বেজায় ঠান্ডা! সোয়েটার, জ্যাকেট ছাড়া বাইরে পা রাখার উপায় নেই! স্টাইল ভুলে কেউ কেউ আপাদমস্তক চাদরে মুড়ছেন নিজেকে। কিন্তু শরীর গরম রাখতে গিয়ে বড়সর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো? ঠিক কোন বিপদের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সোয়েটার পরলে অ্যালার্জি! এমনটা শুনেছেন কখনও? সম্প্রতি এই আশঙ্কার কথাই শোনালেন বিশেষজ্ঞরা। ঠান্ডায় সোয়েটার ছাড়া বেরোনো অসম্ভব, কিন্তু সেই শীত পোশাকেই যদি বিপদ লুকিয়ে থাকে? আগে ভাগে সাবধান হওয়াই ভালো।
শীতের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে আছে নানান নস্টালজিয়া। কখনও জমাট বেঁধে যাওয়া নারকেল তেল, কখনও আবার কাচের বয়াম ভর্তি আচারের গন্ধ। তবে শুধু কি তাই? তার পাশাপাশি রয়েছে ঠাকুমা-দিদিমাদের আঙুলের স্পর্শে বুনে চলা উলের বাঁধন! যেমন তার বিচিত্র রঙ, তেমনই কারুকাজ। আলাদা আলাদা অনুষ্ঠানে সেসব গায়ে চাপালেই যেন অনুভব করা যায় ছোটবেলার টাটকা গন্ধ। চোখে ভাসে ফেলে আসা মানুষগুলোর স্মৃতি, আর তাঁদের স্নেহমাখা হাতের পরশ। উল বোনার ঝক্কি কম নয়। পাশাপাশি লাগে অঢেল সময়ও। তাই আজকের দিনে সেসবের যে পাট চুকেছে, তা বলাই যায়। তবে, হালফিল ফ্যাশন দুনিয়ায় কিন্তু মোটেও ব্রাত্য নয় সোয়েটার। বরং পাল্লা দিয়ে আধুনিক ডিজাইনের হরেক শীতপোশাক জায়গা করে নিয়েছে আমাদের আলমারিতে। শীত কাটল, বিন্দুমাত্র আপস হলনা শীতের সঙ্গেও। তাই শীত জব্দ করতে সোয়েটারই ভরসা।
বেশ জম্পেশ একখানা সোয়েটার গায়ে চাপালেই শান্তি। তবে সোয়েটারের উলও নাকি হয়ে উঠতে পারে দীর্ঘমেয়াদী রোগের কারণ। এমন দাবি খোদ চিকিৎসকদের। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, উল তৈরির উপাদানে মোটা তন্তু ব্যবহার হলেই তা হতে পারে ত্বকের অ্যালার্জির কারণ। এখানেই শেষ নয়, ত্বকের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওঠা, নাক দিয়ে জল পড়া, চোখের লাল ভাব, চোখ দিয়ে জল পড়া, বারবার হাঁচি, এমনকই সমস্যা গুরুতর হলে হতে পারে শ্বাসের সমস্যাও।
আরও শুনুন: শীতে চাই গরম রুটি! গ্যাসের আগুনে সেঁকা খাবারে লুকিয়ে ক্যানসারের বীজ, কী জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা?
তাহলে উপায় কি? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সমস্যার সূত্রপাত হওয়ামাত্র নিতে হবে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ। চিকিৎসকের পরামর্শমতো দাওয়াই হবে এই রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা। নিজে নিজের ডাক্তারি করে অথবা ওষুধের দোকান থেকে এলোপাথাড়ি অ্যালার্জিনাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস এসব ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। শুধু চিকিৎসায় নয়, রোগ সারবে সচেতনতায়। খেয়াল রাখতে হবে সোয়েটার থেকেও হতে পারে অ্যালার্জি। তাই হঠাৎ নাকবন্ধ বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যালার্জির কারণ যদি সোয়েটার হয় তবে তা আন্দাজ করতে পারবেন চিকিৎসকই, প্রয়োজনে পরীক্ষা করানো যেতে পারে। যদি জানা যায়, সন্দেহ ঠিক দিকে এগোচ্ছে তাহলে বদলাতে হবে শীতপোশাক। যতই পছন্দের হোক, অই সোয়েটারকে বিদায় জানাতে হবে চিরতরে। নাহলে গোটা শীতকাল দোসর হয়ে থাকবে হাঁচ, কাশি কিংবা নাকবন্ধের মতো সমস্যা।