কায়িক পরিশ্রমে ক্লান্তি আসে। কিন্তু যে কাজে শরীরের কসরত তেমন নেই, তাও কি ক্লান্তিকর! অর্থাৎ অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা করলেও কি সাধারণ মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় মিলল সে-উত্তর। কী বলছেন গবেষকরা? আসুন শুনে নি।
সারাদিন অফিসে বসেই কাজ। তবু বাড়ি ফিরে মনে হয় ভয়ানক পরিশ্রম হয়েছে। কর্পোরেট জগতের বাসিন্দাদের কাছে এমন চিন্তা খুব স্বাভাবিক। গবেষণায় উঠে এসেছে এরই ব্যাখ্যা। সারাদিন বসে বসে কাজ করলেও, যদি অতিরিক্ত চিন্তা করতে হয়, তাহলে স্বাভাবিক ভাবে শরীরে দেখা দেবে ক্লান্তির ছাপ।
আরও পড়ুন: স্ত্রী মানেই চিরকালের ঝামেলা! এমনটাই ভাবে তরুণ প্রজন্ম, পর্যবেক্ষণ কেরলের আদালতের
গবেষকদের মতে, অতিরিক্ত চিন্তা করলে শরীরে দেখা দিতে পারে আরও বিভিন্ন রোগ। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়লে চিন্তাশক্তিও কমে যেতে পারে বলে দাবি করছেন গবেষকরা। সম্প্রতি কয়েকজন চাকুরিজীবী মানুষের উপর একটি সমীক্ষা করেছিলেন গবেষকরা। সমীক্ষার আগে তাঁদের দুটি দলে ভাগ করে নেওয়া হয়। সমীক্ষার ধরনটা ছিল বেশ অদ্ভুত। একটি দলকে দেওয়া হয়েছিল একেবারেই সহজ কিছু কাজ। অন্যদিকে আরেকটি দলকে সেই কাজগুলিই বুদ্ধীদিপ্ত ভাবে করতে বলা হয়েছিল। অর্থাৎ কাজের ধরনটা খানিক বদলে দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে দ্বিতীয় দলটিকে ওই একই কাজ করার জন্য একটু বেশি ভাবতে হবে, এমনটাই ছিল দস্তির। দিনের শেষে দেখা যায়, দুটি দলই নির্ধারিত কাজগুলি শেষ করেছে। কিন্তু প্রথম দলটি অপেক্ষা দ্বিতীয় দলের সদস্যদের চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। একই কাজ করেও কয়েকজন এত বেশি ক্লান্ত হলেন কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই গবেষকরা ওই দ্বিতীয় দলের সদস্যদের ব্রেনের বিশেষ কিছু পরীক্ষা করেন। সেখান থেকেই বোঝা যায়, যেহেতু দ্বিতীয় দলের সদস্যরা ওই কাজ করার জন্য অতিরিক্ত চিন্তা করেছেন, তাই তাঁদের শরীরে ক্লান্তির ছাপ বেশি। শুধুমাত্র তাই নয়, ওই দ্বিতীয় দলের সদস্যদের চোখের মধ্যেও দেখা দিয়েছে অস্বাভাবিকতা।
আরও শুনুন: অভিকর্ষে অ্যালার্জি, দিনের ২৩ ঘণ্টাই বিছানায় কাটান তরুণী
আসলে আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চালনা করে মস্তিষ্ক। বিভিন্ন স্নায়ুর দ্বারা দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে মস্তিষ্ক। বিভিন্ন উত্তেজনা বা প্রতিবর্ত ক্রিয়ার জন্মও হয় মস্তিষ্ক থেকেই। সেই মস্তিষ্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লেই নাকি স্নায়ুগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। তার থেকেই শরীরে দেখা দেয় ক্লান্তি। অর্থাৎ শুধু কায়িক পরিশ্রমে নয়, চিন্তার শ্রমেও যে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে, এই গবেষণা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।