ঘুম নেই। কবিতার বইয়ের শিরোনাম হিসেবে চেনা বটে, কিন্তু নিজের জীবনে এই অবস্থাকে চিনতে আর কে চান! তবে না চাইলেও, ঘুম না আসা বর্তমানে এ দেশের একটা বড় অংশের মানুষের সমস্যা। কী কারণ রয়েছে এর নেপথ্যে? শুনে নিন।
নিঃশব্দেই দেশজুড়ে যেন ঘটে যাচ্ছে আরও একটা মহামারি। কিন্তু তা চোখে পড়ার মতো ভয় দেখাচ্ছে না বলেই তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না আমরা। যদিও বিশেষজ্ঞরা আদৌ সে পথে হাঁটছেন না। তাঁরা বারে বারেই সতর্ক করছেন যে, এই পরিস্থিতি মোটেও খুব একটা সুবিধের নয়। আর সে রোগ অনিদ্রার। হ্যাঁ, বর্তমানে ঘুম না হওয়ার রোগে আক্রান্ত দেশের একটা বিরাট অংশের মানুষ। সত্যি বলতে, কেবল দেশে নয়, বিশ্বজুড়েই এই রোগের মোকাবিলা করতে হচ্ছে প্রচুর মানুষকে। আর দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যাটা বাড়ছে বই কমছে না।
আরও শুনুন:
৬০ শতাংশ খুদে ভুগছে একটাই অসুখে! সাবধান হতে হবে কোন বিষয়ে?
দিল্লি এইমস-এর ২০২৩ সালের এক সমীক্ষা বলছে, দেশের কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে প্রায় সাড়ে দশ কোটি মানুষ স্লিপ ডিসঅর্ডারের শিকার। যদিও ঘুম কম হওয়া, বা ঘুম না হওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অনেক মানুষই সচেতন নন। অথচ এই অসুখে মানুষের যৌক্তিক ভাবে ভাবার ক্ষমতা থেকে মানসিক স্থিরতা সবই হারাতে পারে। সঙ্গে শারীরিক সমস্যা তো রয়েছেই।
কিন্তু ঠিক কী কারণে ভারতীয়দের মধ্যে এমন বিপুল হারে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে? তার জবাবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শারীরিক বা মানসিক যে কোনও সমস্যার জেরেই এই নয়া সমস্যা হাজির হতে পারে কোনও মানুষের জীবনে। আর এইসব সমস্যার অনেকটাই জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যেমন ধরা যাক, শিফটিং ডিউটিতে অভ্যস্ত মানুষদের ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন থাকে না। আর সেই অনিয়মিত স্লিপ সাইকেল পরে অনিদ্রার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া ঘুমের আগে অতিরিক্ত ক্যাফিন অর্থাৎ চা-কফি জাতীয় পানীয় খাওয়া বা ধূমপান স্নায়ুকে উলটে সজাগ করে দেয়। রাতে ভারী খাবার খেলেও শারীরিক অস্বস্তির কারণে ঘুম আসতে সমস্যা হয়। ঘুমের আগে বেশি স্ক্রিনটাইমও সুবিধাজনক নয়। এই সময়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে চলা বা উত্তেজক কোনও কাজকর্মও ঘুম কেড়ে নেয়। এই সমস্ত বিষয়ই ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং অনিদ্রার দিকে ঠেলে দিতে থাকে। পাশাপাশি কাজের জগতের বাড়তি চাপ আর তার জেরে উদ্বেগ অশান্তি অস্বস্তি- এ সবকিছুই ভালো ঘুম হতে বাধা দেয়।
আরও শুনুন:
ইদানীং বেজায় বোর হচ্ছেন! ক্ষতি নয়, বরং লাভই হচ্ছে
আসলে অনিদ্রার অসুখকে চিনতেই অনেকটা দেরি হয়ে যায় আমাদের। এমনও কিন্তু হতে পারে যে, আপনি মনে করছেন অনেকটাই ঘুমিয়েছেন, অথচ সারাদিন ক্লান্ত লাগছে। কিংবা ঘুম এলেও, বারবার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেরি না করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি। কারণ, প্রেমের কারণে ঘুম না আসা ছাড়া, আর কোনও অনিদ্রাই আদতে সুখকর নয়।