পৃথিবীর বহু দেশেই রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া একটা বড় সমস্যা। ভারতবর্ষের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো, যেখানে জনসংখ্যার হার বেশ উপরের দিকে, সেখানে তো বটেই। আর নারী ও শিশুরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই রোগের শিকার। জানেন কি, এই রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রুখতে প্রধান উপাদানই হল আয়রন বা লোহা। অধিকাংশ সময়েই মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পুরোপুরি পূরণ হয় না। কিন্তু সামান্য ঘরোয়া কিছু খাবারদাবারেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের উৎস। কী খেলে ঠিক থাকবে আয়রনের মাত্রা, আর কী করেই বা বুঝবেন আয়রনের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে আপনার শরীরে?
অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা আমাদের দেশে একটা বড় সমস্যা। ‘গ্লোবাল নিউট্রিশন রিপোর্ট’ অনুযায়ী, ১৪০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান সবার নীচে। অর্থাৎ এখানে অ্যানিমিয়ার ভোগা রোগীর সংখ্যা বেশ বেশি। চিকিৎসকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, রক্তাল্পতা কার্যত কোনও রোগ নয়। তবে রোগের ইঙ্গিত তো বটেই। রক্তাল্পতার কারণে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের রোগ। আর তা ঠেকানো যেতে পারে ঘরে বসেই। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, বুঝবেন কী করে? রয়েছে তার বেশ কিছু লক্ষণও।
দুর্বলতা, চামড়া ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, সামান্য কাজে হাঁপিয়ে যাওয়া, বুক ধড়ফড় বা ব্যথা, কথায় কথায় হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসা, এমনকী নখ ফেটে যাওয়া এবং চুল পড়াও হতে পারে আয়রন ঘাটতির লক্ষণ। অনেক সময় আয়রনের অভাবে মুখের দুপাশ ফাটতে শুরু করে, জিভ শুকিয়ে যাওয়া এসবও হতে পারে আয়রন ঘাটতির কারণে।
আরও শুনুন: সমস্যা বাড়াচ্ছে থাইরয়েড? কী লক্ষণ দেখে চিনবেন
কতটা আয়রন প্রয়োজন একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের? হদিশ দিয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৪ থেকে ৮ বছরের শিশুর প্রতিদিন অন্তত ১০ মিলিগ্রাম করে আয়রন প্রয়োজন হয় শরীরে। ৯ থেকে ১৩ বছরের কিশোর-কিশোরীর প্রয়োজন প্রতিদিন ৮ মিলিগ্রাম করে। মহিলাদের বিশেষ ভাবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রয়োজন ১৮ মিলিগ্রাম করে আয়রন। যেহেতু এই গোটা পর্ব জুড়েই মহিলাদের শরীরে ঋতুচক্র চলতে থাকে। তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে আয়রনের চাহিদা অনেকটাই বেশি। ওই বয়সের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের যেখানে দৈনিক ৮ মিলিগ্রাম আয়রন যথেষ্ট।
আরও শুনুন: ওজন বাড়ার ভয়ে ঘি খাচ্ছেন না! হিতে বিপরীত হচ্ছে না তো?
এ বার আসা যাক খাবারের কথায়। কোন কোন খাবার খেলে পূরণ হবে শরীরের আয়রনের ঘাটতি? বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্ট না নিয়েও সাধারণ খাবারের মাধ্যমেই কিন্তু সেরে ফেলা যায় সেই কাজটা। কী বলছেন বিশেষজ্ঞেরা? বিনস বা ডাল জাতীয় দানাশস্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। সিদ্ধ বিন প্রায় ৭ থেকে ৯ গ্রাম পর্যন্ত আয়রন জোগায় শরীরে। এক কাপ ছোলাতেও রয়েছে ৫ গ্রাম পর্যন্ত আয়রন। খেতে পারেন সিদ্ধ ডালের জলও। খাবারের তালিকায় রাখুন ড্রাই ফ্রুটস। কিসমিস, কাজু, আমন্ড। এসবে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি, যা শরীরকে আয়রন শুষে নিতে সাহায্য করে। বাদামেও রয়েছে প্রচুর আয়রন। তালিকায় থাকুক তা-ও।
বাকি অংশ শুনে নিন।