ঠোঁট ঠোঁট না রাখলে ভালোবাসা যেন ঠিক জমে না। কিন্তু শীতকালে এমনটা করতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়েন অনেকেই। শীতের হাওয়ায় ঠোঁট ফেটে চৌচির। এমনিতেই ঠোঁটের চামড়া উঠে গিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসছে। সেই অবস্থায় চুম্বন যেন বিভীষিকা। কীভাবে মেটাবেন এই সমস্যা? আসুন শুনে নিই।
পুজোর মরশুম প্রায় শেষ। হাওয়ায় ভাসছে শীতের এসে পড়ার আভাস। একইসঙ্গে হাজির, ঠোঁট ফাটার মতো সমস্যাও। এইসময় বাতাসে আদ্রর্তার অভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক শুকিয়ে যায়। তারপর সেই অংশের চামড়া উঠে গেলেই কেলেঙ্কারি কাণ্ড। রক্ত বেরিয়ে একেবারে যা তা অবস্থা।
আরও শুনুন: শীতকালে এত অসুখবিসুখ কেন? নাকেই লুকিয়ে যত রহস্য
সবথেকে বেশি যে অংশে এর প্রভাব পড়ে, তা হল ঠোঁট। এই অংশের চামড়া এমনিতেই নরম। তারওপর খাওয়া হোক বা কথা বলা, ঠোঁট বিশ্রাম নেই বললেই চলে। তাই একবার ঠোঁট ফাটলে তা সারতে বেশ সময় নেয়। একইসঙ্গে অনেকেরই রয়েছে ‘এক্সকোরিয়েশন ডিসঅর্ডার’। অর্থাৎ শরীরের কোনও অংশে চামড়া এতটুকু উঠলেই তাকে পুরোপুরি তুলে ফেলার জন্য হাত নিশপিশ করা। ব্যথা, জ্বালা, যন্ত্রণা যতই হোক, এই স্বভাব কাটানো মুশকিল। সবমিলিয়ে শীতকালে ঠোঁট ফাটা অনেকের কাছেই ত্রাস। কিন্তু কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপায়েই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
ঠিক কী করতে হবে?
আরও শুনুন: শীতের সঙ্গেই আসে সর্দিকাশির সমস্যা, সাবধান হবেন কীভাবে?
প্রথমত, চেষ্টা করুন চামড়া টেনে তোলার বদভ্যাসটি ত্যাগ করার। ঠোঁট শুকিয়ে গিয়ে চামড়া উঠলেও সেখানে হাত দেবেন না। বরং ঠোঁটে লাগিয়ে নিন লিপ বাম। এর ফলে ঠোঁটে জলীয় ভাব বজায় থাকবে। একইসঙ্গে ফাটা অংশে খুব বেশি জ্বালার অনুভূতি হবে না। আসলে ঠোঁটে তৈল গ্রন্থি থাকে না। তাই মুখের এই অংশটি খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। লিপবাম লাগিয়ে সাময়িক প্রতিকার মিললেও স্থাইয়ী সমাধান হয় না। এক্ষেত্রে কাজ হতে পারে মধু কিংবা ঘি-তে। প্রত্যেক দিন রাতে ঘুমোনোর আগে নিয়ম করে ঠোঁটে মধু কিংবা ঘি লাগাতে পারেন। তারপর অন্তত ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁটের উপর বিশেষ প্রভাব পড়ে। ফাটা অংশ যেমন দ্রুত সেরে যায়, তেমনই নতুন করে ঠোঁট ফাটার সম্ভাবনাও কমে। এতো গেল বাইরে থেকে নেওয়া যত্ন। ঠোঁট ফাটা চিরতরে সারিয়ে ফেলতে রোজকার খদাভ্যাসেও কিছু বদল আনতে পারেন। এক্ষেত্রে ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খুব কাজে দেয়। তাই খাবারের তালিকায় যোগ করুন, পাতিলেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, ব্রকোলির মতো ফল বা সবুজ সবজি। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমানে জল খান। এছাড়া কাজ হতে পারে দুধের সরেও। দুধ জাল দেওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ রেখে দিলে তার ওপর পুরু সরের আস্তরণ জমা হয়। ঠোঁটের ফাটা অংশে ওই সর লাগিয়ে রাখলেও বিশেষ উপকার মেলে। তবে এক্ষেত্রে ধুয়ে ফেলার দরকার নেই। ঘুমানোর আগে ঠোঁটের উপর পুরু করে সর লাগিয়ে নিন। সকালে উঠে মুখ ধোওয়ার সময়ই বুঝতে পারবেন ঠিক কতটা কাজ হয়েছে। তবে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগাম সতর্কতা নেওয়া যেতেই পারে। এক্ষেত্রে ঠোঁট এবং মুখে ময়শ্চারাইজার জাতীয় ক্রিম লাগাতে থাকুন নিয়মিত। তাহলে ঠোঁট ফাটা প্রবণতা অনেকটাই কমানো যেতে পারে।