শীতকাল এমনিতে মন্দ নয়। হরেক রকম সবজি, খাওয়া-দাওয়ার মেলা আয়োজন। বিনোদনের বহরও কম নয়। তবে সমস্যা একটাই। হাঁচি-কাশি-সর্দি যেন লেগেই আছে। নিস্তার নেই। তা বিজ্ঞানীরা বলছেন, দোষ শীতের নয়। আসলে আমাদের নাকেই লুকিয়ে আছে সব রহস্য। ব্যাপারটা কীরকম? আসুন শুনে নিই।
তাপমাত্রার পারদের সঙ্গে অসুখবিসুখের বেশ অন্যরকম সম্পর্ক। প্রথমটি নামলে দ্বিতীয়টি বাড়তে থাকে। ঠান্ডা যত বাড়ে, উপভোগ করা তো দূরে থাকুক, নানা অসুখবিসুখে মানুষ তত জেরবার হতে থাকে। গরমে সাধারণত ঘামে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। সে হল এক সমস্যা। শীতে তার দেখা নেই বটে, কিন্তু শীতের অসুখবিসুখও কম সমস্যার নয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এর জন্য অনেকটাই দায়ী আমাদের নাক।
আরও শুনুন: মাত্র ৬ সেকেন্ডের চুম্বনই সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
তাপমাত্রা যত কমতে থাকে, তত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বা শ্বাসনালীতে সংক্রমণের ঘটনা বাড়তে থাকে। কেননা এই সময়টা রেসপিরেটরি ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত চলে। শীতের অনুকূল পরিবেশ পেয়ে তারা আক্রমণ হানে মানুষের শরীরে। এইখানে একটা বড় ভূমিকা পালন করে আমাদের নাক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাকের মধ্যে নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে। এই ধরনের ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ে শনাক্ত করতে পারলে, নাক তা যথাসম্ভব খতম করার চেষ্টা করে। ফলে এরকম অসুখ-বিসুখ থেকে আমরা রক্ষা পেয়ে যাই। মুশকিল হল শীতের বেলায় নাকের এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। পরীক্ষা করার জন্য, বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে নাকের কোষগুলিকে কম তাপমাত্রায় রাখেন এবং তার পরিবর্তন লক্ষ করতে থাকেন। দেখা যায়, তাপমাত্রা যত কমে, তত এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা জবুথবু হয়ে যায়। যার ফলে ভাইরাসের আক্রমণ বাড়তেই থাকে, এবং এক সময় তা শরীরকে কাবু করে ফেলে। বস্টন নর্থওয়েস্ট্রান ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা মোটামুটি ২০১৮ সাল থেকে এই নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছে ‘দ্য জার্নাল অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি’।
আরও শুনুন: স্ট্রেস থেকে মুক্তি হস্তমৈথুনেই! ব্রিটিশ পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে সমীক্ষা দিচ্ছে ইঙ্গিত
এই পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ গবেষণার পথ খুলে দিল। তাপমাত্রা কমলেও নাকের প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি অটুট রাখা যায়, বিজ্ঞানীরা আগামীতে যদি এমন ব্যবস্থা আনতে পারেন, তবে শীতের অসুখ-বিসুখ থেকে অনেকটাই রেহাই পাবে মানুষ।