নারীর ক্ষেত্রে সৌন্দর্য আর যৌনতা, দুটি বিষয়ের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে স্তন। আর এই স্তনের আকার আকৃতি নিয়ে তাই অনেকেরই মাথাব্যথার শেষ নেই। কিন্তু বয়ঃসন্ধির পরেও নাকি ফের বাড়তে পারে স্তনের আকার। অন্তত এমনটাই জানালেন অভিনেত্রী সালমা হায়েক। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি জানালেন, একাধিকবার স্তনের আকার বেড়েছে তাঁর। কত বয়স পর্যন্ত ঘটতে পারে এমনটা? আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
চেপে ঢেকে রাখা গোপন ইচ্ছের সাথে সাথে, গোপন অঙ্গের সুস্থতা স্বাভাবিকতা নিয়েও আজকাল সোচ্চার হয়েছেন মেয়েরা। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে সকলের সামনে সেইরকমই একটি বিষয়কে তুলে ধরেছেন সালমা হায়েক। তিনি একে নারী, তায় অভিনেত্রী। ফলে নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য, যৌন আবেদনময়ী দেখানোর জন্য একরকম তাগিদ তাঁদের থাকেই। আর সেই আবেদনের ক্ষেত্রে স্তনের যে একটা বড় ভূমিকা আছে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে একসময় জানিয়েছিলেন, স্তন ছোটো বলে তাঁকে ছবি থেকে বাদ দিয়েছিলেন এক পরিচালক। ব্রেস্ট আপলিফটমেন্ট সার্জারি কিংবা স্তন সুগঠিত করার জন্য বিভিন্ন সার্জারির সাহায্য নিয়ে থাকেন একাধিক অভিনেত্রীই। তা সালমা হায়েকও কথা বলেছেন এই বিশেষ অঙ্গটি নিয়েই। তিনি জানিয়েছেন, বয়ঃসন্ধির পরেও একাধিকবার তাঁর স্তনের আকার বেড়েছে। আর তিনি সেই কথা বলার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন আরও একাধিক মহিলা। তাঁরাও জানিয়েছেন যে, সালমা একা নন, এই ঘটনা ঘটেছে তাঁদের সঙ্গেও। আর বয়ঃসন্ধির পরেও স্তনের এভাবে বেড়ে যাওয়া আসলে কোনও শারীরিক সমস্যার লক্ষণ কি না, সেই চিন্তায় পড়েছিলেন তাঁদের অনেকেই।
আরও শুনুন: পুরুষরা জানেন তো! তৃপ্তির খোঁজে ঠিক কতক্ষণ যৌনতা চান মহিলারা?
সালমা হায়েক সম্প্রতি টুইটে লিখেছেন যে, সাধারণত মহিলাদের যখন ওজন বাড়ে তার সাথে তাঁদের স্তনের আকারও বৃদ্ধি পায়। আবার কিছু মহিলার মাতৃত্বের সময় স্তনের আকার বৃদ্ধি পায়, যা পরে আর কমে না। আবার মেনোপজ অর্থাৎ ঋতুবন্ধের সময়েও কিছু মহিলার স্তনের আকার হঠাৎ করেই বাড়তে থাকে। তাঁর জীবনে এই প্রতিটা ক্ষেত্রেই স্তনের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। এবার কথা হচ্ছে, মহিলারা জীবনের এই প্রতিটা ধাপেই দেহে পরিবর্তন লক্ষ করেন ঠিকই। এবং তা চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত সত্য। কিন্তু সালমার টুইটে অন্য মহিলাদের কমেন্টই নজর টেনেছে সকলের। কেউ কেউ লিখেছেন ৩০-এর কোঠায় তাঁদের স্তনের আকার পূর্ণ হয়েছে। আবার কারও ক্ষেত্রে সেটা ১৫। ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেও মহিলাদের স্তনের এই আকার বৃদ্ধি হওয়াকে তাঁরা, দ্বিতীয় পিউবার্টি বা দ্বিতীয় বয়ঃসন্ধি বলছেন। চিকিৎসকরাও কি তাই বলছেন?
আরও শুনুন: দিনে দিনে কমছে যৌন ইচ্ছা, হস্তমৈথুনের সময় এই ভুল করছেন না তো!
এক সমীক্ষা বলছে, বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের দেহের যে বদল হয়, তা ঘটে মোটামুটি ৭ বছর থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে সাড়ে ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যেই মেয়েদের স্তনের আকার পূর্ণতার ৯১ শতাংশ হয়ে যায়। কনসাল্টেন্ট প্লাস্টিক সার্জন পুণ্ডরীক শর্মা বলছেন, চিকিৎসাক্ষেত্রে দ্বিতীয় বয়ঃসন্ধি-র কোনও প্রমাণ মেলে না। কিন্তু অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই বয়ঃসন্ধির সময় দেহের বা বক্ষের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। পরে তা, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মাঝামাঝি যে কোনও সময়ে হয়ে থাকে। দেহে প্রজনন হরমোন ইস্ট্রোজেন-এর মাত্রা বৃদ্ধিই এর কারণ। যে কারণে গর্ভনিরোধ এবং মাতৃত্বকালীন সময়ে বক্ষের আকার স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কারণ ওই সময় নারীদেহে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও ওই সার্জন জানাচ্ছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চামড়ার নমনীয়তা কমে গেলে তা মহিলাদের স্তনের আকার বাড়িয়ে দিতে পারে।
আদতে বয়ঃসন্ধির পরেও স্তনের আকার বাড়ে শরীরে হরমোনের মাত্রার তারতম্যেই কারণেই। তবে নারীদেহের গোপন অঙ্গগুলির সুস্থতায় বিশেষ নজর দেওয়াও অত্যন্ত জরুরি। সত্যিই কি দ্বিতীয় বয়ঃসন্ধির কারণে স্তনের আকার বাড়ছে, নাকি স্তনে টিউমার বা লাম্পের জন্ম হয়েছে এবং তা ব্রেস্ট ক্যানসারের দিকে এগোচ্ছে, সেদিকটি খেয়ার করার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।