নিজেকে আরও সুন্দর দেখাতে হবে। তার জন্য সামান্য কষ্ট করতে আপত্তি নেই। কিন্তু সেই কষ্ট যদি অন্য বিপদ ডেকে আনে? সম্প্রতি এমনই এক রোগের ব্যাপারে সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রধান কারণে ভ্রু-এর বিশেষ রূপসজ্জা। ঠিক কী আশঙ্কা তাঁদের? আসুন শুনে নেওইয়া যাক।
কবিতা হোক বা গান, সৌন্দর্যের বর্ণনায় চোখের প্রসঙ্গ আসবেই। অনেকে বলেন, চোখ নাকি কথা বলে! স্রেফ চাহনি দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া যায় কতকিছু। তাই চোখ সুন্দর হলে সৌন্দর্য বাড়তে বাধ্য। এবার চোখের গড়ন আলাদা করে সুন্দর করা সম্ভব না। কিন্তু যেটা সম্ভব তা হ,ল চোখের আশেপাশে থাকা অংশগুলো একেবারে নিখুঁত করে ফেলা।
ঠিকই ধরেছেন, ভ্রু-এর রূপটান নিয়েই বলছি। যাঁরা রূপচর্চা করেন তাঁরা ভ্রু-এর ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকেন। একটু মোটা বা পুরু হলেই পার্লারে ছুটতে হবে পার্লারে। অবাঞ্ছিত লোম তুলে ভ্রু পাতলা করতে হবে। দেখে যেন মনে হয়, হাতে আঁকা। কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁদের ভ্রু তুলনায় পাতলা। সেক্ষেত্রে সহজ উপায় কালো রং দিয়ে কিছুটা এঁকে নেওয়া। দূর থেকে তেমন বোঝা না গেলেই হল। কিন্তু তাতেও বিপদ রয়েছে। ঘাম দিয়ে রং মুছে গেলেই সব জলে গেল। তাই অন্য এক উপায়ের পথে হাঁটছেন কেউ কেউ। খানিকটা ট্যাটু করানোর মতো করেই মোটা করে দেওয়া হচ্ছে ভ্রু। এক বিশেষ যন্ত্র যার মধ্যে রয়েছে পাতলা ব্লেড। তার সঙ্গে রং মিশিয়ে ভ্রুর সরু রেখা ঘন করা হচ্ছে। খানিক পাকাপাকি ভাবেই বলেই যায়। পদ্ধতিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইক্রো ব্লেডিং’। অল্প দিনের মধ্যেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই পদ্ধতি। এমনিতে রূপসজ্জার রকমফের বিগত কয়েকবছরে অনেকটাই বদলেছে। সাজের জিনিসপত্রও অনেক আধুনিক হয়েছে। এমনও কিছু প্রোডাক্ট এসেছে, যা ব্যবহার করলে ত্বকের এতটুকু ক্ষতি হয় না। কিন্তু ভ্রু-এর জন্য করা এই আধুনিক পদ্ধতিতে বিপদের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি স্লোভেনিয়ার দুই তরুণী এমনটা করতে গিয়ে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। দুনজেই আক্রান্ত হয়েছেন ফুসফুসের জটিল অসুখে। রোগের জেরে তাঁদের ফুসফুসের দেওয়াল পুরু হতে শুরু করেছে। যার ফলে শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। একইসঙ্গে ফুসফুসে ছোট ছোট টিউমারের মতো অংশ তৈরি হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, ওই মাইক্রো ব্লেডিং-এর কারণেই এমন বিপত্তি। জানা যাচ্ছে, আক্রান্তের ভ্রু তে প্রাথমিক ভাবে লালচে দাগ জন্ম নেবে। সেই সঙ্গে জ্বালাও হতে পারে। স্লোভেনিয়ার দুই তরুণীও এই সমস্যা নিয়েই চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান। তারপর বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁরা ‘সারকোয়ডোসি’ এ আক্রান্ত। এই রোগের জেরেই শ্বাশকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। এমনটা হলে অস্বাভাবিক ভাবে ওজন কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সারা গায়ে ব্যথাও হতে পারে। সবমিলিয়ে রোগীর জীবন দুর্বিসহ করে দিতে পারে এই ভয়ঙ্কর রোগ। তাই রূপসজ্জার তাগিদে কেউ যেন নিজের এমন কোনও বিপদ ডেকে না আনে, সে ব্যাপারেই সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।