। কিন্তু বাস্কেট পর্যন্ত বল পৌঁছে দেবে কী করে সে? বাস্কেটের অবস্থানটাই যে তার জানা নেই। কিন্তু সেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে যেমন দমিয়ে রাখতে পারেনি, তেমনই সে পাশে পেয়েছে তার শিক্ষক ও বন্ধুদের। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই কিশোরীর আশেপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে তারই বয়সি অন্যান্য খেলোয়াড়েরাও। আর একজন মহিলা হাতে একটি লম্বা লাঠি নিয়ে আস্তে আস্তে আঘাত করে চলেছেন বাস্কেটটির উপরে। আশ্চর্যের কথা হল, উপস্থিত দর্শকদের মুখেও কোনও কথা নেই। প্রত্যেকেই চুপ করে বসে রয়েছেন, যাতে বাস্কেটে করা আঘাতের শব্দ ওই কিশোরী স্পষ্টভাবে শুনতে পায়। আর সত্যিই কয়েক মুহূর্ত পরেই, কেবল ওই শব্দ শুনেই বাস্কেট লক্ষ্য করে বল ছুঁড়েছে জুল। উপস্থিত সকলের প্রত্যাশা পূরণ করে জালে জড়িয়েছে বল। আর তারপরেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন দর্শকেরা।
আরও শুনুন: সেনাবাহিনীতে চাকরি পেল পেঙ্গুইন, মিলল ‘স্যার’ উপাধিও
এমন অবাক করে দেওয়া ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার জিল্যান্ড হাই স্কুলে। সূত্রের খবর, এই মরশুমের প্রতি খেলাতেই একটি করে গোল করতে সফল হয়েছে জুল। উপস্থিত দর্শকদের মতোই, ওই কিশোরীর সাফল্যের জন্য প্রার্থনা জানিয়েছেন নেটিজেনেরা। পাশাপাশি, সেখানে থাকা অন্যান্য মানুষদের এমন সহমর্মিতার প্রকাশকেও কুর্নিশ জানিয়েছে নেটদুনিয়া।