ব্যাপারটা মোটেও হাসিমজার নয়। নারীশরীর নিয়ে পুরুষের যেমন নানা ভুল ধারণা থাকে, একই জিনিস প্রযোজ্য পুরুষদের ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, পুরুষের শরীর নিয়েও নানা ভুল ধারণা ছড়িয়ে রয়েছে। যেমন, পুরুষাঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য কত হওয়া উচিত, এই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। যৌনতা নিয়ে যাঁরা নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছেন, তাঁরা এবার এর উত্তর দিয়েছেন খুব স্পষ্ট করেই।
যৌনতা নিয়ে বিভিন্ন মিথ ছড়িয়ে রয়েছে চারিদিকে। তা যেমন নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, পুরুষদের ক্ষেত্রেও অবস্থাটা একই রকম। মোদ্দা কথা, এমন অনেক ধারণা নিয়ে আমরা বড় হই, যা হয়তো পুরোপুরি ঠিক নয়। আর এই ভুল ধারণা থেকে অনেক সময় জন্ম নেয় হীনমন্যতা ও ডিপ্রেশন। তাই যৌনতা নিয়ে আগ্রহ থাকলে, তার জন্য সঠিক ধারণা থাকা উচিত। এমনটাই মনে করেন গবেষকরা, যাঁরা যৌনতা নিয়ে চর্চা করেন।
আরও শুনুন: হাতের নীচেই আছে স্তনগ্রন্থি, হচ্ছে দুগ্ধক্ষরণ… মহিলার দাবিতে অবাক চিকিৎসকরা
যৌনতা নিয়ে গবেষণা এখন সারা বিশ্বেই সমাদৃত। এবং এটি একটা বড় ব্যবসার ক্ষেত্রও বটে। কেননা পর্নদুনিয়া বা যৌনসামগ্রীর বাজার বিভিন্ন সময় বিপণনের কারণে নানা ভুল ধারনার প্রচার করে। সেই মিথ ভাঙতে এই গবেষকরা চেষ্টা করছেন। তাঁরা এই ধারণাগুলির সঠিক কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তথ্য প্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা করেন। যেমন, অনেকেই বলে থাকেন ফোরপ্লে-র প্রয়োজন একমাত্র মহিলাদের। পুরুষের তা দরকার নেই। কিন্তু এই ধারণার উৎস কোথায়? উত্তর খুঁজে বের করছেন গবেষকরা। যা জানাচ্ছে, বিষয়টি এক তরফা মেয়েদের নয়। অনেকটা সময় জুড়ে ফোরপ্লে পুরুষ ও নারী দুজনকেই বেশি তৃপ্তি দেয়।
আরও শুনুন: ৪২ লিটার স্তনদুগ্ধ দান হাসপাতালে, ছকভাঙা কাজে কুর্নিশ আদায় করলেন ভারতীয় মহিলা
এরকমই আর একটি ধারণা চালু রয়েছে পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য নিয়ে। অনেকেই বলে থাকেন, এই দৈর্ঘ্য হওয়া উচিত ৫ ইঞ্চি। এই তথ্য কোনও ভাবে চাউর হয়ে গিয়েছে। এমনও দেখা গিয়েছে, কেউ কেউ চিকিৎসকের কাছে পর্যন্ত গিয়েছেন এর ভিত্তিতে। আবার অনেকেই ভয়ে বা লজ্জায় যেতে পারেননি, উলটে হীনমন্যতায় ভুগেছেন। সম্প্রতি যৌন গবেষক ট্রেসি কক্স এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তাঁর গবেষণা মোতাবেক, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। তাঁর মতে, এরকম কোনও সমীক্ষা নেই যা প্রমাণ করে যে পুরুষাঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য এরকম হতে পারে, বা, এরকমটা হওয়ার কথা ছিল। এই তথ্যের কোনও প্রমাণও সেভাবে নেই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তি করে যদি কেউ এই ধারণার সপক্ষে যুক্তি দেন, তবে তার সত্যতা নিয়ে অবশ্যই সন্দেহ থেকেই যায়। তাই এই ধরনের ধারণার যে কোনও দৃঢ় ভিত্তি নেই, সেটাই এখন স্পষ্টভাবে বলছেন গবেষকরা।
অর্থাৎ, কুসংস্কার যেমন আমাদের বিভ্রান্ত করে, ঠিক তেমনই তথ্য-যুক্তিহীন ভুল ধারণাও আমাদের বিভ্রান্ত করে। আধুনিক বিশ্বে সেই মিথ ভাঙারই চেষ্টা করছেন যৌন গবেষকরা।