ফেলে রাখা কাজ। তা না মেটালে চলার পথে এগোতে হাজার সমস্যা। এদিকে চেষ্টা করেও সময় হয় না কাজ সারার। তার জন্যই রয়েছে বিশেষ এক দিন। ছুটি মেলে ফেলে রাখা কাজ মেটানোর জন্য! আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাংলায় যাকে বলে চরৈবেতী, ইংরেজিতে তার জন্য একটা গোটা দিন রাখা হয়েছে জানতেন? দিনটার ইংরেজি নাম, ডু সামথিং ডে। এবার আপনি শুনে ভাববেন, আহামরি কী আর এমন আছে এতে! যত্তসব বিলেতিপনা। রোজ কিছু না কিছু তো এমনিই করে থাকি আমরা, তার জন্য আমার ঘটা করে দিন বরাদ্দ করার কী আছে? তাহলে চলুন একটা গল্প দিয়ে শুরুটা করি, যে গল্পের নামই ‘দ্য ডু সামথিং ডে’। গল্প একটা ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে। বাবা-মায়ের ব্যস্ত জীবনযাপনের মাঝে যে নিজেকে একেবারে অনাবশ্যক, অনাহুত ভাবতে শুরু করে। আর তাই সে ঠিক করে, যে সে পালিয়ে যাবে এখান থেকে। পালানোর আগে যখন সে একে একে সবাইকে বিদায় জানাতে গেল, সবাই তখন স্বীকার করল যে সে কতটা দরকারি তাদের সবার জীবনে।
আরও শুনুন: বছরের বাড়তি দিনে যা বলাই বাহুল্য
এইরকমটা হয় আমাদের জীবনেও। আপনি, বহুদিন ধরে কোনও কাজ করবেন বলে ফেলে রেখেছেন। কোনও একটা অজুহাতে সেটা পিছিয়ে চলেছেন দিনের পর দিন। হয়তো বছরের পর বছরও। কিন্তু তাই বলে, কাজটা করার দরকার নেই, এমন যে নয়, আপনিও জানেন মনে মনে। কিন্তু ওই, আমাদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও জীবিকার প্রয়োজনে এতটাই ডুবে থাকি যে সেগুলোকে সময় দেওয়ার কথা ভাবতেই ভুলে যাই একটা সময়। ব্রেকফাস্ট না করার অভ্যাস বদলানো, শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করা, পুরোনো কোনও হবি নিয়ে আবার কাজ শুরু করা থেকে নানা ব্যক্তিগত কাজও থাকতে পারে সেই তালিকায়। আপনার সেই থেমে থাকা অবস্থায়, একটা কিক-স্টার্ট ভীষণই জরুরী। সঠিক সময়ে, নিজেকে সঠিক প্রশ্নটা করা খুব জরুরী। দিশাহীন ঘোরাঘুরি করে বেপথু হওয়ার আগে, মাঝপথে, জীবনের লক্ষ, উদ্দেশ্য একবার ঝালিয়ে নেওয়া জরুরী। আর তার জন্য চাই একটু সময়। হয়তো একটা দিন। একটু ফাঁকা অবসর। আ ডু সামথিং ডে। কি করবেন তো ঠিক হল। কিভাবে করবেন? আপনার লক্ষে পৌঁছনোর রাস্তাকে ছোট ছোট পদক্ষেপে ভাগ করুন, একটা গোটা উপন্যাস পড়বেন ঠিক করলে, দিনে ১০-১৫ পাতার লক্ষমাত্রা ঠিক করতে পারেন। সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করলে, দিনে ১০টার বদলে ৪-৬টা সিগারেট খাবেন এই সপ্তাহ থেকে। এরকমভাবে, সময়ের হিসেবে কতক্ষণে কতদূর পৌঁছাতে চাইছেন ঠিক করে ফেলুন। সেটাই কিন্তু আপনার লক্ষ্যে পৌছানোর পথে প্রথম ধাপ।
আরও শুনুন: সোশাল কি আর আসল কথা বলে!
আবার এই গল্পটা কিন্তু আমাদের সম্পর্কগুলোর কথাও মনে করায়। আমাদের মনও কখনও কখনও ওই বাচ্চাটির মতোই অবুঝ হয়ে যায়। চারপাশের মানুষগুলোর প্রতি অভিমানে দূরে সরে যেতে চায়। আর সেখানেই আসে একটু ছুটি একটু ফুরসতের চাহিদা যেখানে একটু জিরিয়ে প্রশ্ন করা সম্পর্কগুলোকে, ভালোবাসো?