মেয়েদের পোশাকতালিকায় প্রথম পছন্দের জায়গা হয়তো শাড়িই দখল করে আছে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের মহিলাদের একটি বড় অংশের মধ্যে শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে কেবলমাত্র তাঁদের শাড়ি পরার ধরনের জন্যই। কোথায় হচ্ছে গণ্ডগোল?
শাড়ি পরতে ভালোবাসে না, এমন বাঙালি নারী খুঁজে পাওয়া বেজায় কঠিন। দেশের প্রায় সর্বত্রই শাড়ি পরার চল। উৎসব হোক কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠান, মেয়েদের পোশাকতালিকায় প্রথম পছন্দের জায়গা হয়তো শাড়িই দখল করে আছে। শাড়ির সঙ্গে অবশ্যই চাই ম্যাচিং ব্লাউজ এবং জুতসই পেটিকোট। ভাবছেন তো, এসব আর নতুন কথা কী? না, শাড়ি পরার এই রীতি-কথা নতুন নিশ্চয়ই নয়। তবে, যদি বলা হয় যে, পেটিকোট পরার অভ্যাসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে ক্যানসারের বীজ, তাহলে নিশ্চিতই তা চিন্তার কথা বটে। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল চিকিৎসকদের সমীক্ষায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের মহিলাদের একটি বড় অংশের মধ্যে শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে কেবলমাত্র তাঁদের শাড়ি পরার ধরনের জন্যই। কোথায় হচ্ছে গণ্ডগোল? আসলে, পেটিকোটের ভিতরের দড়িটি কোনোভাবে আলগা হয়ে গেলে শাড়ির ভাঁজ খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সহজেই কোমর থেকে ঢিলে হয়ে যেতে পারে কুঁচি। আর সেই ভয়েই কষে শক্ত করে বাঁধন দেন মহিলারা। আর এখানেই লুকিয়ে আছে সেই মারণব্যাধি। দীর্ঘক্ষণ ধরে কোমরের বাঁধনটি শক্ত হয়ে বাঁধা থাকতে থাকতে চামড়ায় ঘষা লাগে। চারপাশে গভীর দাগ হয়ে যায়। আর ঠিক এভাবেই ধীরে ধীরে শরীরে স্কিন ক্যানসারের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
যাঁরা দীর্ঘদিন শাড়ি পরছেন, তাঁদের অবিশ্বাস্য লাগতে পারে, কিন্তু একথা সত্যি। প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এতগুলো বছর ধরে আমাদের ঠাকুমা, দিদিমারা শাড়ি-পেটিকোট সবসুদ্ধ নিয়ে দিব্য কাটিয়ে দিতে পারলেন কী করে? এখানেই অবশ্য থাকে ভাবনার অবকাশ। বর্তমানে প্রকৃতি এবং জলবায়ুর পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। শুধু কি তাই? নজিরবিহীনভাবে কমেছে জিনিসপত্রের গুণমান। আর সে কারণেই রোগের উৎপাতও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।
শহরের আধুনিক মেয়েরা ঘরে-বাইরের অফিস-কাছারির পোশাক হিসেবে শাড়িকে ‘না’ বলেছেন দীর্ঘদিন। শাড়ির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দৌড়ঝাঁপে অসুবিধা যে হয়, তা অস্বীকার করা যায় না। তবে তাঁরাও যে শাড়ি পরেন না, তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি যাঁরা চাকরি করেন না, বা প্রান্তজীবী নারীরা, তাঁরা কিন্তু পরিধান হিসাবে শাড়িই বেছে নেন। দিনমজুরি থেকে গৃহ-সহায়িকা, চাষের কাজ থেকে কলকারখানার শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন যে নারীরা, দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টা শাড়ি পরে থাকার ধকল তাঁদের সহ্য করতেই হয়। সেক্ষেত্রে রোগের সম্ভাবনা আরও বেশি।
সম্ভাবনা সকলের ক্ষেত্রেই সত্যি। অতএব সাবধানের মার নেই। শাড়ি পরতে ভালোবাসলে অবশ্যই পরুন, সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের এই সতর্কবার্তা অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত।