১০০ পেরিয়েও দিব্যি বেঁচে আছেন বৃদ্ধ। কিন্তু খাতায় কলমে তাঁকে ঘোষণা করা হয়েছে মৃত হিসেবে। ফলত বন্ধ হয়ে গেছে সরকারি পেনশন। এই পরিস্থিতিতে নিজেই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে উদ্যত হয়েছেন তিনি। কী করেছেন ওই বৃদ্ধ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জলজ্যান্ত মানুষটি, অথচ সরকারের কাছে তাঁর পরিচয় তিনি মৃত। এ যেন রবীন্দ্রনাথের সেই ‘জীবিত ও মৃত’ গল্পের মতো কাণ্ড। যেখানে এক জীবিত মহিলাকেই মৃত বলে বিশ্বাস করেছিল তার পরিবারের লোকজন। শেষ পর্যন্ত মহিলাকে মরে গিয়েই প্রমাণ করতে হয়েছিল যে তিনি আগে মরেননি। এই বৃদ্ধও নিজেকে জীবিত বলে প্রমাণ করার পথেই হেঁটেছেন, তবে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে যাননি তিনি। উলটে প্রাণবন্ত এক পন্থা অবলম্বন করেছেন ওই বৃদ্ধ। ঘোড়ার গাড়িতে চেপে, রীতিমতো শোভাযাত্রা করে নিজের বেঁচে থাকার প্রমাণ দাখিল করেছেন তিনি।
আরও শুনুন: নবরাত্রিতে গরবা নাচতে হলে লাগবে পরিচয়পত্র, ‘লাভ জিহাদ’ রুখতে ফরমান মন্ত্রীর
হরিয়ানার বাসিন্দা ধুলি চন্দ নামের ওই ব্যক্তির বয়স বর্তমানে ১০২। এই বয়সে পৌঁছেও সুস্থ ভাবেই বেঁচে রয়েছেন তিনি। কিন্তু সরকারি খাতায় তিনি মৃত। তাই বন্ধ হয়ে গেছে বার্ধক্য ভাতা। চলতি বছরের মার্চ মাসে হঠাৎ পেনশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েন তিনি। সরকারি কার্যালয়ে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তিনি নাকি মৃত! তারপর থেকেই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার জন্য নানান প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন বৃদ্ধ নিজেই। প্রথমে নিজের যাবতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে তিনি দ্বারস্থ হন সংবাদমাধ্যমের। মিডিয়ার মাধ্যমেই সবাইকে বোঝাতে চান যে তিনি মারা যাননি আদৌ। এমনকি হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও তিনি তাঁর অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠান। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও সেই চিঠির উত্তর পাননি তিনি। কোনোভাবেই কোনও লাভ হয়নি যখন, সেই সময়ে বাধ্য হয়েই এক অভিনব প্রতিবাদের কথা ভাবেন বৃদ্ধ। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে ফেলেন তিনি। একটি ঘোড়ার গাড়ি চেপে সারা শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ান বৃদ্ধ। সঙ্গে ছিল তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যরাও। প্রায় প্রত্যেকের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা রয়েছে ‘আমি জীবিত’। ওই বৃদ্ধ যে এখনও জীবিত, পোস্টারের মধ্যে দিয়ে সে কথাই তুলে ধরেন সকলে।
আরও শুনুন: কন্যাভ্রূণ হত্যার নিরিখে মুসলিমদের তুলনায় এগিয়ে হিন্দুরা, চাঞ্চল্যকর তথ্য মার্কিন সমীক্ষায়
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধী পক্ষের নেতারাও। সংবাদমাধ্যমের সামনেই বৃদ্ধের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন এক আপ নেতা। এই ঘটনাকে সরকারের গাফিলতি বলে চিহ্নিত করে তাঁর দাবি, নাগরিকদের বার্ধক্য ভাতা থেকে অনৈতিকভাবে বঞ্চিত করছে সরকার। এই শোভাযাত্রার পরে ফের বার্ধক্য ভাতার সুবিধা মিলবে কি না, আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে বৃদ্ধ।